টুইটার কিনতে চেয়েও পরে অস্বীকার করায় আদালতে দায়ের করা মামলায় লড়তে হচ্ছে ইলন মাস্ককে। সেই মামলার পরবর্তী শুনানি যখন আরও কয়েক সপ্তাহ পরে, তখনই আগের দামেই টুইটার কেনার প্রস্তাব আবারও দিলেন টেসলা-স্পেসএক্সের মালিক।
সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে দেয়া এক ফাইলিং-এ ইলন মাস্ক বলেছেন, এরই মধ্যে তিনি আগের চুক্তিকে সম্মান করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে টুইটারকে চিঠি পাঠিয়েছেন।
এ ঘটনার পর এরই মধ্যে টুইটারের শেয়ারের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি বেড়েছে টেসলার শেয়ারের দামও।
ইলন মাস্কের এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে রিচমন্ড ইউনিভার্সিটির আইনের অধ্যাপক কার্ল টোবিয়াস এএফপিকে বলেছেন, ‘আমি মনে করি, মাস্ক বুঝতে পেরেছিলেন যে তিনি সেই বিচারে জয়ী হবেন না।’
এর আগে চলতি বছরের ৪ এপ্রিল জানা যায়, টুইটারের প্রায় ৯.২ শতাংশ শেয়ারের মালিক ইলন মাস্ক। যার জন্য তিনি খরচ করেছেন ২.৪ বিলিয়ন ডলার। যদিও সে সময় একক মালিক হিসেবে প্রতিষ্ঠানটির সবচেয়ে বেশি শেয়ারের মালিক হলেও ১০ এপ্রিল টুইটার বোর্ডের মিটিংয়ে যোগ দিতে অস্বীকার করেন। পরে তিনি তার পরিকল্পনা স্পষ্ট করেন যে তিনি আসলে পুরো টুইটারই চান।১৪ এপ্রিলে ইলন মাস্ক টুইটারের বাকি শেয়ারগুলোর প্রতিটি ৫৪.২০ ডলারে কিনে নেয়ার প্রস্তাব দেন, যা আগের কেনা ৯.২ শতাংশ শেয়ারের থেকে ৩৮ শতাংশ বেশি।
ইলন মাস্কের বক্তব্য ছিল কার্যকর গণতন্ত্রের জন্য বাকস্বাধীনতা একটি সামাজিক বাধ্যবাধকতা। বর্তমান কাঠামোতে টুইটার তা দিতে পারবে না।
পরে তিনি ‘সেরা ও চূড়ান্ত’ প্রস্তাব হিসেবে ৪৪ বিলিয়ন ডলারে কোম্পানিটিকে ব্যক্তিগতভাবে কিনে ফেলার প্রস্তাব দেন। টুইটার কর্তৃপক্ষও তার প্রস্তাবে রাজি হয়।
কিন্তু পরে নিজের অবস্থান থেকে সরে আসেন মাস্ক। টুইটার কেনার প্রক্রিয়া স্থগিত করে দেন তিনি। অভিযোগ আনেন, টুইটারে অধিকসংখ্যক বট প্রোফাইল থাকার।
তিনি জানিয়েছিলেন মাইক্রোব্লগিং সাইট টুইটারের স্প্যাম এবং ভুয়া অ্যাকাউন্ট নিয়ে সর্বশেষ তথ্যের নির্ভরযোগ্যতা যাচাইয়ের জন্য অপেক্ষা করবেন মাস্ক।
তিনি বলেছিলেন যে, টুইটারের দৈনিক সক্রিয় ব্যবহারকারীর ৫ শতাংশ স্প্যাম অ্যাকাউন্ট।
মাস্কের পক্ষ থেকে সে সময় তার আইনজীবী বলেছিলেন, টুইটার চুক্তির বাধ্যবাধকতা মেনে চলেনি। মাস্কের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা চুক্তির জন্য প্রাসঙ্গিক ব্যাবসায়িক তথ্য তারা সরবরাহ করেনি। কখনো কখনো মাস্কের অনুরোধ তারা উপেক্ষা করেছে এবং কখনো অযৌক্তিক বলে সেগুলো সরবরাহের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে।
ইলন মাস্কের এই চিঠির বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর টুইটারের শেয়ারের দাম ৬ শতাংশ কমে গিয়েছিল।
এর আগে কানাডার ভ্যাঙ্কুভারে টেডের এক সাক্ষাৎকারে দেয়া বক্তব্যে মাস্ক জানান, টুইটার থেকে আয়ের কোনো লক্ষ্য নেই তার। বিশ্বব্যাপী সর্বজনীন বাকস্বাধীনতাই তার লক্ষ্য। এমনকি টুইটারের অভ্যন্তরীণ সব কিছু একজন ব্যবহারকারী যাতে জানতে পারে, তার জন্য টুইটারের অ্যালগরিদমও উন্মুক্ত করে দিতে চান তিনি।