‘ল্যান্ডস্লাইড ইনভেন্টরি অ্যাপ’ উদ্বোধন ও সেক্টরভিত্তিক আগাম সতর্কতা বার্তাবিষয়ক জাতীয় পর্যায়ে পরামর্শ সভা’ আয়োজন করেছে সেভ দ্য চিলড্রেন ও রাইমস। গতকাল রবিবার (১৩ জুলাই) গুলশানের একটি হোটেলে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর (বিএমডি), সরকারি প্রতিনিধি, কারিগরি বিশেষজ্ঞ, সংশ্লিষ্ট খাতের অংশীজন এবং অ্যান্টিসিপেটরি অ্যাকশন টেকনিক্যাল ওয়ার্কিং গ্রুপের সঙ্গে সমন্বয়ে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশে প্রতি বছর গড়ে ১৯টি ভূমিধস ঘটে এবং এ ধরনের দুর্যোগের ঘটনা প্রতি বছর প্রায় ৪ শতাংশ হারে বাড়ছে। অতিবৃষ্টি, দ্রুত নগরায়ন, বন উজাড় ও অপরিকল্পিত পাহাড় কাটার কারণে চট্টগ্রাম পার্বত্য অঞ্চল ও আশপাশের জেলাগুলোতে এসব ঘটনা বেশি ঘটে। ২০০০ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৭০০ জনেরও বেশি মানুষ এ ধরনের দুর্যোগে প্রাণ হারিয়েছেন, অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং অনেক মানুষ স্থায়ীভাবে বাস্তুচ্যুতি পরিস্থিতির শিকার হয়েছে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহায়তায়, ইউরোপীয় সিভিল প্রোটেকশন অ্যান্ড হিউম্যানিটারিয়ান এইড এবং জার্মান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে এ উদ্যোগটি নেওয়া হয়েছে। এই মোবাইল এ্যাপটি এটি সরকারের অনুমোদিত ‘ন্যাশনাল আর্লি ওয়ার্নিং রোডম্যাপ’-এর পিলার ২: “ঝুঁকি সম্পর্কিত তথ্য ও আগাম সতর্কতা” অংশের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, যা বাংলাদেশের ভূমিধসপ্রবণ এলাকায় পূর্বাভাস- ভিত্তিক পদক্ষেপ ও আগাম সতর্কতা সংক্রান্ত তথ্য উন্নয়নে সহায়তা করবে।
অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘ল্যান্ডস্লাইড ইনভেন্টরি অ্যাপ’ উদ্বোধন করা হয়, যা ভূমিধস সংক্রান্ত রিয়েল-টাইম তথ্য সরবরাহ করবে। সেভ দ্য চিলড্রেন ও রাইমস ইতোমধ্যে ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের এ অ্যাপ ব্যবহারের প্রশিক্ষণ দিয়েছে, যেন ভূমিধসের পরবর্তী সময়ে ক্ষয়ক্ষতিসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য তুলে সংগ্রহ করতে পারে। ইতোমধ্যে গত ২৯-৩০ জুন ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সংগঠিত ভূমিধসের তথ্য জাতীয় তথ্য ভাণ্ডারে পরীক্ষামূলকভাবে সংযুক্ত হয়েছে।
এই অনুষ্ঠানটি সংশ্লিষ্ট সব অংশীজন শিক্ষাখাত, সরকারি মন্ত্রণালয় ও অন্যান্য খাতের প্রতিনিধিদের একত্রিত করে সেক্টরভিত্তিক আগাম সতর্কতা বার্তা প্রণয়ণ ও যাচাই করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে। এর মাধ্যমে ভূমিধস ঝুঁকি মোকাবিলায় প্রতিষ্ঠানগত সমন্বয় ও প্রস্তুতি আরও জোরদার করার ওপর প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।
সেভ দ্য চিল্ড্রেন-এর এই প্রকল্পের আওতায় স্থানীয় প্রশাসন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যের মাধ্যমে বান্দরবন ও চট্টগ্রামে পূর্বাভাসভিত্তিক আগাম কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের মহাপরিচালক মহাপরিচালক রেজওয়ানুর রহমান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে শুরু করে তৃণমূল ওয়ার্ড পর্যায় পর্যন্ত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি রয়েছে। তারা দুর্যোগের সময় একত্রিত হয়ে প্রস্তুতিমূলক কাজ করে। তাদের কাজগুলো আরও গতিশীল করতে ল্যান্ডস্লাইড অ্যাপ-এর মতো কার্যকরী যেকোনও ধরনের সহায়তা বা সরবরাহ আমাদের নিশ্চিত করতে হবে।