বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিসিবির ফান্ডে ৯০০ কোটি: সংস্কার নেই শেরে বাংলার

  •    
  • ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৩:৪১

দীর্ঘদিন ধরে শেরে বাংলা স্টেডিয়ামের গ্যালারির দর্শকদের বসার চেয়ারগুলো চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে কতটা অযত্নের শিকার সেগুলো। বেশির ভাগ চেয়ার ভাঙাচোরা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। নেই সংস্কারের উদ্যোগ। আন্তর্জাতিক সিরিজ আয়োজনের আগে স্টেডিয়ামের বাইরে জোড়াতালি দিয়ে চলে সংস্কারের কাজ।

গত মাসে বোর্ডের বার্ষিক সাধারণ সভায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি জানান করোনাকালেও বড় অঙ্কের ফিক্সড ডিপোজিট রয়েছে বোর্ডের। টাকার অঙ্কে সেটি ৯০০ কোটি। যেটির বড় অংশ ব্যবহার হওয়ার কথা ক্রিকেটের উন্নয়নে।

ক্রিকেটের উন্নয়নের ভেতর ক্রিকেটের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, স্টেডিয়ামের অবকাঠামোগত উন্নয়নও অন্তর্গত। বিসিবির সভাপতির পদে নাজমুল হাসান পাপন বসার পর ক্রিকেটের অবকাঠামোর আমূল পরিবর্তন এসেছে। কিন্তু বোর্ডের নজর এড়িয়ে গেছে সেগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ।

দীর্ঘদিন ধরে শেরে বাংলা স্টেডিয়ামের গ্যালারির দর্শকদের বসার চেয়ারগুলো চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে কতটা অযত্নের শিকার সেগুলো। বেশির ভাগ চেয়ার ভাঙাচোরা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। নেই কোনো সংস্কারের উদ্যোগ।

আন্তর্জাতিক সিরিজ আয়োজনের আগে স্টেডিয়ামের বাইরে জোড়াতালি দিয়ে চলে সংস্কারের কাজ। যা স্থায়ী থাকে সিরিজ শেষ হওয়া পর্যন্ত। কিছুদিনের মধ্যে আগের জীর্ণদশায় ফিরে যায় সেগুলো।

শেরে বাংলা স্টেডিয়ামের গ্যালারির চেয়ার। ছবি: নিউজবাংলা

অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মতো দুই আন্তর্জাতিক হেভিওয়েট দলের বিপক্ষে সিরিজের সময় পাওয়া গেছে মিরপুরের স্টেডিয়াম নিয়ে বোর্ডের অবহেলার নজির। গ্যালারির চেয়ারগুলোর নিচে জমে গেছে শ্যাওলার আস্তর।যা ইঙ্গিত দেয় দীর্ঘদিন ধরে চলছে না পরিচ্ছন্নতার কাজ। বোর্ডের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে নিয়মিতভাবে তদারকি করা হচ্ছে স্ট্যান্ড, গ্যালারি, বক্সসহ ও স্টেডিয়ামের পুরো এলাকার।

শুধু গ্যালারির অবস্থাই যে জরাজীর্ণ তা নয়। অত্যাধুনিক মিডিয়া সেন্টার থেকে ইনডোরে যাবার পথটি খুবই বিপজ্জনক রূপ নিয়েছে। যাতায়াতের পথে এয়ার কন্ডিশনের পানি মেঝেতে জমে থাকে প্রায় সময়। ফলে শ্যাওলা জমে রাস্তাটি এতটাই পিচ্ছিল হয়ে গেছে যে যেকোনো সময় পা ফসকে ঘটতে পারে বিপত্তি।

হোম অফ ক্রিকেটের পানি নিষ্কাশনব্যবস্থা এমন হওয়ার কথা ছিল না। লম্বা সময় ধরে এই অবস্থা এখন বিসিবির নিত্যনৈমিত্যিক চিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। যা কিনা দেখার কেউ নেই। টনক নড়ছে না গ্রাউন্ডস কমিটির সদস্যদের।

ইনডোরে যাওয়ার পথে শ্যাওলার আস্তর। ছবি: নিউজবাংলা

এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে একটা উত্তরই আসে কর্তাদের কাছ থেকে। বিষয়টি চলমান প্রক্রিয়া, সংস্কারের কাজ চলছে। আর সম্প্রতি অজুহাতের খাতায় যুক্ত করা হয়েছে করোনাকে।

করোনার সময়ে সিরিজ উপলক্ষে মাঠের সংস্কারকাজ ও স্টেডিয়ামের বাইরে বিজ্ঞাপনের ঝকঝকে ব্যানার লাগানো হলেও ভেতরের অধিকাংশ জায়গায় পড়েনি পরিচ্ছন্নতার ছাপ। একই হাল সাংবাদিকদের জন্য বরাদ্দ প্রেসবক্সেরও।

সংবাদকর্মীরা যেখানে বসে ম্যাচ কভার করেন সেখানে রয়েছে চেয়ার সংকট। ম্যাচের সময় অনেক সংবাদকর্মীকে বসার জায়গা না পেয়ে দাঁড়িয়ে থেকে করতে হয় তাদের কাজ। চেয়ার যে কয়টা আছে তার অধিকাংশই ভাঙা।

সবকিছু দেখার পর প্রশ্ন আসাটা স্বাভাবিক, রিজার্ভে ৯০০ কোটি টাকা থাকার পরও স্টেডিয়ামের অবকাঠামো উন্নয়নে বিসিবির কি কোনো ফান্ড বরাদ্দ নেই? নাকি এমনটা হচ্ছে দেখভালের দায়িত্বে থাকা লোকজনের দায়িত্বে গাফিলতির কারণে?

আবর্জনায় ভর্তি হয়ে আছে শেরে বাংলার স্টেডিয়ামের চত্বর। ছবি: নিউজবাংলা

এ বিষয়ে নিউজবাংলা কথা বলেছে বিসিবির গ্রাউন্ডস কমিটির ম্যানেজার আবদুল বাতেনের সঙ্গে। উত্তরে জানা গেছে চিরাচরিত চলমান প্রক্রিয়া ও করোনার দোহাই।

বাতেন বলেন, ‘নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া সিরিজের সময় আমরা কিছু উন্নয়নের কাজ করেছি। বোর্ডের পক্ষ থেকে কী দিয়েছে সেটা ওভাবে বলা যাবে না, কিন্তু আমরা ধাপে ধাপে উন্নয়ন করছি।

‘চেয়ার যেগুলো ভাঙা আছে সেগুলো পর্যায়ক্রমে সংস্কারের কাজ চলছে। এটা চলমান প্রক্রিয়া। করোনার কারণে কাজ বন্ধ ছিল, কিন্তু এখন ধীরে ধীরে সেগুলো সংস্কারের কাজ চলছে। কিছু চেয়ার আমরা ইতিমধ্যেই বদলে দিয়েছি। বাকিগুলোও আমরা ক্রমান্বয়ে বদলে দেব।’

তো দাবি করেন প্রেসবক্সের নিচে থেকে অনেক চেয়ার বদলে দেয়া হয়েছে। বাস্তবে তার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। নতুন করে বদলে দেয়া হলেও অল্প সময়ে সেগুলো বেহাল।

বাতেন এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘যখন যেটা লাগে সেটা আমরা করছি। চেয়ারগুলোর ব্যাপারে খোঁজ নেয়া হয়েছে। শিগগির সেগুলো সংস্কারের আওতায় আনা হবে। স্কোর বোর্ডের দিক থেকে শুরু করে আপনাদের সাংবাদিকদের প্রেসবক্সের নিচ পর্যন্ত চেয়ারগুলো আমরা বদলে দিয়েছি। আর পানির ব্যাপার যেটা বললেন সেটা আসলেই একটু সমস্যা রয়েছে, আমরা এ বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।’

শেরে বাংলার গ্যালারির চেয়ারের বর্তমান অবস্থা। ছবি: নিউজবাংলা

সামনের মাস দুয়েক শেরে বাংলায় ম্যাচ নেই। বিশ্বকাপের পর শুরু হচ্ছে পাকিস্তান সিরিজ। এরপর ঘরোয়া ক্রিকেটের ব্যস্ততা। এর ফাঁকেই হোম অফ ক্রিকেটের জৌলুস ফিরিয়ে আনতে সচেষ্ট বিসিবি এমনটা জানালেন বাতেন।

তিনি বলেন, ‘মিডিয়া বক্সের বিষয়টা আমরা জানি। এটাও দ্রুত বদলে দেয়া হবে। কবে নাগাদ সেটা বলতে পারছি না, একটা গোলমাল হয়ে গেছে তো। বদল করাটা আসলে ব্যাপার না। কিছু কোম্পানি রয়েছে তাদের দিয়ে দিলে তারা বদল করে দেবে। নিজেরাও আমরা বানিয়ে নিতে পারব। শিগগিরই বদলে দেয়া হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর