কিছুক্ষণ পরই পর্দা উঠছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের। বাছাইপর্ব দিয়ে শুরু হবে এই আসর।
বাছাইপর্বের দ্বিতীয় ম্যাচে রোববার বাংলাদেশ সময় রাত আটটায় বাংলাদেশ মুখোমুখি হবে স্কটল্যান্ড। আর এই ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে টাইগারদের বিশ্বকাপের মূল পর্বে জায়গা করে নেয়ার লড়াই।
ক্রিকেটের শর্টার ফরম্যাটে বাংলাদেশের বিপক্ষে এর আগে কেবল একটি ম্যাচ খেলেছে স্কটল্যান্ড। ২০১২ সালের জুলাইয়ের সেই ম্যাচে বাংলাদেশকে হারতে হয়েছিল ৩৪ রানে।
সেই স্মৃতি এখনও জিইয়ে রেখেছে স্কটল্যান্ড। সে কারণেই হয়তো ম্যাচের আগে বাংলাদেশকে হুংকার দিয়ে রাখলেন স্কটিশ কোচ। বলেছেন, বাংলাদেশ দলকে খুব একটা বড় করে দেখছেন না। ওমান এবং পাপুয়া নিউগিনির কাতারেই মাহমুদুল্লাহ-সাকিবদের দেখছেন তিনি।
তবে ভিন্ন চিত্র টাইগার শিবিরে। ক্রিকেট যে ভদ্রলোকের খেলা ম্যাচের আগের সংবাদ সম্মেলনে তার প্রমাণ রাখলেন টি-টোয়েন্টি দলপতি।
রিয়াদ বলেন, ‘না, কোনো সতর্কবার্তা না। আমরা জানি প্রস্তুতি ম্যাচে কোন জায়গাগুলোতে খারাপ করেছি। বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় একাদশে ছিলেন না। প্রস্তুতি ম্যাচের ফল আমাদের মানসিকতায় প্রভাব ফেলবে না। আমরা ইতিবাচক।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটা এমন একটা ফরম্যাট যেখানে প্রতিপক্ষকে কখনই হালকা করে দেখার সুযোগ নেই। বিনয়ী থাকতে হবে ও সেরাটা খেলার মানসিকতা থাকতে হবে। এটাই এখন চিন্তা।’
বাছাইপর্বের আগে ইতোমধ্যেই তিনটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছে টিম টাইগার্স। এগুলোর মধ্যে শুধু ওমান এ-দলের বিপক্ষেই জয়ের দেখা পেয়েছে সৌম্য-লিটনরা। শ্রীলঙ্কা ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে হেরে মাঠ ছাড়তে হয়েছে লাল সবুজের প্রতিনিধিদের।
তবে প্রস্তুতি ম্যাচের হারকে খুব একটা আমলে নিচ্ছেন না টি-টোয়েন্টি দলপতি। ঘরের মাঠে টানা দুটি সিরিজ জিতে বিশ্বকাপ খেলতে আসা টাইগারদের মনোবল এখনও চাঙ্গা বলছেন মাহমুদুল্লাহ।
তিনি বলেন, ‘আমরা দুটি প্র্যাকটিস ম্যাচ হেরেছি। আমার মনে হয় এর কোনো প্রভাব পড়বে না। কালকের ম্যাচের জন্য প্রস্তুত। দলের আত্মবিশ্বাস আগের মতই। আমরা সেরা খেলাটাই খেলতে পারব।’
ঘরের মাঠে টানা দুটি সিরিজ স্লো উইকেটে খেলেছে ক্রিকেটাররা। এরপর বিশ্বকাপের স্পোর্টিং উইকেটে মাত্র তিনটি ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়েছে তাদের। তুলনামূলক কম ম্যাচ খেলা হলেও উইকেটের পরিবর্তন সম্পর্কে মানসিকভাবে নিজেদের প্রস্তুত রাখছেন রিয়াদ-মুশফিকরা।
রিয়াদের ভাষ্যমতে, ‘ওমানে যে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছিলাম সেই ম্যাচে ব্যাটসম্যান-বোলারদের সঙ্গে যতটা আলাপ-আলোচনা করেছি। সবাই বলেছে পিচের কন্ডিশন ভালো ছিল। স্পোর্টিং উইকেট ছিল। আশা করি কন্ডিশন ওরকমই থাকবে।’
‘আমাদের যেকোনো কন্ডিশনের জন্যই মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকা প্রয়োজন। তাহলে উইকেট স্লো হোক, বাউন্সি হোক কিংবা স্পোর্টিং হোক- আমরা মানিয়ে নিতে পারব। আশা করছি, ভালো উইকেট থাকবে, প্রথম বল থেকেই ম্যাচ আমাদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
বিশ্বকাপকে সামনে রেখে অনন্য দুটি মাইলফলক ছোঁয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন দেশসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান।
সাকিব যদি এই টুর্নামেন্টে ১০টি উইকেট নিতে পারেন তবে তিনি বনে যাবেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী।
বর্তমানে শর্টার ফরম্যাটের এই বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারীর জায়গাটা নিজের করে রেখেছেন পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার শহিদ আফ্রিদি। তার ঝুলিতে ৩৯টি উইকেট। আর সাকিবের উইকেট ৩০।
আর মাত্র দুইটি উইকেট পেলেই সাকিব গড়বেন আরও একটি ইতিহাস। মালিঙ্গাকে টপকে নিজের নাম লেখাবেন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী হিসেবে।
১০৭ উইকেট ঝুলিতে পুরে মালিঙ্গা এখন অবসরে। আর সাকিবের বর্তমান উইকেট সংখ্যা ১০৬।
বাছাইপর্বে স্কটল্যান্ডের পাশাপাশি স্বাগতিক ওমান ও পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। এই পর্বে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন বা রানার্স আপ হলেই মিলবে বিশ্বকাপের মূল পর্বের টিকিট।