বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নাক দিয়েও দেখতে পায় কুকুর

  •    
  • ২৯ অক্টোবর, ২০২২ ১৭:১৩

গবেষকেরা বলছেন, কোনো কিছু দেখার জন্য কুকুর তার দৃষ্টি ও ঘ্রাণশক্তি দুটিকেই কাজে লাগায়। তবে দুটি ইন্দ্রিয় ঠিক কীভাবে একযোগে কাজ করে সেটি বুঝতে আরও অনুসন্ধান প্রয়োজন।  

ঘ্রাণের সাহায্যে বিশেষ কোনো বস্তু শনাক্ত বা অনুসরণ করায় কুকুরের দক্ষতার কথা সবার জানা। তবে নতুন তথ্য হলো, কুকুর তার নাককে কেবল ঘ্রাণ নেয়ার কাজেই ব্যবহার করে না, এটি তাকে দেখতেও সাহায্য করে!

অবাক হওয়ার কিছু নেই, সাম্প্রতিক এক গবেষণাতেই বেরিয়ে এসেছে এমন তথ্য। এতে দেখা গেছে, মস্তিষ্কের বিশেষ গঠন কুকুরকে চোখের পাশাপাশি নাকের সাহায্যেও দেখার শক্তি দিয়েছে।

জার্নাল অফ নিউরোসায়েন্স-এ চলতি অক্টোবরে প্রকাশিত হয়েছে গবেষণা নিবন্ধটি। কুকুরের মস্তিষ্কে দৃষ্টি ও ঘ্রাণশক্তি সমন্বয়ের যে ব্যবস্থাপনা রয়েছে, সেটি এখন পর্যন্ত আর কোনো প্রাণীর মস্তিষ্কে দেখা যায়নি।

যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল ইউনিভার্সিটির কলেজ অফ ভেটেরিনারি মেডিসিনের সহযোগী অধ্যাপক এবং গবেষণাপত্রের জ্যেষ্ঠ লেখক ভেটেরিনারি নিউরোলজিস্ট ফিলিপা জনসন বলছেন, ‘এই গবেষণার সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হলো কুকুরের নাক থেকে অক্সিপিটাল লোব পর্যন্ত সংযোগ খুঁজে পাওয়া গেছে, আর মাথার পেছনের দিকের এই অক্সিপিটাল লোবেই দৃশ্যমানতাকে বিশ্লেষণে সক্ষম ভিজ্যুয়াল কর্টেক্সের অবস্থান।’

ফিলিপা জনসন ও তার সহকর্মীরা ২৩টি কুকুরের মস্তিষ্কের এমআরআই স্ক্যান বিশ্লেষণ করেছেন। এতে দেখা গেছে, এদের মস্তিষ্কে গন্ধ বিশ্লেষণের জন্য নির্ধারিত অঞ্চল অলফ্যাক্টরি বাল্বের সঙ্গে অক্সিপিটাল লোবেরও স্নায়বিক সংযোগ রয়েছে। মানুষের মতো প্রাণী যারা যারা কোনো কিছু দেখার জন্য প্রধানত দৃষ্টিশক্তির ওপর নির্ভর করে, তাদের মস্তিষ্কের গঠন এমন নয়।

গবেষক দলটি বলছে, এই আবিষ্কার প্রমাণ করছে কোনো কিছু দেখার জন্য কুকুর তার দৃষ্টি ও ঘ্রাণশক্তি দুটিকেই কাজে লাগায়। তবে দুটি ইন্দ্রিয় ঠিক কীভাবে একযোগে কাজ করে সেটি বুঝতে আরও গবেষণা প্রয়োজন।

ফিলিপা বলেন, ‘কুকুরের ভিজ্যুয়াল কর্টেক্সে ঘ্রাণ একটি বড় ভূমিকা রাখে, তবে এটি ঠিক কীভাবে কুকুরের দৃষ্টিশক্তিতে সাহায্য করে তা বের করা বেশ কঠিন। তবে আমি মনে করি এরা কোনো বস্তুকে খুঁজে বের করতে ঘ্রাণকে ব্যবহার করতে পারে।’

এর ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘মানুষ কোনো ঘরে প্রবেশের পর সেখানে কে আছে বা কী আসবাব রয়েছে তা নির্ধারণে প্রাথমিকভাবে দৃষ্টিশক্তি ব্যবহার করে। অন্যদিকে কুকুর পরিবেশের ব্যাখ্যায় ঘ্রাণকে দৃষ্টির সঙ্গে একীভূত করে বলে মনে হয়।’

এর ফলে দৃষ্টিশক্তি হারানো কুকুরের জন্যও কোনো বস্তুকে খুঁজে বের করা কঠিন কোনো কাজ নয়।

ফিলিপা বলেন, ‘হাসপাতালের একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞ আমাদের বলেছেন, কিছু কুকুর মালিক তাদের কুকুর নিয়ে আসেন, যেগুলো পুরোপুরি অন্ধ। তবে মালিকরা এ কথা একদম বিশ্বাস করতে পারেন না। অন্ধ কুকুর সম্পূর্ণ স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে সক্ষম। তারা মালিকদের সঙ্গে খেলা করে এবং কোনো কিছুর সঙ্গে ধাক্কা না খেয়ে স্বাভাবিক চলাচল করতে পারে।'

ফিলিপা ও তার সহকর্মীরা ভবিষ্যতে বিড়াল ও ঘোড়ার মতো প্রাণীদের মস্তিষ্ক পরীক্ষার পরিকল্পনা করছেন। এসব প্রাণীও গন্ধের ওপর নির্ভর করে অনেক কাজ করতে সক্ষম।

কুকুরের ঘ্রাণশক্তি মানুষের তুলনায় অনেক বেশি উন্নত। কুকুরের মস্তিষ্কে ঘ্রাণশক্তি বিশ্লেষণের বাল্ব মানুষের মস্তিষ্কের তুলনায় প্রায় ৩০ গুণ বড়। কুকুরের নাকে ১০০ কোটি পর্যন্ত গন্ধ রিসেপ্টর থাকে, যেখানে মানুষের আছে ৫০ লাখ রিসেপ্টর।

এ বিভাগের আরো খবর