ভারতের তরুণ ক্রিকেটার আনলুস রাজের স্বপ্ন ছিল বয়সভিত্তিক প্রথম শ্রেণির টুর্নামেন্টে কোনো এক দলের হয়ে মাঠে নামা। কিন্তু জায়গা করে নিতে পারছিলেন না কোনো দলেই।
এ সময় তার সঙ্গে পরিচয় হয় আশুতোষ বারো নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে। সিকিউর স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট নামক একটি কোম্পানির কর্ণধার হিসেবে নিজেকে পরিচয় দেন বারো। তিনি আনলুসকে প্রস্তাব দেন ১০ লাখ রুপির বিনিময়ে সি কে নাইড়ু টুর্নামেন্টের অনূর্ধ্ব ২৩ দলে জায়গা করে দেবেন।
এটি শুনে সে ফাঁদে পা দেননি আনলুস। বরঞ্চ মামলা ঠুকে দেন আশুতোষের নামে। এর পরই নড়েচড়ে বসে পুলিশ।
অভিযোগপত্রে আনসুল রাজ দাবী করেন, আশুতোষ তাকে সিকিম দলে জায়গা পাইয়ে দেয়ার লোভও দেখিয়েছেন।
তিনি আরও জানান, দিল্লির ক্রিকেটার জাভেদ খানও এর সঙ্গে জড়িত।
দীর্ঘ চার মাস তদন্তের পর অভিযোগের সত্যতা পায় পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয় সেই আশুতোষ এবং তার তিন সহযোগী চিত্রা বারো ও নিতিন ঝাকে।
পুলিশের তদন্তে কেঁচো খুঁড়তে বেড়িয়ে এসেছে সাপ। আশুতোষের পাশাপাশি জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে তিনটি রাজ্যের ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের কয়েকজন কর্মকর্তা, একজন সন্দেহভাজন জুয়াড়ি, দিল্লি ক্রিকেটের নির্বাচকদের সাবেক আহ্বায়ক, আইপিএল দলের ক্রিকেটার এবং বেঙ্গল অনূর্ধ্ব–১৯ দলের এক ক্রিকেটারের।
একই সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বেঙ্গল অনূর্ধ্ব–১৯ দলের ক্রিকেটার দানিশ মির্জাকে। এ সময় তার কাছে সিকিউর স্পোর্টস ম্যানেজমেন্টের ১৮টি চুক্তিপত্র পাওয়া যায়। একই সঙ্গে পাওয়া যায় জাভেদ খানের ছবি সংবলিত সিকিউর স্পোর্টস ম্যানেজমেন্টের পোস্টারও।
পুলিশের বরাত দিয়ে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, বারোর ব্যাংকের আর্থিক বিবরণী বিশ্লেষণ করে তারা দিল্লি ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক পরিচালক সঞ্জয় ভরদ্বাজের যোগসূত্র পেয়েছেন।
পাশাপাশি বিহার ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের কয়েকজন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্যও ডেকেছে পুলিশ। একইসঙ্গে দিল্লির সাবেক লিগ ক্রিকেটার সোবার্স জোবানের সঙ্গে এ জালিয়াত চক্রের যোগসাজোস খুঁজে পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাকে খোঁজার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
আটককৃতদের কাছ থেকে মোবাইল, চার লাখ রুপি, বিপুল পরিমাণে মাদক উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে জালিয়াতি ও প্রতারণা মামলার পাশাপাশি মাদক মামলারও প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।
তবে আটক আশুতোষের আইনজীবীর দাবি, তার মক্কেলের কাছ থেকে অর্থ আদায় ও ব্ল্যাকমেল করতেই ষড়যন্ত্রমূলক মামলা করা হয়েছে।