বিগত বছরগুলোতে দেশের স্মার্টফোন বাজারের অভূতপূর্ব প্রবৃদ্ধি ঘটেছে। ব্যতিক্রমী কাস্টমাইজেশন ও উচ্চমানের পণ্যের জন্য স্মার্টফোন ব্যাপক জনপ্রিয় হয়েছে। যদিও দেশে ফাইভজির ব্যবহার এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে, তবে নির্দ্বিধায় বলা যায়, নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার সঙ্গে এ প্রযুক্তিও নতুন সব সম্ভাবনা উন্মোচন করবে।
এ খাতের শীর্ষ প্রতিষ্ঠানগুলো ফাইভজি ইকোসিস্টেমের সঙ্গে নিজেদের খাপ খাওয়ানোর সব প্রস্তুতি এরই মধ্যে নিয়েছে। পঞ্চম প্রজন্মের মোবাইল নেটওয়ার্ক স্থাপন ত্বরান্বিত করতে প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের প্রতিশ্রুতিও ব্যক্ত করেছে।
এগিয়ে যান অপো এফ২১ প্রো ফাইভজির সঙ্গে
বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় স্মার্ট ডিভাইস নির্মাতা ও উদ্ভাবক প্রতিষ্ঠান অপো বাংলাদেশে ফাইভজির প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে কাজ করছে। ব্র্যান্ডটি ইতোমধ্যে বিভিন্ন দেশে গবেষণা সক্ষমতা এবং অংশীদারত্ব সংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞতাও প্রদর্শন করেছে।
ব্র্যান্ডটি অতি স্বল্প সময়ের মধ্যে দেশের বাজারের জন্য অপো এফ২১ প্রো ফাইভজি কাস্টোমাইজ করেছে এবং বিভিন্ন ফ্রিকোয়েন্সির ব্যান্ডের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলার পাশাপাশি বাংলাদেশের ক্যাটালগে প্রবেশের লক্ষ্যে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ টেকনোলজি সার্টিফিকেশন অর্জন করেছে।
মানের ব্যাপারে আপস না করে দেশের গ্রাহক এবং ব্যবহারকারীদের চাহিদা পূরণে তাদের প্রয়োজন অনুসারে পোর্টফোলিও এবং ব্যবসায়িক কৌশল সমৃদ্ধ করেছে ব্র্যান্ডটি। অপোর লক্ষ্য ভবিষ্যতে শীর্ষস্থানীয় ফাইভজি পণ্য, প্রযুক্তি এবং সেবা দেশের আরও অধিকসংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়া।
বিশ্বজুড়ে ফাইভজি কানেক্টিভিটি স্থাপনে অগ্রণী ভূমিকা রাখছে অপো
২০১৯ সালে অপো প্রথম ডিএসএস ডেটা কল পরিচালনার জন্য বৈশ্বিক অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করেছে। শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ডটি এরিকসন, কোয়ালকম টেকনোলজিস (কোয়ালকম ইনকরপোরেটেডের একটি সাবসিডিয়ারি), সুইসকম ও টেলস্ট্রার সঙ্গে অংশীদারত্বের মাধ্যমে বিশ্বের প্রথম ডিএসএস সক্ষমতার ফাইভজি স্মার্টফোন ব্যবহার করে ইন্ডাস্ট্রির প্রথম ডিএসএস (ডাইনামিক স্পেকট্রাম শেয়ারিং) ডেটা কল করতে সক্ষম হয়েছে।
এভাবে বিশ্বজুড়ে ডিএসএস সাপোর্ট করে এমন প্রথম বৈশ্বিক স্মার্ট ডিভাইস ব্র্যান্ডে পরিণত হয়েছে অপো। পরে ২০২০ সালে অপো প্রথম স্মার্টফোন ব্র্যান্ড হিসেবে ভারতে ফাইভজি হোয়াটসঅ্যাপ কল করতে সক্ষম হয়, হায়দ্রাবাদে আরঅ্যান্ডডি কেন্দ্রে প্রথম ফাইভজি কল পরীক্ষা করে এবং আরও দ্রুত মুভি ডাউনলোড ও ক্লাউড গেমিংয়ের ফিচারগুলো তুলে ধরে। এ ছাড়া ২০২০ সালে অপো বিশ্বব্যাপী ফাইভজি সিপিই ওমনি চালু করে, যা উদ্ভাবনী প্রযুক্তির একটি ফাইভজি স্মার্ট কানেকশন হাব। ২০২০ সালের এপ্রিলে অপো, এরিকসন এবং মিডিয়াটেক নিয়ে আসে ভিওএনআর ভয়েস ও ভিডিও কল, যা উচ্চ মানসম্পন্ন ফাইভজি ফোনের অভিজ্ঞতাকে বাস্তবে পরিণত করার প্রচেষ্টাকে এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যায়।
২০২০ সালের মে মাসে ভোডাফোনের ইউরোপীয় বাজারে অপোর বিস্তৃত পরিসরের পণ্য নিয়ে আসতে অপো এবং ভোডাফোন একটি অংশীদারত্ব চুক্তি করে। এ ছাড়া ইন্টারন্যাশনাল অ্যাকাডেমিক এক্সচেঞ্জ আরও সমৃদ্ধ করতে এবং ফাইভজি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও বিগ ডেটার মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে গ্লোবাল টেকনিক্যাল স্ট্যান্ডার্ডস গঠনে অংশ নিতে আইইইইর সঙ্গে একটি কৌশলগত অংশীদারত্ব করে অপো।
শক্তিশালী পারফরম্যান্স নিশ্চিত করতে ২০২২ সালে অপো বাংলাদেশে নিয়ে আসে অপো এফ২১ প্রো ৫জি। ৬ ন্যানোমিটার প্রসেসরে নির্মিত এফ২১ প্রো ৫জি কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৬৯৫ ফাইভজি মোবাইল প্ল্যাটফর্ম দ্বারা চালিত প্রথম ডিভাইসগুলোর মধ্যে অন্যতম। এই দুর্দান্ত প্রসেসরের মাধ্যমে স্মার্টফোনটি অতুলনীয় পারফরম্যান্স দেবে।
নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেটের জন্য এফ২১ প্রো ফাইভজিতে ফোরজি প্লাস নেটওয়ার্ক
অপো এফ২১ প্রো ফাইভজির কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৬৯৫ ফাইভজি মোবাইল প্ল্যাটফর্ম ৬ ন্যানোমিটার চিপসেট দেবে দ্রুতগতির ফোরজি প্লাস ইন্টারনেট। এই ফাইভজি ডিভাইসে ৪জি+ একই ব্যান্ডউইথ লোকেশনে একই সিমের মাধ্যমে অন্য যেকোনো স্মার্টফোনের তুলনায় দ্রুতগতির ইন্টারনেট নিশ্চিত করে।
সিম কার্ড ও এর অবস্থান ফাইভজি নেটওয়ার্ক সমর্থন করে কি না, তার ওপর নির্ভর করে ফাইভজি নেটওয়ার্ক সংযোগ। এটি ব্যবহারকারীর অবস্থানে ফাইভজি ফ্রিকোয়েন্সি ব্যান্ড এবং ফাইভজি নেটওয়ার্ক আছে কি না তার ওপরও নির্ভরশীল।
এ ছাড়া ফাইভজির অতিরিক্ত শক্তির ব্যবহার প্রায়ই ফোনের তাপ নিঃসরণের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত চাপ দেয়। ডিভাইসটি আগের প্রজন্মের তুলনায় কার্যকরভাবে তাপ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। ফলে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি উপভোগে কোনো সমস্যা হবে না।
ডিভাইসটির সিপিইউতে ‘বিগার’ কোর (আর্ম কর্টেক্স-এ৭৬ থেকে আর্ম কর্টেক্স-এ৭৮) এবং তুলনামূলক উচ্চতর কম্পিউটিং পারফরম্যান্স প্রদানের সক্ষমতা রয়েছে।
এফ২১ প্রো ফাইভজির সঙ্গে দ্রুতগতির পারফরম্যান্স
এফ২১ প্রো ফাইভজিতে রয়েছে ‘ভিওএলটিই’, যার মানে হচ্ছে ভয়েস ওভার এলটিই। এই প্রযুক্তির সাহায্যে ভয়েসের মানে কোনো প্রভাব না ফেলে ভিওএলটিই সমর্থিত নেটওয়ার্কে ভয়েস এবং ডেটা পাঠানো যায়।
এর পাশাপাশি আল্ট্রা-থিন ফ্ল্যাট এজ রেট্রো ডিজাইনের শক্তিশালী ডিভাইসটি রেইনবো স্পেকট্রাম এবং কসমিক ব্ল্যাক দুটি ভিন্ন রঙে পাওয়া যাচ্ছে। স্প্লাইসড গ্লস ও ম্যাট টেক্সচারের আকর্ষণীয় ফোনটিতে ব্যবহার হয়েছে অপোর ডুয়াল অরবিট লাইট।
প্রাইমারি ক্যামেরা দুটির পেছনে লুকানো রয়েছে দুটি রিং। ৬৪ মেগাপিক্সেলের মেইন ক্যামেরা, ২ মেগাপিক্সেল ম্যাক্রো, ২ মেগাপিক্সেল ডেপথ ও ১৬ মেগাপিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরা রয়েছে সেটটিতে। পাশাপাশি রয়েছে বোকেহ ফ্লেয়ার পোর্ট্রেট, সেলফি এইচডিআর, এআই প্যালেটস, এআই কালার পোর্ট্রেট, পোর্ট্রেট রিটাচিং এবং আরও অনেক কিছু।
কনটেন্ট উপভোগের অসাধারণ অভিজ্ঞতা দিতে ডিভাইসটিতে রয়েছে ৬০ হার্টজ রিফ্রেশ রেটযুক্ত ৬ দশমিক ৪ ইঞ্চির পাঞ্চ হোল অ্যামোলেড এফএইচডি+ ডিসপ্লে।
দীর্ঘ ব্যাকআপে রয়েছে ৪৫০০ এমএএইচের ব্যাটারি ও ৩৩ ওয়াট সুপারভিওওসি ফ্ল্যাশ চার্জিং সুবিধা। ডিভাইসটি ৮ জিবি র্যাম এবং ১২৮ জিবি রমের (১ টেরাবাইট পর্যন্ত স্টোরেজ বাড়ানো যায়) ভ্যারিয়েন্টে পাওয়া যাচ্ছে। এর সঙ্গে রয়েছে অপোর র্যাম এক্সপানশন প্রযুক্তি, যার ফলে স্মার্টফোনটির মূল ৮ জিবি র্যামকে আরও ৫ জিবি পর্যন্ত বাড়ানো যাবে।
কালকারওএস ১২ থাকায় এয়ার জেসচার, এআই সিস্টেম বুস্টার, কুইক স্টার্টআপ, গেম ফোকাস মোড এবং এআই ফ্রেম রেট স্টেবিলাইজারসহ বেশ কয়েকটি ফাংশন ব্যবহারের সুবিধা রয়েছে।