বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

চেহারা দেখে বায়োডাটা বলে দিতে পারে কুমিল্লার ‘নিকো’

  •    
  • ৬ ডিসেম্বর, ২০২২ ১৯:৪৯

টিম লিডার সঞ্জিত মণ্ডল বলেন, ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন এই রোবট ছবিতে যে কারও চেহারা দেখেই তার বায়োডাটা বলে দিতে পারে। যেকোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে।’

দেশের সর্বাধুনিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন রোবট তৈরি হলো কুমিল্লায়। দীর্ঘ এক বছর গবেষণার পর রোবটটি তৈরি করেছে কোয়ান্টা রোবটিক্স টিম। রোবটটির নাম দেয়া হয়েছে নিকো।

জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থী রোবটটি তৈরি করেছেন। তারা হলেন পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের দশম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও টিম লিডার সঞ্জিত মণ্ডল, আইসিটি বিভাগের ত্রয়োদশ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও হেড প্রোগ্রামার জুয়েল নাথ, আইসিটি বিভাগের দ্বাদশ ব্যাচের শিক্ষার্থী তৌসিফ বিন পারভেজ ও একই বিভাগের চতুর্দশ ব্যাচের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন খান মাহি।

কোয়ান্টা রোবটিক্স টিম জানায়, তাদের তৈরি রোবটটির ভার্সন ১.০, স্পিড ১.৫ গিগাহার্জ, সিক্সটি ফোর বিট কোয়াড-কোর এআরএম প্রসেসর, ৮ গিগাবাইট র‌্যাম, ১২০ গিগাবাইট রম। ২৯টি শক্তিশালী সার্ভো মোটর ব্যবহার করা হয়েছে রোবটটির বিভিন্ন বডি পার্টস মুভমেন্টের জন্য। চলার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে উচ্চ টর্কের ডিসি মোটর। পরিচালনা করার জন্য রয়েছে সেভেন ইঞ্চি রাসবেরি পাই টাচ ডিসপ্লে।

এটিকে দেশে তৈরি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সবচেয়ে অ্যাডভান্স রোবট হিসেবে দাবি করেন নির্মাতারা। কোনো তার সংযোগ ছাড়া শুধু কথা বলেই এটিকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

টিম লিডার সঞ্জিত মণ্ডল বলেন, ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন এই রোবট ছবিতে যে কারও চেহারা দেখেই তার বায়োডাটা বলে দিতে পারে। যেকোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে।’

নির্মাণব্যয় ৪ লাখ টাকা উল্লেখ করে সঞ্জিত দাবি করেন, রোবটটিকে কর্মক্ষেত্রে যেকোনো কাজে ব্যবহার করা যাবে। মানুষের মতোই নানা কাজ করতে সক্ষম এই রোবট। আর একবার চার্জ দিয়ে এটিকে প্রায় সাড়ে ৬ ঘণ্টা সচল রাখা যাবে।

সঞ্জিত বলেন, ‘আমাদের টিম কোয়ান্টা রোবটিক্স এর আগে আরও দুটি রোবট তৈরি করেছিল। নিকো আমাদের তৈরি তৃতীয় রোবট। এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে অ্যাডভান্সড রোবট। এর আগে বাংলাদেশে কখনোই ফুল থ্রিডি প্রিন্টেড রাসবেরি পাই বেইস কোনো রোবট তৈরি হয়নি।’

কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের ফ্যাব ল্যাবে তৈরি করা হয়েছে রোবটটি। সেখানেই মঙ্গলবার বেলা ১১টায় রোবটটির উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান।

তিনি বলেন, ‘আমি কুমিল্লায় জেলা প্রশাসক হিসেবে যোগদানের পর থেকে একটা বিষয় মাথায় কাজ করছিল, চতুর্থ শিল্পবিপ্লব। প্রযুক্তিজ্ঞান ছাড়া এই বিপ্লবে শামিল হওয়া সম্ভব নয়। আগামী প্রজন্মকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমুখী করতে কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আমরা ফ্যাব ল্যাব তৈরি করেছি। এখানে যে কেউ গবেষণা করতে পারেন।

‘এ ছাড়াও একটি রোবটিকস স্কুল নির্মাণ করেছি। যার নাম দিয়েছি স্কুল অব রোবটিকস। জেলার প্রত্যেকটি উপজেলায় শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব তৈরি তৈরি করেছি। কুমিল্লার বর্তমান প্রজন্ম প্রযুক্তি শিক্ষায় দারুণ আগ্রহ দেখাচ্ছে। এর ধারাবাহিকতা অক্ষুন্ন থাকলে কুমিল্লাসহ পুরো দেশের মানুষ উপকৃত হবে।’

কুমিল্লা কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের ক্যাম্পাসেই চালু হয়েছে স্কুল অব রোবটিক্স। অধ্যক্ষ নার্গিস আক্তার নিজ প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি এটিরও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন। বর্তমানে স্কুলটিতে বিভিন্ন বয়সী দুই শতাধিক শিক্ষার্থী নিয়মিত ক্লাস করেন। সপ্তাহে শুক্র, শনি ও মঙ্গলবার বিকেল ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলে এ ক্লাস।

অধ্যক্ষ নার্গিস আক্তার বলেন, ‘শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সাউথ ইস্ট, ডেফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করা শিক্ষার্থীরা এখানে শিক্ষক হিসেবে নিয়োজিত। আর তৃতীয় শ্রেণি থেকে ৫০ বছর বয়সী শিক্ষার্থীরাও এখানে ক্লাস করেন।’

এ বিভাগের আরো খবর