নিয়ন্ত্রণ হারানো চীনা রকেট ‘লং মার্চ ৫ বি’র ধ্বংসাবশেষ পড়ল ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরে।
স্পেস স্টেশন তৈরির জন্য সামগ্রী বহন করা ওই রকেটটির ধ্বংসাবশেষ পৃথিবীতে ফিরে আসার তথ্য যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
চীনের মহাকাশ সংস্থা বলছে, এই রকেটের বেশির ভাগ অবশিষ্টাংশ বায়ুমণ্ডলে পুড়ে গেছে। কিছু অংশ পড়েছে প্রশান্ত মহাসাগরের সুলু সাগরে।
এর আগে অবশ্য মহাকাশ গবেষকরা জানিয়েছিলেন, জনবসতিপূর্ণ কোনো এলাকায় লং মার্চ ৫ বি'র পড়ার সম্ভাবনা খুবই কম।
অনিয়ন্ত্রিতভাবে পৃথিবীর বুকে রকেট ধসে পড়ার এ ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। মানবজীবনের নিরাপত্তা নিয়ে কথা বলেছেন সংশ্লিষ্টরা।
আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী, পৃথিবীতে পুনঃপ্রবেশের পর ছোট ছোট টুকরায় বিভক্ত করার জন্য রকেটগুলোকে ডিজাইন করতে চীনা মহাকাশ সংস্থার কাছে দাবি জানিয়েছিল নাসাা। তবে এ নিয়ে পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ সংস্থার এক টুইট বার্তায় বলা হয়েছে, শনিবার সকাল পৌনে ১১টার দিকে ভারত মহাসাগরের ওপর পুনরায় প্রবেশ করেছে চীনের এই রকেটের ধ্বংসাবশেষ।
নাসার প্রশাসক বিল নেলসন বলেন, ধ্বংসাবশেষের সম্ভাব্য ঝুঁকি নির্ণয়ে আগাম তথ্য জানানো উচিত মহাকাশযান পাঠানো দেশগুলোকে।
চলতি সপ্তাহেই বিশ্লেষকরা ওই রকেটের ধ্বংসাবশেষ নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন। তারা জানান, ধ্বংসাবশেষ বায়ুমণ্ডলে মিলে যাবে। তবে কিছু এলাকায় এগুলো অগ্নিবৃষ্টির মতো পড়তে পারে।
সর্বশেষ চীনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নিবিড়ভাবে রকেটের ধ্বংসাবশেষের পথ অনুসরণ করা হবে। এতে ঝুঁকির কিছু নেই।
২০২২ সালের মধ্যে মহাকাশে চীনের প্রথম পূর্ণাঙ্গ স্টেশন চালুর লক্ষ্যে ২০২০ সালের এপ্রিলে রকেটটির মাধ্যমে তিয়ানহে মডিউল পাঠায় বেইজিং, যাতে নভোচারীদের থাকার ব্যবস্থা ছিল। বেইজিংয়ের উচ্চাভিলাষী মহাকাশ কর্মসূচির সবশেষ অগ্রগতি এটি।
তবে একপর্যায়ে এটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পৃথিবীর দিকে ফেরত আসতে শুরু করে। তখন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, রকেটটির মূল কাঠামো অনিয়ন্ত্রিত অবস্থায় পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। পৃথিবীতে আঘাত করার আগেই বায়ুমণ্ডলে এর অনেকটা অংশ পুড়ে যায়।
২০২০ সালের মে মাসে আইভোরি কোস্টে পতিত হয়েছিল লম্বায় ১০০ ফুট আর ২১ টন ওজনের এই রকেটের কিছু অংশ।