বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ১৮ নয়, সাড়ে ১২ কোটি

  •    
  • ২৮ জুলাই, ২০২২ ১৭:৪০

জনশুমারির প্রতিবেদন প্রকাশের পর থেকে ফেসবুকে একটি খবর ভাইরাল হতে থাকে যে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৮ কোটির বেশি। একই সঙ্গে প্রশ্ন ওঠে- ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ১৮ কোটি হলে দেশে মোট জনসংখ্যা কীভাবে সাড়ে ১৬ কোটি হয়!

প্রথম ডিজিটাল ‘জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২’-এর প্রাথমিক যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস), তাতে বলা হয়েছে দেশে এখন জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৫১ লাখ ৫৮ হাজার ৬১৬ জন।

জনশুমারির প্রতিবেদন প্রকাশের পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি খবর ভাইরাল হতে থাকে যে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৮ কোটির ওপরে। যদি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ১৮ কোটি হয়, তাহলে মানুষ কীভাবে সাড়ে ১৬ কোটি?

অনেকেই সেই খবর ও খবরের লিংকটি শেয়ার করছেন। সেখানে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারকে উদ্ধৃত করে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর হিসাব দেয়া হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হলে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যে খবরটি এখন ভাইরাল হচ্ছে, সেটি সে সময় মিসকোট করা হয়েছিল। ওই অনুষ্ঠানে আমি স্পষ্ট করে বলেছিলাম যে দেশে মোবাইল ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৮ কোটির ওপরে, ইন্টারনেট ব্যবহারকারী নয়।’

১৮ কোটি যদি মোবাইল ব্যবহারকারী হয়, তবে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা কত?

প্রতি মাসেই দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রকাশ করে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। সংস্থাটি মোবাইল ইন্টারনেট, আইএসপি ও পিএসটিএন ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রকাশ করে তাদের মাসিক প্রতিবেদনে।

গত মাস অর্থাৎ জুনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১২ কোটি ৬২ লাখ ১০ হাজার। তাদের মধ্যে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন ১১ কোটি ৫০ লাখ ৭০ হাজার এবং আইএসপি ও পিএসটিএন মিলিয়ে ১ কোটি ১১ লাখ ৪০ হাজার।

গত মে মাসে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ছিল ১২ কোটি ৫৫ লাখ ২০ হাজার।

সবশেষ ৯০ দিনের মধ্যে কোনো সিমে ইন্টারনেট অ্যাকটিভ করলে সেটিকে একটি ইউনিক গ্রাহক হিসেবে বিবেচনা করে বিটিআরসি। একইভাবে আইএসপি ও পিএসটিএনের প্রতিটি সংযোগকে একটি ইউনিক গ্রাহক ধরে সংস্থাটি।

গত মে মাসে সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত ‘হুয়াওয়ে এশিয়া প্যাসিফিক ইনোভেশন কংগ্রেস-২০২২’ সম্মেলনে ‘বাংলাদেশ ন্যাশনাল ডিজিটাল স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড প্র্যাকটিস’ বিষয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থান করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।

প্রবন্ধে ২০০৮ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ পরিকল্পনা ঘোষিত হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি ও যোগাযোগ খাত কীভাবে দ্রুত বিকাশ লাভ করেছে সেসব তুলে ধরেন মন্ত্রী। সে সময় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৮ কোটি বলে প্রতিবেদন প্রকাশের বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় মোস্তাফা জব্বারের কাছে।

টেলিযোগাযোগমন্ত্রী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দেশে মোবাইল ব্যবহারকারী ১৮ কোটি। আপনি যদি এখনও বিটিআরসির ওয়েবসাইটে যান তাহলে দেখতে পাবেন মোবাইল ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৮ কোটির ওপরে। মে মাসে আমি সে তথ্যই দিয়েছি এবং এটাও ছিল।

‘আমি নরমালি স্মৃতিভ্রষ্ট হই না। ২০০৮ সালে দেশে মোট মোবাইল ব্যবহারকারী ছিল ৪ কোটি। তা থেকে বেড়ে ১৮ কোটি হয়েছে।’

বিটিআরসির জুনের হিসাবে দেশে মোবাইল ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৮ কোটি ৪৪ লাখ ৫০ হাজার। সেটি গত মে মাসে ছিল ১৮ কোটি ৪২ লাখ ৩০ হাজার।

মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ২০০৮ সালে ছিল সাড়ে ৭ লাখ, যেটা এখন হয়েছে ১২ কোটির ওপরে। এটাই প্রকৃত তথ্য। এখন কেউ যদি মিস রিপোর্ট করে সেটার দায়দায়িত্ব তো আমার না।

‘সাধারণত প্রতিটি সিমকে একটি ইউনিক গ্রাহক হিসেবে ধরে মোবাইল ব্যবহারকারীর সংখ্যা হিসাব করে বিটিআরসি। সে জন্য সবশেষ তিন মাসের মধ্যে সক্রিয় সিম এক একজন নতুন গ্রাহক ধরা হয়। তাই মোবাইল বা ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা দিয়ে মানুষ গণনা করা সম্ভব নয় এবং সেটা সঠিকও নয়।’

মন্ত্রী উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘ঈদের সময় অন্তত ৯০ লাখ সিম ঢাকা ছেড়েছে। আমরা সে হিসাব দিয়েছি। এখন কেউ যদি বলে, ৯০ লাখ মানুষ ঢাকা ছেড়েছে সেটা তো ভুল। একজন মানুষের একাধিক সিম রয়েছে। এমনও আছে এক ব্যক্তির কাছে ৪/৫টা সিম রয়েছে, যেগুলো অ্যাকটিভ। আবার করপোরেট সিম আছে। তাই সিম বা মোবাইল ব্যবহারকারী দিয়েও মানুষ গণনা করা যায় না। সেটা সম্ভবও নয়।’

জনশুমারির তথ্যে ইন্টারনেট ব্যবহার

জনশুমারিতে ইন্টারনেট ব্যবহারের একটা ধারণা উঠে এসেছে। ২০২২ সালের গত তিন মাসে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৫ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের মধ্যে মোট ৩০ দশমিক ৬৮ শতাংশ। ১৮ বছর থেকে বেশি বয়সীদের মধ্যে ৩৭ দশমিক ১ শতাংশ জনসংখ্যা ইন্টারনেট ব্যবহার করেছে।

বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে পরিলক্ষিত হয়, গত তিন মাসে ইন্টারনেট ব্যবহার করেছে এমন জনসংখ্যা সবচেয়ে বেশি ঢাকা বিভাগে এবং সবচেয়ে কম রংপুর বিভাগে।

এ বিভাগের আরো খবর