৪৪ বিলিয়ন ডলারে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সাইট টুইটার কেনার চুক্তি থেকে সরে আসায় মামলা হয়েছিল বিশ্বের শীর্ষ ধনী ও টেসলার সিইও ইলন মাস্কের নামে। এবার টুইটারের বিরুদ্ধেই পাল্টা মামলা করলেন তিনি।
স্থানীয় সময় শুক্রবার টুইটার কর্তৃপক্ষের নামে এই মামলা করা হয় বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম রয়টার্স।
অবশ্য মামলাটির বিষয়বস্তু এখনও প্রকাশ করা হয়নি। জনসম্মুখে আসেনি ১৬৪ পৃষ্ঠার ওই নথিও।
এনডিটিভি বলছে, আদালতের নিয়ম অনুযায়ী, এই মামলার নথির একটি সংশোধিত সংস্করণ প্রকাশ্যে আসতে পারে শিগিগরই।
ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে মামলায় যুক্তরাষ্ট্রের ডেলাওয়ার কোর্ট অফ চ্যান্সারির চ্যান্সেলর ক্যাথালিন ম্যাককরমিক ১৭ অক্টোবর থেকে পাঁচ দিনের বিচার শুরুর আদেশ দেয়ার কয়েক ঘণ্টা পর মাস্কের এই মামলা হলো।
মামলার ব্যাপারে তাৎক্ষণিকভাবে টুইটারের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য জানা যায়নি। বিস্তারিত জানাননি মাস্কও।
এর আগে গত ১২ জুলাই ইলন মাস্কের নামে মামলা করেন টুইটারের চেয়ারম্যান ব্রেট টেইলর। মামলায় চুক্তির শর্ত অমান্য করার অভিযোগ আনা হয় টেসলা ও স্পেসএক্সের মালিক ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে।
মামলায় চুক্তি অনুযায়ী টুইটারের প্রতিটি শেয়ার ৫৪ দশমিক ২০ ডলারে কিনে নিয়ে গোটা প্রতিষ্ঠানের একীভূতকরণ সম্পন্ন করতে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিকে বাধ্য করাতে ব্যবস্থা নেয়ার আবেদন করা হয় ডেলাওয়ার আদালতে।
এর দুই দিন আগে তার নামে মামলার প্রস্তুতির কথা শুনে মজা করে টুইট করেন টেক জায়ান্ট ধনকুবের ইলন মাস্ক।
নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টে একাধিক মিম টুইট করে রসিকতা করে মাস্ক বলেন, তারা আমাকে বটের (ভুয়া অ্যাকাউন্ট) তথ্য না দিয়ে টুইটার কিনতে বাধ্য করতে চাইছে। এটি খুবই হাস্যকর বিষয়।
গত ৮ জুলাই টুইটার কেনার জন্য ৪৪ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি বাতিল করেন মাস্ক।
এর আগে ৪ এপ্রিল জানা যায়, টুইটারের প্রায় ৯ দশমিক ২ শতাংশ শেয়ারের মালিক মাস্ক। এর জন্য তিনি খরচ করেছেন ২.৪ বিলিয়ন ডলার। সে সময় একক মালিক হিসেবে প্রতিষ্ঠানটির সবচেয়ে বেশি শেয়ারের মালিক হলেও ১০ এপ্রিল টুইটার বোর্ডের মিটিংয়ে যোগ দিতে অস্বীকার করেন তিনি।
পরে ইলন মাস্ক তার পরিকল্পনা স্পষ্ট করেন যে তিনি আসলে পুরো টুইটারই চান।
১৪ এপ্রিল ইলন মাস্ক টুইটারের বাকি শেয়ারগুলোর প্রতিটি ৫৪.২০ ডলারে কিনে নেয়ার প্রস্তাব দেন, যা আগের কেনা ৯.২ শতাংশ শেয়ারের থেকে ৩৮ শতাংশ বেশি।
টু্ইটার কেনার আগ্রহ প্রকাশ করলেও বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক এক পর্যায়ে জানান যে তিনি আর টুইটার কিনতে চান না।
মাস্কের পক্ষ থেকে তার আইনজীবী বলেন, টুইটার চুক্তির বাধ্যবাধকতা মেনে চলেনি। মাস্কের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা চুক্তির জন্য প্রাসঙ্গিক ব্যবসায়িক তথ্য তারা সরবরাহ করেনি। কখনো কখনো মাস্কের অনুরোধ তারা উপেক্ষা করেছে এবং কখনো অযৌক্তিক বলে সেগুলো সরবরাহের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে।
ইলন মাস্ক তখন জানান, মাইক্রোব্লগিং সাইট টুইটারের স্প্যাম ও ভুয়া অ্যাকাউন্ট নিয়ে সবশেষ তথ্যের নির্ভরযোগ্যতা যাচাইয়ের জন্য তিনি অপেক্ষা করবেন।