ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন ইতালির টানা ৩৭ ম্যাচ জয়ের রেকর্ড থামাল অবশেষে। ইউয়েফা নেশনস লিগের সেমিফাইনালে স্পেনের কাছে ২-১ গোলে হেরেছে আৎসুরিরা। এ জয়ে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিতে ইতালির কাছে হারের বদলা নিল স্পেন।
মিলানের সান সিরোতে শুরুতেই নেতিবাচক পরিবেশ ছিল স্বাগতিক ইতালির জন্যে। এসি মিলানের সাবেক গোলকিপার জানলুইজি ডোন্নারুমাকে দর্শক দুয়োধ্বনি দেন ম্যাচ শুরুর আগে।
মিলান ছেড়ে পিএসজিতে পাড়ি দিয়েছেন এই গোলকিপার- তাই এমন শুভেচ্ছা!
স্বাগতিক দর্শকের এমন আচরণে ইতালির আত্মবিশ্বাস হয়তো কিছুটা নড়বড়ে হয়ে পড়ে। যার ফায়দা নেয় স্পেন।
১৭ মিনিটে মিকেল ওইয়ারসাবালের ক্রসে দারুণ ভলি করে স্পেনকে লিড এনে দেন ফেরান তরেস।
গোল হজম করে উদ্যম ফিরে পায় ইউরো সেরারা। আক্রমণের মাত্রা বাড়াতে থাকে স্বাগতিক দল।৩৬ মিনিটে এমারসনের ক্রসে স্পেন গোলকিপার উনাই সিমোনকে একা পেয়েও লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি অভিজ্ঞ ইতালিয়ান স্ট্রাইকার লরেঞ্জো ইনসিনিয়ে।
এর মিনিট চারেক বাদেই আসে ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। ৪১ মিনিটে ইতালির ডিফেন্ডার লিওনার্দো বনুচ্চি সার্হিও বুস্কেটসকে ফাউল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখেন।
প্রথমটি বনুচ্চি পেয়েছিলেন রেফারির সঙ্গে তর্ক করে। ফলে ম্যাচের প্রায় ৫০ মিনিট বাকি থাকতে ১০ জনের দলে পরিণত হয় ইতালি।
বিরতির ঠিক আগে তরেসের দ্বিতীয় গোলে লিড দ্বিগুণ করে ফেলে সফরকারী দল। ২-০ গোলের লিড নিয়ে প্রথমার্ধ শেষ করে স্পেন।
দ্বিতীয়ার্ধে ১০ জন নিয়ে স্পেনের সঙ্গে পেরে ওঠেনি ইতালি। প্রায় ৭৫ ভাগ বল নিজেদের দখলে রাখে লুইস এনেরিকের শিষ্যরা।
ম্যাচ শেষ হওয়ার মিনিট সাতেক আগে ইতালির হয়ে লরেঞ্জ পেল্লেগ্রিনি একটি গোল শোধ করলেও ম্যাচভাগ্য বদলাতে পারেনি তা।
ফলে নেশনস লিগের ফাইনালে পৌঁছে যায় স্পেন। আর রবার্তো মানচিনির ইতালির জয়রথ থামে ৩৭ ম্যাচ পর।
ইউরোপিয়ান লিগের ব্যস্ত সূচি ও কোভিড বিধিনিষেধের কারণে দলকে নিয়ে খুব বেশি অনুশীলনের সুযোগ পাননি এনরিকে। তারপরও দলের এমন দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে খুশি স্পেনের বস।
ম্যাচ শেষে তিনি স্কাই স্পোর্টসকে বলেন, ‘মাত্র দেড়টা ট্রেনিং সেশন পেয়েছি। একেবারেই সহজ ছিল না ম্যাচটা। তারপরও ছেলেরা যেমন মানসিকতা দেখিয়েছে তা সত্যিই অসাধারণ।
অন্যদিকে ইতালির কোচ মানচিনির মতে, ১০ জন নিয়ে স্পেনের মতো দলের বিপক্ষে পেরে ওঠা সম্ভব না। লাল কার্ডই ম্যাচ ঘুরিয়েছে মন্তব্য তার।
মানচিনি বলেন, ‘স্পেনের পজেশন ফুটবলের সঙ্গে ১১ জন নিয়েই খেলা কঠিন। আর সেখানে ১০ জন নিয়ে কেমন হবে সেটা বুঝতেই পারছেন! ছেলেরা যতটুকু সম্ভব করেছে।’
বৃহস্পতিবার রাতে ফ্রান্স ও বেলজিয়ামের মধ্যকার দ্বিতীয় সেমিফাইনাল। এই ম্যাচে জয়ী দলের বিপক্ষে স্পেন শিরোপা জয়ের ম্যাচে নামবে ১০ অক্টোবর।