প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত ‘জয়তু শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক গ্র্যান্ডমাস্টার্স দাবা টুর্নামেন্ট’-এর পর্দা নামল বর্ণাঢ্য সমাপনী আয়োজনের মধ্য দিয়ে।
বনানীর শেরাটন ঢাকা হোটেলে সোমবার রাত ৮টার দিকে শুরু হয় সমাপনী অনুষ্ঠান।
বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশন আয়োজিত ৯ দিনের এই টুর্নামেন্টে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছে কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশ।
টুর্নামেন্টের সমাপনী দিনের আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, বিশেষ অতিথি ছিলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল।
সম্মানীয় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দাবা ফেডারেশনের সহসভাপতি এবং সাইফ পাওয়ারটেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরফদার মো. রুহুল আমিন, ফেডারেশনের সহসভাপতি কে এম শহীদুল্লাহ্, আবদুল মোনেম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহিউদ্দিন মোনেম, দাবা ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাবুদ্দিন শামীম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. শোয়েব রিয়াজ আলম।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের সহসভাপতি এবং কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশ-এর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান, বোর্ড অফ ট্রাস্টিজ ড. চৌধুরী নাফিজ সরাফাত।
‘জয়তু শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক গ্র্যান্ডমাস্টার্স দাবা টুর্নামেন্ট’ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদপ্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ প্রধানমন্ত্রীর ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষে আন্তর্জাতিক গ্র্যান্ডমাস্টার্স দাবা টুর্নামেন্ট আয়োজনের জন্য ড. চৌধুরী নাফিজ সরাফাতসহ আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান।
ক্রীড়াঙ্গনের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গভীর অনুরাগের কথা তুলে ধরেন তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ক্রীড়া ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বড় অর্জনগুলোর পেছনে ছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুপ্রেরণা।
শেখ হাসিনার শাসনামলে বাংলাদেশের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এখন থেকে ১২ বছর আগে বাংলাদেশ ছিল স্বল্পোন্নত দেশ, মাথাপিছু আয় ছিল বিশ্বের মধ্যে অনেক কম, বাংলাদেশ ক্ষুধা-দারিদ্র্যের দেশ হিসেবে পরিচিত ছিল।
‘আর এখন চাষযোগ্য জমি অনেক কমলেও বাংলাদেশ খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশ। এত জনঘনত্ব ও কম কৃষিজমির পরেও কীভাবে বাংলাদেশ খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশে পরিণত হতে পেরেছে তা নিয়ে বিশ্ব সম্প্রদায় বিস্মিত।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এটা কোনো জাদু নয়, বরং শেখ হাসিনার জাদুকরি নেত্বত্বের কারণেই বাংলাদেশ উন্নয়নের প্রতিটি সূচকে এগিয়ে রয়েছে। করোনা মহামারির সময়েও বাংলাদেশের জিডিপির যে প্রবৃদ্ধি সেটি বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে আন্তর্জাতিক দাবা টুর্নামেন্ট আয়োজন করায় চৌধুরী নাফিজ সরাফাতের প্রশংসা করেন অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। আগামীতেও ড. নাফিজ সরাফাত এ ধরনের আয়োজন করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
‘জয়তু শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক গ্র্যান্ডমাস্টার্স দাবা টুর্নামেন্ট’ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেলজাহিদ আহসান রাসেল বলেন, ‘এই টুর্নামেন্ট এমন একজনের নামে আয়োজিত হয়েছে যিনি শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা বিশ্বের কাছে রোল মডেল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবতার রোল মডেল।
‘মিয়ানমারের নিপীড়িত লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ব নেতাদের সামনে রোল মডেলে পরিণত হয়েছেন।’
ক্রীড়াঙ্গনের প্রতি শেখ হাসিনার ভালোবাসার বিভিন্ন উদাহরণ তুলে ধরেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের সহসভাপতি এবং কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশ-এর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান, বোর্ড অফ ট্রাস্টিজ ড. চৌধুরী নাফিজ সরাফাত বলেন, ‘সর্বকালের সবচেয়ে প্রাজ্ঞ নেতাদের একজন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে আয়োজিত এই টুর্নামেন্টের সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেয়ার সুযোগ পেয়ে আমি আনন্দিত।’
তিনি বলেন, “একজন নেতাকে সব সময় মানুষ তার সাফল্যের গল্পের কারণে অনুসরণ করে না। মানুষ নেতার উদাহরণ ও আদর্শকে অনুসরণ করে।
“মিয়ানমারে রোহিঙ্গা গণহত্যার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশটির শরণার্থীদের আমাদের দেশে আশ্রয় নেয়ার অনুমতি দেন। তিনি জানেন অন্ধকার দিয়ে অন্ধকারকে দূর করা সম্ভব নয়, আলো দিয়েই তা কেবল করা সম্ভব। পুরো বিশ্ব যখন ‘সবার উপরে মানবতা’ ধারণা সম্পর্কে নতুন করে ভাবছিল, তখন আমাদের প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকে দেখিয়েছেন এর প্রকৃত অর্থ কী এবং সেটি করতে গিয়ে তিনি ‘মানবতার জননী’ হিসেবে খ্যাতিলাভ করেছেন।”
‘জয়তু শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক গ্র্যান্ডমাস্টার্স দাবা টুর্নামেন্ট’ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের সহসভাপতি এবং কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশ-এর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান, বোর্ড অফ ট্রাস্টিজ ড. চৌধুরী নাফিজ সরাফাতড. চৌধুরী নাফিজ সরাফাত বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনে আমি তাকে শুভেচ্ছা জানাতে চাই এবং মহান আল্লাহর কাছে তার সুস্বাস্থ্য ও সমৃদ্ধির জন্য প্রার্থনা করছি। তার সংগ্রাম আমাদের সংগ্রাম, তার জয় আমাদের জয়।’
জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জন নিয়ে নবম বার্ষিক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘ক্রাউন জুয়েল’ বা ‘মুকুটের মণি’ অভিধা পাওয়ায় তাকে অভিনন্দন জানান চৌধুরী নাফিজ সরাফাত।
পরে টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন ভারতের সংকল্প গুপ্তসহ অন্য বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেয়া হয়।
রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে ২০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হয় এ প্রতিযোগিতার। তবে বিজয়নগরের হোটেল ৭১-এ বিভিন্ন রাউন্ডের খেলা শুরু হয় এক দিন আগেই।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশন ও সাউথ এশিয়ান দাবা কাউন্সিলের সভাপতি পুলিশ মহাপরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদ। সম্মানীয় অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের সহসভাপতি এবং কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশ-এর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান, বোর্ড অফ ট্রাস্টিজ ড. চৌধুরী নাফিজ সরাফাত।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশনের সহসভাপতি কে এম শহীদুল্লাহ্, দাবা ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাবুদ্দিন শামীম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. শোয়েব রিয়াজ আলম, ফেডারেশনের আরেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান মল্লিক এবং কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মোহাম্মদ এ আরাফাত।
প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে গত বছরের সেপ্টেম্বরে হয়েছিল জয়তু শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক অনলাইন দাবা টুর্নামেন্ট। ওই টুর্নামেন্টের সমাপনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের সভাপতি আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ এবং সহসভাপতি চৌধুরী নাফিজ সরাফাত ঘোষণা দিয়েছিলেন, প্রতিবছর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে গ্র্যান্ডমাস্টার টুর্নামেন্ট আয়োজন করার। সে ঘোষণা অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত হয়েছে এবারের টুর্নামেন্ট।
বাংলাদেশসহ ১০টি দেশের ১২ জন গ্র্যান্ডমাস্টার, ১৬ জন আন্তর্জাতিক মাস্টার ও তিনজন নারী আন্তর্জাতিক মাস্টার এই টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছেন।
প্রতিযোগিতায় মোট নগদ ১৫ হাজার আমেরিকান ডলার অর্থ পুরস্কার দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে মূল পুরস্কার ছিল ১৩ হাজার ডলার (চ্যাম্পিয়ন ৪০০০, রানার-আপ ২৫০০, তৃতীয় ১৫০০, চতুর্থ ১০০০, পঞ্চম ১০০০, ষষ্ঠ ১০০০, সপ্তম ১০০০, অষ্টম ১০০০ ডলার)।
বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের জন্য দুই হাজার আমেরিকান ডলার (প্রথম ৭০০, দ্বিতীয় ৫০০, তৃতীয় ৪০০, চতুর্থ ২০০ এবং পঞ্চমকে ২০০ ডলার) পুরস্কার দেয়া হয়।