২০০৪ সালের জুনের ১৫ তারিখ। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি দিয়ে সেদিন শ্রীলঙ্কার জার্সি গায়ে অভিষেক হয়েছিল ঝাঁকড়া চুলের এক ছেলের। নাম তার লাসিথ মালিঙ্গা। ব্যতিক্রমধর্মী বোলিং অ্যাকশনের কারণে অভিষেকেই নজরে এসেছিলেন সবার।
সেই থেকে শুরু। এরপর একে একে নিজের জায়গা শক্ত করে নিতে থাকেন লঙ্কান টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দলে। নিজেকে ধীরে ধীরে এমন এক জায়গায় নিয়ে গিয়েছিলেন মালিঙ্গা যেখানে ২২ গজে তার উপস্থিতি কাঁপন ধরিয়ে দিত ব্যাটসম্যানদের।
দুর্ধর্ষ এই বোলার ২০১১ সালে টেস্ট এবং ২০১৯ সালে বিদায় জানিয়েছিলেন ওয়ানডে ক্রিকেটকে। আর ২০২১ সালে এসে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর মধ্য দিয়ে পরিসমাপ্তি ঘটালেন ১৭ বছরের বর্ণিল ক্রিকেট ক্যারিয়ারের।
মঙ্গলবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক ভিডিও বার্তায় ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন লঙ্কান এই পেইসার।
তিনি বলেন, ‘গত ১৭ বছরে আমি যেই অভিজ্ঞতা পেয়েছি ক্রিকেটের মাঠ থেকে সেটির আর প্রয়োজন নেই। আমি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সেই সঙ্গে সকল প্রকার ক্রিকেট থেকেও অবসর নিতে যাচ্ছি।’
মালিঙ্গার ১৭ বছরের ক্রিকেট ক্যারিয়ারটা ছিল বেশ বর্ণিল। প্রায় দেড় যুগের ক্রিকেট ক্যারিয়ারে মালিঙ্গা খেলেছেন ৩০টি টেস্ট। এই ৩০ টেস্টে ৩৩.১৫ গড়ে ৩.৮৫ ইকোনোমি রেটে ঝুলিতে পুরেছেন ১০১টি উইকেট। যেখানে রয়েছে তার ইনিংস সেরা ৫০ রানে ৫ উইকেট এবং ম্যাচ সেরা ২১০ রানে ৯ উইকেট।
মালিঙ্গার রেকর্ডটা বেশি রঙিন ক্রিকেটের ওয়ানডে ফরম্যাটে। ২২৬ ম্যাচে ২৮.৮৭ গড়ে মালিঙ্গা শিকার করেছেন ৩৩৮ উইকেট। যেখানে তার নামের পাশে জ্বলজ্বল করছে ৬/৩৮ এর দুর্দান্ত এক বোলিং ফিগার। ক্রিকেটের এই ফরম্যাটে ৪ উইকেট নিয়েছেন মালিঙ্গা ১১ ম্যাচে, আর ৫ উইকেট ঝুলিতে পুরেছেন ৮ ম্যাচে।
ক্রিকেটের শর্টার ফরম্যাটের সর্বোচ্চ উইকেটের রেকর্ডটা এখনও ধরে রেখেছেন ৩৮ বছর বয়সী মালিঙ্গা। এখন পর্যন্ত টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ১০৭ উইকেটের মালিক তিনি।
তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের চেয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে অধিকতর সফল ছিলেন মালিঙ্গা। ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের ৮৪ ম্যাচে ৩.৯১ ইকোনোমি রেটে ২৫৭ উইকেট ঝুলিতে পুড়েছিলেন সাবেক এই লঙ্কান পেইসার। সেই সঙ্গে তার রয়েছে ১৭ রানে ৬ উইকেট নেয়ার রেকর্ডও।