বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

এখনও জনপ্রিয় স্বরূপকাঠির ক্রিকেট পিচ

  •    
  • ১৫ অক্টোবর, ২০২১ ০৮:০৮

৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে স্বরূপকাঠি উপজেলায় কারিগররা নারিকেল ছোবড়া দিয়ে বানাচ্ছেন কৃত্রিম ক্রিকেট পিচ। নারিকেলের ছোবড়া থেকে রশি বানিয়ে তা থেকে তৈরি হয় ম্যাটের পিচ।

ক্রিকেটে ম্যাটের তৈরি উইকেট বা কৃত্রিম পিচ আধুনিক ক্রিকেটের অবিচ্ছেদ্য অংশ। মাটি, পাথর ও বালুর তৈরি মূল পিচের পাশাপাশি বিভিন্ন ক্লাবে, অ্যাকাডেমিতে ও ভেন্যুতে ইনডোর পিচ হিসেবে ব্যবহার বাড়ছে কৃত্রিম উপাদানে তৈরি এসব ম্যাট উইকেটের।

আর বাংলাদেশে ব্যবহৃত অধিকাংশ ম্যাটের উৎস পিরোজপুর জেলার নেছারাবাদ উপজেলা। যেটি এখনও এর পুরোনো নাম স্বরূপকাঠি হিসেবেই বেশি পরিচিত। ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে স্বরূপকাঠি উপজেলায় কারিগররা নারিকেল ছোবড়া দিয়ে বানাচ্ছেন কৃত্রিম ক্রিকেট পিচ। নারিকেলের ছোবড়া থেকে রশি বানিয়ে তা থেকে তৈরি হয় ম্যাটের পিচ।

স্বাধীনতার আগে স্বরূপকাঠির সুটিয়াকাঠি ইউনিয়নের বেলতলা গ্রামজুড়ে ছিল নারিকেলকেন্দ্রিক কুটির শিল্প। তখন নারিকেলের ছোবড়া দিয়ে মূলত পাপোশ বানানো হতো। একসময় অনেকটা বিশালাকৃতির পাপোশের আদলে ক্রিকেট খেলার পিচ বানানো শুরু হয়।

কৃত্রিম পিচ তৈরির প্রতিষ্ঠান ‘দ্য পিপলস কয়ার ইন্ডাস্ট্রিজ’ প্রায় ৪৫ বছর ধরে ঢাকার ক্রিকেট ক্লাবগুলোকে সরবরাহ করে আসছে কৃত্রিম পিচ। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড ইনডোর প্র্যাকটিসের জন্য ব্যবহার করছে এই প্রতিষ্ঠানের পিচ। আগের মতো ব্যাপক সংখ্যায় না হলেও বছরে ৫০টি পিচ বিক্রি করার দাবি করেছে তারা।

দ্য পিপলস কয়ার ইন্ডাস্ট্রিজের মালিক মো. মহিউদ্দিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কারখানায় তৈরি ক্রিকেট ম্যাট দেশের বিভিন্ন জায়গায় যায়, যার যেখানে যেমন প্রয়োজন হয়। একটি ম্যাটের দাম বর্তমানে ৩৩-৩৬ হাজার টাকার মতো। নারিকেলের ছোবড়া সংগ্রহ করি বাগেরহাট থেকে, এখানে রশি পাকিয়ে তারপর ম্যাট তৈরি হয়। একটি ম্যাটে ৩-৪ জন এবং পাপোশে ৫-৬ জন কাজ করে। একটি ম্যাট ৭-৮ বছর ব্যবহার করা যায়।’

ক্রিকেট অনুশীলনের জন্য ব্যবহৃত ম্যাট উইকেট। ছবি: সংগৃহীত

পিচ তৈরির কাজে নিয়োজিত দুজন মাছুম খান ও আব্দুল কাদের। তারা নিউজবাংলাকে জানান, ক্রিকেট মৌসুমে পিচের চাহিদা বেশি থাকে।

কাদের বলেন, ‘ক্রিকেট মৌসুম, মানে ঘরোয়া লিগ ও কাপ খেলায় কৃত্রিম পিচ বেশি প্রয়োজন হয় প্র্যাকটিসের জন্য। এ ছাড়া এটা দিয়ে তৈরি হয় পাপোশ, ব্রাশের তুলি। এগুলো তৈরি করে মোটামুটি লাভ হয়। পাপোশের কাঁচামাল আমরা বাজার থেকে কিনে আনি। তারপর কারখানায় তৈরি করে এগুলোকে বিভিন্ন জায়গায় সাপ্লাই দিই।’

২২ গজের ম্যাট পিচ তৈরিতে অন্তত ১০ থেকে ১২ হাজার টাকার রশি লাগে। একটি পিচ তৈরি করতে চারজন শ্রমিককে কাজ করতে হয় এক সপ্তাহ। সব মিলিয়ে একটি পিচ তৈরিতে ২২-২৫ হাজার টাকার মতো খরচ হয়।

শুধু বাণিজ্যিক বিবেচনা থেকে নয়, স্বরূপকাঠির ঐতিহ্য হিসেবে এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখার তাগিদ বোধ করেন মহিউদ্দিন। তার প্রত্যাশা সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকরা এগিয়ে আসবেন এই শিল্পের প্রসারে।

এ বিভাগের আরো খবর