বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ডমিঙ্গোর জন্য বিকল্প ভাবছে বিসিবি

  •    
  • ১৪ নভেম্বর, ২০২১ ০৯:৪০

বিসিবির একটি সূত্র নিউজবাংলাকে জানিয়েছে, ডমিঙ্গোর সঙ্গে চুক্তিভঙ্গ করবে না বিসিবি। কেননা চুক্তিভঙ্গ করলে বিপুল অঙ্কের টাকা তাকে শুধু শুধু দিয়ে দিতে হবে। তাই বিশাল অঙ্কের টাকা যেন গচ্চা না দিতে হয় সে জন্য ডমিঙ্গোকে রেখে দিচ্ছে বোর্ড। তবে তাকে হয়তো খুব বেশিদিন দেখা যাবে না জাতীয় দলের দায়িত্বে।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে জাতীয় দলের বাজে পারফরম্যান্সের জের ধরে বিশ্বকাপের শুরু থেকেই সমালোচনার কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়েছে হেড কোচ রাসেল ডমিঙ্গোকে। দলের ব্যর্থতার জন্য পুরো দায়টাই চাপিয়ে দেয়া হয় তার ওপর। ক্রিকেট ভক্ত থেকে শুরু করে সাবেক ক্রিকেটার- অনেকের মতে ব্যর্থতার দায়টা কম না প্রোটিয়া এই কোচের। সেই থেকে জাতীয় দলে প্রোটিয়া এই কোচের ভবিষ্যৎ নড়বড়ে।

চলতি মাসের পাঁচ তারিখ জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা দেশে ফেরার পর থেকেই ক্রিকেটপাড়ায় উঠে আসতে থাকে একের পর এক গুঞ্জন। তার ভেতর অন্যতম ছিল কোচিং প্যানেলে পরিবর্তন আনা, হেড কোচের সঙ্গে চুক্তি শেষ করে দেয়া, ঘরোয়া ক্রিকেটের জনপ্রিয় কোচ মোহাম্মদ সালাহউদ্দিনকে সহকারী কোচের পদে বসানো, সৌম্য লিটনকে টি-টোয়েন্টি থেকে বাদ দেয়াসহ আরও অনেক কিছুই।

তবে তথ্যগুলোর ছিল না আনুষ্ঠানিক ও নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে পাওয়ার স্বীকৃতি। তাই বিষয়টি গুঞ্জন হিসেবেই রয়ে গিয়েছিল। যাহা রটে, তার কিছু হলেও ঘটে- সেই প্রবাদেরই সত্যতা পাওয়া গেল কিছুদিনের ভেতরেই।

দিনদুয়েক পর যখন সালাহউদ্দিন জানালেন জাতীয় দলের দায়িত্ব তিনি নিতে চাচ্ছেন না, সেই সঙ্গে বিসিবির প্রস্তাব তিনি নাকচ করে দিয়েছেন, তখনই নড়েচড়ে বসে সবাই।

এর মধ্যে ফিল্ডিং কোচ রায়ান কুকের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নের পর জোর আলোচনা শুরু হয় হাই পারফরম্যান্স ইউনিটের কোচ হতে এসে বাংলাদেশ জাতীয় দলের দায়িত্ব পাওয়া কোচ রাসেল ডমিঙ্গোকে নিয়ে।

তার অপসারণ নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়। এমনটাও শোনা যায়, ডমিঙ্গোর সঙ্গে ‘লস’ দিয়ে হলেও চুক্তি বাতিল করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড।

‘লস’ বলা হচ্ছে এই কারণে যে বিশ্বকাপের মাঝপথে আনুষ্ঠানিক চুক্তি নবায়নের সময় একটি শর্ত জুড়ে দিয়েছিলেন প্রোটিয়া কোচ ডমিঙ্গো। সেটি হলো এক বছরের ভেতর বিসিবি চাইলেও তাকে চাকরিচ্যুত করতে পারবে না। আর যদি কোনো কারণে করেই তাহলে তাকে এক বছরের বেতন অর্থাৎ দুই কোটি টাকা দিতে বোর্ড বাধ্য থাকবে।

তবে সবাইকে অবাক করে দিয়ে ব্যর্থ এই কোচের সঙ্গেই ফের চুক্তি নবায়ন করেছিল বোর্ড। নতুন চুক্তি অনুযায়ী ২০২৩ পর্যন্ত টাইগারদের হেড কোচ হিসেবেই থাকছেন তিনি।

২০১৯ সালে জাতীয় দলের দায়িত্ব বুঝে নেয়ার পর কোচ হিসেবে তার অধীনে এখন পর্যন্ত তামিম-মাহমুদুল্লাহরা মাঠে নেমেছেন ৬০টি ম্যাচে। এই ৬০ ম্যাচের ভেতর মাত্র ২৯ ম্যাচে জয় দেখেছে বাংলাদেশ। বাকি ৩১টি ম্যাচেই হারকে সঙ্গী করে মাঠ ছাড়তে হয়েছে লাল-সবুজদের। জয়-পরাজয়ের শতকরার হিসাবে যেখানে ভারী পরাজয়ের পাল্লাটাই।

ডমিঙ্গোর অধীনে ১০ টেস্টের সাতটিতে, ১৫ ওয়ানডের চারটিতে আর ৩৫ টি-টোয়েন্টির ১৮টিতেই হারতে হয়েছে বাংলাদেশকে।

ব্যর্থতার পাশাপাশি অভিযোগেরও কমতি নেই ডমিঙ্গোর বিপক্ষেও। এর ভেতর বহুল আলোচিত অভিযোগটি ছিল দলের ভেতর সিনিয়র-জুনিয়রদের মধ্যে বিদ্বেষ সৃষ্টি করা। সেই সঙ্গে অভিযোগ রয়েছে সিনিয়র ক্রিকেটারদের প্রতি বিমাতাসুলভ আচরণের।

এখানেই শেষ নয়। বিশ্বকাপের মতো গুরুত্বপূর্ণ আসরের আগে উইকেটের পেছনে জায়গা ভাগাভাগির মতো বিতর্কিত ফর্মুলার আবিষ্কারকও এই ডমিঙ্গো।

মাশরাফি দিয়ে শুরু। একে একে তার প্রতি অভিযোগ আসতে থাকে দলের সিনিয়র ক্রিকেটারদের থেকেও।

এসব অভিযোগ যখন একে একে উঠে আসতে থাকে, তখন অনেকেই ভাবতে শুরু করেন যে, ডমিঙ্গোর ভবিষ্যৎ নড়বড়ে। ঠিক তখনই নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বোর্ডের একটি সূত্র নিউজবাংলাকে ইঙ্গিত দেয় কেমন হতে যাচ্ছে ডমিঙ্গোর ভবিষ্যৎ।

সেই সূত্রের দেয়া তথ্য মতে, ডমিঙ্গোর সঙ্গে চুক্তিভঙ্গ করবে না বিসিবি। কেননা চুক্তিভঙ্গ করলে বিপুল অঙ্কের টাকা তাকে শুধু শুধু দিয়ে দিতে হবে। তাই বিশাল অঙ্কের টাকা যেন গচ্চা না দিতে হয় সে জন্য ডমিঙ্গোকে রেখে দিচ্ছে বোর্ড।

তবে তাকে হয়তো খুব বেশিদিন দেখা যাবে না জাতীয় দলের দায়িত্বে। জাতীয় দল থেকে তাকে সরিয়ে দেয়া হতে পারে বয়সভিত্তিক দল, হাই পারফরম্যান্স ইউনিট বাঁ নারী দলের কোচ হিসেবে। এর ফলে ডমিঙ্গোকে চাকরিচ্যুত করাও হচ্ছে না, আবার জাতীয় দলে রাখাও হচ্ছে না।

নিউজবাংলাকে বোর্ডের সেই সূত্র আরও জানায়, ইতিমধ্যে বোর্ড কর্তারা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন। সামনের বোর্ডসভায় বোর্ড সভাপতির সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসবে বোর্ড। এখন পর্যন্ত বিষয়টি শুধুই আলোচনাধীন একটি বিষয়। হয়তো আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্তটা এমন নাও হতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী জানুয়ারিতে নিউজিল্যান্ড সিরিজটাই হতে পারে জাতীয় দলের সঙ্গে ডমিঙ্গোর শেষ সিরিজ।

তবে আসলে কোন দিকে গড়াচ্ছে ডমিঙ্গোর ভবিষ্যৎ, সেটি জানতে অপেক্ষা করতে হবে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্তের জন্য। এর আগে এসব শুধু সম্ভাবনা হিসেবেই থেকে যাবে।

এ বিভাগের আরো খবর