২০০৭ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালে ভারতের কাছে শিরোপা স্বপ্নভঙ্গ হয় পাকিস্তানের। এরপর গত ১৪ বছরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে জয় পায়নি পাকিস্তান।অবশেষে ১৪ বছর পর ফুরাল অপেক্ষা। প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতকে হারানোর স্বাদ পেল পাকিস্তান। ভারতের বিপক্ষে ১০ উইকেটের বড় জয়ের পাশাপাশি ইতিহাস গড়ে মাঠ ছেড়েছেন মোহাম্মদ রিজওয়ান ও বাবর আজম।
ভিরাট কোহলিদের দেয়া ১৫২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে বিনা উইকেটে ১৩ বল অক্ষত রেখে জয় পায় পাকিস্তান। এ সময় দুই ওপেনারের মধ্যে বাবর আজম ৫২ বলে ৬৮ ও মোহম্মদ রিজওয়ান ৫৫ বলে ৭৯ রানে অপরাজিত থাকেন।
শুরু থেকে ভারতীয় বোলিং আক্রমণকে অনায়াসে খেলতে থাকেন দুই জন। বুমরাহ, জাডেজা, শামি কেউই কোনো প্রভাব ফেলতে পারেননি।
দুবায়ের ব্যাটিং উইকেটে নির্বিঘ্নেই লক্ষ্যে পৌঁছান আজম ও রিজওয়ান। শেষ হয় পাকিস্তানের সাত ওয়ানডে বিশ্বকাপ ও চার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের অপেক্ষা।
এই প্রথম কোনো টি-টোয়েন্টি ম্যাচ ১০ উইকেটে হেরেছে ভারত ও ১০ উইকেটে জিতেছে পাকিস্তান।
শুধু টি-টোয়েন্টিই নয় এর আগে ওয়ানডে বিশ্বকাপে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে একবারও জেতেনি পাকিস্তান। ১৯৯২ বিশ্বকাপ থেকে থেকে হারের ধারাবাহিকতা শুরু।
দুই দল বিশ্ব আসরে প্রথম একে অপরের মোকাবিলা করে ১৯৯২ ওয়ানডে বিশ্বকাপে। এরপর ১৯৯৬, ৯৯, ২০০৩, ২০১১, ২০১৫ ও ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপ ও ২০০৭, ২০১২, ২০১৪, ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে টানা ভারতের কাছে হারে পাকিস্তান। অবশেষে ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাল্টালো পাশার দান।
যার কৃতিত্ব মূলত পাকিস্তানি বোলারদের। দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টসে জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন পাকিস্তান দলপতি বাবর আজম।
ম্যাচের চতুর্থ বলে শাহিন শাহ আফ্রিদির ইয়র্কার লেন্থের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে রানের খাতা খোলার আগে ফেরেন রোহিত শর্মা। এক ওভার পর লোকেশ রাহুলের অফ স্টাম্প উড়িয়ে দেন এই পেইসার।
আইপিএলে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা সুরিয়াকুমার ইয়াদভও ব্যর্থ হন। হাসান আলির দুর্দান্ত ডেলিভারিতে আউটসাইড এজ হয়ে উইকেটের পেছনে ধরা দিয়ে আউট হন ১১ রানে।
দলের এমন বিপর্যয়ে এগিয়ে আসেন ভিরাট কোহলি। রিশাভ পান্টকে সঙ্গে নিয়ে লড়াই চালিয়ে যেতে থাকেন। গড়েন ৫৩ রানের জুটি। শাদাব খানের কল্যাণে পান্টের বিদায়ে ভাঙ্গে তাদের জুটি। বড় স্কোর করতে ব্যর্থ হন রভিন্দ্র জাডেজা ও হার্দিক পান্ডিয়াও।
এক প্রান্ত আগলে লড়াই চালিয়ে যান কোহলি। তাকে থামতে হয় ৫৭ রানে। পাক বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে শেষতক সাত উইকেটে ১৫১ রানে থামে ভারতের ইনিংস।
পাকিস্তানের হয়ে শাহিন আফ্রিদি নেন তিনটি উইকেট। দুই উইকেট নেন হাসান আলি। আর একটি করে উইকেট যায় শাদাব খান ও হারিস রউফের ঝুলিতে।
চার ওভার বল করে ৩১ রানে তিন উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হন শাহিন আফ্রিদি।