২০২১ সালটাকে বাংলাদেশ জাতীয় দল যেন ইতিহাস গড়ার বছর হিসেবে বেছে নিয়েছে। এ বছর বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে প্রথমবারের মতো ম্যাচ জয়ের দেখা পায় অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। একই সঙ্গে টাইগাররা প্রথমবারের মতো অজিদের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের স্বাদ পায়।
নিউজিল্যান্ড সিরিজে আরেকটি ইতিহাস গড়ল টাইগাররা। ক্রিকেটের শর্টার ফরম্যাটে টানা তিন সিরিজ জয়ের রেকর্ড। বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টিতে প্রথমবারের মতো পেল টানা তিন সিরিজ জয়।
শুরুটা হয় জিম্বাবুয়ে সিরিজ দিয়ে। এরপর ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়াকে দাওয়াত দিয়ে এনে নাকানিচুবানি খাইয়ে ৪-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নেয় টাইগাররা। এরপর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এক ম্যাচ আগেই ৩-১ ব্যবধানে সিরিজ নিশ্চিত করল স্বাগতিক দল।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের চতুর্থ ম্যাচে ৬ উইকেটে জয়ে এই রেকর্ড টাইগারদের।
নিউজিল্যান্ডের দেয়া ৯৪ রানের ছোট লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো করতে পারেনি স্বাগতিক দল। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে দলীয় ৮ রানে কোল ম্যাককোঞ্চির শিকার হয়ে ফিরতে হয় লিটন দাসকে।
দ্রুত উইকেট পতনের পর প্রাথমিক বিপর্যয় সামাল দেন নাঈম শেখ ও সাকিব আল হাসান। দলীয় ৩২ রানে আজাজ প্যাটেলের বল ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে এসে ধোঁকা খান সাকিব। ফলে স্টাম্পড হয়ে যান তিনি। দুই বল পর এই প্যাটেলের বলে বোল্ড হয়ে ক্রিজ ছাড়েন মুশফিক।
পরপর দুই উইকেট হারিয়ে অস্বস্তিতে পড়া বাংলাদেশকে তুলে আনার মিশনে মাঠে নামেন মাহমুদুল্লাহ। অপর প্রান্ত আগলে রেখে যোগ্য সঙ্গ দেন নাঈম। এই দুজনের জুটি ভাঙে ধৈর্য হারানোর কারণে।
জয়ের জন্য সহজ অবস্থানে থাকার পরও ঝুঁকি নিয়ে রান নিতে গিয়ে রানআউট হন নাঈম। তার আগে তিনি খেলেন ৩৫ বলে ২৯ রানের এক ইনিংস।
বাকি কাজটা সারেন দলপতি রিয়াদ ও আফিফ হোসেন মিলে। পাঁচ বল বাকি থাকতে ছয় উইকেটে জিতে সিরিজ নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন এই দুই ব্যাটসম্যান।
এর আগে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে নাসুম-মুস্তাফিজের বোলিং তোপে মাত্র ৯৩ রানেই গুটিয়ে গিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। চতুর্থ ম্যাচের আগে নিউজিল্যান্ডের কোচ গ্লেন পকনেল জানিয়েছিলেন আগুনের জবাব আগুন দিয়েই দেবে নিউজিল্যান্ড। বাংলাদেশের আক্রমণে পাল্টা আক্রমণ করার ঘোষণা দিয়ে রাখেন নিউজিল্যান্ড কোচ।
ম্যাচে সেই আগুনে নিজেরাই পুড়ল ব্ল্যাকক্যাপস। অতিরিক্ত শট ও আগ্রাসী ব্যাট করতে গিয়ে এক শর নিচে অলআউট হয়ে যায় সফরকারী দল। একমাত্র প্রতিরোধ গড়েন উইল ইয়ং।
নাসুম আহমেদ শুরু করেন ধ্বসংযজ্ঞ, শেষ করেন মুস্তাফিজ। দুজনে চারটি করে মোট আট উইকেট তুলে নেন নিউজিল্যান্ডের। বাকি দুই উইকেটের একটি সাইফউদ্দিনের, আরেকটি মাহেদী হাসানের।
৫৯৯ আন্তর্জাতিক উইকেট নিয়ে ম্যাচ শুরু করা সাকিব আল হাসান টানা দ্বিতীয় ম্যাচে উইকেটশূন্য থাকেন।
ফিন অ্যালেনের ১২, টম লেইথামের ২১ ও ইয়ংয়ের ৪৬ ছাড়া বাকিরা ছিলেন এক অঙ্কের রানে।
বাংলাদেশি স্পিনার ও মুস্তাফিজের স্লোয়ার ও ভ্যারিয়েশনের কোনো জবাব দিতে পারেনি নিউজিল্যান্ড।
১৯.৩ ওভারে ৯৩ রানে অলআউট হয়ে যায় তারা। টানা তৃতীয় সিরিজ জিততে বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৯৪।
নাসুম ১০ রানে ও মুস্তাফিজ ১২ রানে চারটি করে উইকেট নেন।