মেসিকে বাদ দিলে বার্সার নতুন দলটাকে আগের মতো ভয় পাচ্ছে না প্রতিপক্ষ এমনটা স্বীকার করে নেন রোনাল্ড কুমান।
প্রায় দেড় যুগের সম্পর্ক ছিন্ন করে বার্সেলোনা ছেড়ে প্যারিসে পাড়ি জমিয়েছেন লিওনেল মেসি। বিশ্বের সেরা ফুটবলারকে দলে নিয়ে প্যারিস সেন্ট জার্মেই (পিএসজি) নিজেদের শক্তিশালী করেছে। অন্যদিকে, মেসি দল ছাড়ায় এখন অনেকটাই প্রাণহীন বার্সা।মেসিকে ছাড়া কোন কৌশলে এগোচ্ছে স্প্যানিশ জায়ান্টরা এটাই দেখছে কাতালান সমর্থকরা।লিগের প্রথম ম্যাচে রিয়াল সোসিয়েদাদের বিপক্ষে ৪-২ গোলে জয়ে মিশন শুরু করে বার্সা। এই ম্যাচে প্রায় ১৭ বছর পর মেসিযুগ শেষে নতুন বার্সেলোনার দেখা মেলে।মিশনের শুরুটা দারুণ হলেও দ্বিতীয় ম্যাচে হোঁচট খায় রোনাল্ড কুমানের দল। কঠিন প্রতিপক্ষ আথলেতিক বিলবাওয়র বিপক্ষে এক রকম হাফ ছেড়ে বাঁচেন পিকে-মেম্ফিসরা। বিলবাও থেকে ১-১ গোলে ড্রয়ের স্বস্তি নিয়ে ফেরে ব্লুগ্রানা । কিন্তু ম্যাচে গোল স্কোরিংয়ের অনেক সুযোগ হাতছাড়া করে কুমানের ফ্রন্টলাইন।তৃতীয় ম্যাচে সহজ প্রতিপক্ষ হেতাফের বিপক্ষে তৃতীয় ম্যাচে নামে বার্সেলোনা। ছোট দলের বিপক্ষেও বেশ ঘাম ঝড়াতে হয় মেসিবিহীন বার্সার আক্রমণভাগকে। ২-১ ব্যবধানে কষ্টের জয়ে মাঠ ছাড়ে কুমানের বাহিনী।এই ম্যাচের পরিসংখ্যান বিবেচনায় আনলে দেখা যায় ৬৭ শতাংশ বল দখলে রেখেও হেতাফের গোলবারে বার্সা শট নিতে পেরেছে মাত্র ৭টি। যেখানে প্রতিপক্ষ হেতাফে শট নিয়েছে বার্সেলোনার চেয়ে বেশি। সবমিলে তারা শট নেয় ৮টি।আগের মৌসুমে হেতাফের বিপক্ষে ঘরের মাঠে ৫-২ গোলে জিতেছিল বার্সা। সেই ম্যাচে মেসির জোড়া গোলের দিনে হেতাফের গোলবারে কাতালানরা শট নেয় ৯টি। যেখানে প্রতিপক্ষের শট ছিল ৫টি।মেসিকে বাদ দিলে বার্সার নতুন দলটাকে আগের মতো ভয় পাচ্ছে না প্রতিপক্ষ এমনটা স্বীকার করে নেন রোনাল্ড কুমান।সাংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘মেসি যতদিন আমাদের দলে ছিল, ততদিন বিপক্ষ দল আমাদের ভয় পেত। একই কথা বারবার বলতে চাই না, কিন্তু আমরা বিশ্বের সেরা ফুটবলারের বিষয়ে কথা বলছি। মেসি দলে থাকলে বিপক্ষ দল সবসময় ভয়ে থাকে। ওর অভাব বোধ করছি আমরা। সবাই সেটা জানি কিন্তু কিছু করার নেই।’মেসির দল বদলের বছরে বার্সেলোনায় যোগ দিয়েছেন তারই আর্জেন্টাইন সতীর্থ সার্হিও আগুয়েরো। ২০২১/২২ মৌসুমে আগুয়েরো ছাড়াও ম্যান সিটি থেকে আসা এরিক গার্সিয়া ও অলিম্পিক লিঁওর মেম্ফিস ডিপায়ের অন্তর্ভুক্তি দলকে নতুন অনুপ্রেরণা দিচ্ছে।তবে আঁতোয়া গ্রিজমানের চলে যাওয়া দলকে কিছুটা হলেও বিপদে ফেলেছে। ২০১৯ সালে বার্সেলোনায় যোগ দেয়ার আগে আতলেতিকো মাদ্রিদের হয়ে ২৫৭ ম্যাচে ১৩৩ গোল করেন গ্রিজ্জি। সে তুলনায় বিবর্ণ ছিলেন বার্সায়। ১০২ ম্যাচ খেলে গোল করেছেন মাত্র ৩৫টি। জিতেছেন শুধু কোপা দেল রে।এছাড়াও দলবদলের শেষ দিনে ব্রাজিলিয়ান রাইট ব্যাক রয়্যাল এমারসনকে টটেনহ্যাম হটস্পার ও ইলাইশ মোরিবাকে আরবি লাইপসিগের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে বার্সেলোনা। এতে করে কোচ রোনাল্ড কুমানের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে দলের আক্রমণ ভাগ সাজানো।এই দুশ্চিন্তার মেঘ সরে যেতে পারে কিছু খেলোয়াড়ের ধারাবাহিকতায়। বিশেষ করে দলে ইনজুরি থেকে ফিরছেন আনসু ফাতি। নিয়মিত হতে পারেন ফিলিপে কোতিনিয়ো ও উসমান ডেম্বেলে। মৌসুমের শুরু থেকে ফর্মে আছেন ডিপায়। তাদেরকে নিয়ে আক্রমণভাগ চাঙা করার সুযোগ থাকছে কুমানের হাতে।তবে, ডেম্বেলে ও ফাতির অতীত অভিজ্ঞতা ভয়ের কারণ হতে পারে। কেননা ইনজুরিপ্রবণ এই দুই খেলোয়াড় নিয়মিত হবেন কিনা তা সময়েই বলে দেবে। সঙ্গে নতুন বার্সার নতুন কৌশলে কতটুকু কার্যকরী হবে তার কঠিন পরীক্ষা হতে পারে বড় ম্যাচগুলোতে।