বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

প্লাস্টিক-পলিথিনকে জ্বালানিতে রূপান্তর!

  •    
  • ১৮ নভেম্বর, ২০২২ ১১:৩৬

গবেষক মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘এই জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যেতে পারে। সরকারের কাছ থেকে গবেষণার জন্য বড় আকারের তহবিল পেলে বড় আকারে উৎপাদনের জন্য একটি প্লাস্টিক রিসাইক্লিং প্ল্যান্ট স্থাপন করতে পারব।’

প্লাস্টিক-পলিথিন থেকে তেল-গ্যাস উৎপাদনের পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন বলে দাবি করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহমুদুর রহমান।

স্বল্প খরচে মাটি দিয়ে অনুঘটকের মাধ্যমে পাইরোলাইসিস পদ্ধতিতে প্লাস্টিক ও পলিথিন থেকে জ্বালানি তেল ও গ্যাস উৎপন্ন করতে সফল হয়েছেন তিনি। পরিবেশ দূষণকারী বর্জ্য প্লাস্টিককে তরল জ্বালানিতে রূপান্তরের গবেষণা প্রকল্পের অংশ হিসেবে গবেষণায় তিনি এই সাফল্য পেয়েছেন।

গবেষণা প্রকল্পের তত্ত্বাবধায়ক রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহমুদুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ক্যাটালিস্ট বা অনুঘটকের মাধ্যমে পাইরোলাইসিস পদ্ধতিতে প্লাস্টিক ও পলিথিন থেকে জ্বালানি তেল ও গ্যাস উৎপন্ন হয়। প্রথমে মাটি থেকে সিলিকা অ্যালুমিনা ভেঙে ক্যাটালিস্ট তৈরি করা হয়েছে। সেই ক্যাটালিস্ট দিয়ে প্লাস্টিককে ভেঙে ডিজেল, পেট্রল, কেরোসিন জাতীয় জ্বালানি তেল তৈরি করেছি। এই জ্বালানি তেল দিয়ে ছোট ও মাঝারি নৌকার ইঞ্জিনও চালনা করা সম্ভব। এ ছাড়া জেনারেটরের মাধ্যমে এ জ্বালানি দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব।’

প্লাস্টিক ও পলিথিন থেকে জ্বালানি তেল ও গ্যাস উৎপন্ন করতে সফল হয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহমুদুর রহমান। ছবি কোলাজ: নিউজবাংলা

তিনি বলেন, ‘আমাদের চারপাশে অনেক প্লাস্টিক বর্জ্য পড়ে থাকে। এসব পরিবেশের জন্য হুমকি এবং মাটির উর্বরতা নষ্ট করে। এই প্লাস্টিক পলিথিন ধুয়ে পরিষ্কার করে জ্বালানি উৎপাদনের উপযোগী করা সম্ভব। মাটি ও প্লাস্টিক দুটি উপাদানই আমাদের হাতের কাছে পাওয়া যায়। এতে করে খুব অল্প খরচে সরকার চাইলে জ্বালানি সংকটের এই সময়ে তেল উৎপাদন করতে পারবে।’

মাহমুদুর রহমান আরও বলেন, ‘এই জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যেতে পারে। কারণ জ্বালানির বেশির ভাগ অংশ ডিজেল, পেট্রল ও কেরোসিন থেকে আসে। সরকারের কাছ থেকে গবেষণার জন্য বড় আকারের তহবিল পেলে বড় আকারে উৎপাদনের জন্য একটি প্লাস্টিক রিসাইক্লিং প্ল্যান্ট স্থাপন করতে পারব। আমাদের দেশে প্রচুর পরিমাণে একক ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক-পলিথিন রয়েছে। ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদী এবং অন্যান্য নদী ও খাল থেকে প্লাস্টিক সংগ্রহ করে তা ডিজেল, পেট্রল ও কেরোসিনে রূপান্তরিত করা যাবে। সেই সঙ্গে পরিবেশের ওপর বর্জ্যের প্রভাবও কমে যাবে।’

এই প্রকল্পের মাধ্যমে দেশে একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনা যাবে বলে দাবি গবেষকদের। বর্তমানে প্লাস্টিক দূষণ একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই প্রকল্পের মাধমে দূষণ কাটিয়ে বর্জ্য প্লাস্টিককে জ্বালানিতে রূপান্তর করে এর সংকটও মোকাবেলা করা যাবে। এই জ্বালানিকে বাণিজ্যিকভাবেও উৎপাদন করা যাবে বলে জানান এই অধ্যাপক।

গবেষণা প্রকল্পটির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে তিনি বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের ল্যাবে এসব পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হয়েছে। পরবর্তী সময়ে তহবিল বা বাজেট পেলে বড় আকারে গবেষণা করার চেষ্টা করব।’

গবেষণা প্রকল্পটি ‘ইউরোপিয়ান জার্নাল অফ ইনঅর্গানিক কেমিস্ট্রি, ওয়াইলি’ নামের একটি বিখ্যাত আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। এই গবেষণার মূল উদ্দেশ্য ছিল একক ব্যবহারের বর্জ্য পলিথিনকে জ্বালানিতে রূপান্তর করে পরিবেশ রক্ষা করা।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অর্থায়নে এই গবেষণা প্রকল্পে বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. নাফীস আহমেদ, ড. জয়ন্ত কুমার সাহা এবং রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. সুব্রত চন্দ্র রায় সার্বিক সহযোগিতা করেছেন। এ ছাড়া একই বিভাগের শিক্ষার্থী মো. আরিফুল রহমান ও জুনায়েদ মাহমুদ শুভ গবেষণায় সহযোগী হিসেবে কাজ করেছেন।

এ বিভাগের আরো খবর