বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মিনিপ্যাক বর্জ্যে ধুঁকছে দেশ, বছরে জমছে ২ লাখ টন

  •    
  • ২ জুলাই, ২০২২ ১৮:২০

সাবেক সচিব এবং এসডোর সভাপতি সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদ বলেন, ‘প্লাস্টিকের মিনি প্যাকেট পরিবেশের জন্য বিপজ্জনক। আকারে ছোট হলেও পরিবেশে এর বিরূপ প্রভাব বিশাল। এ অবস্থায় একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক পণ্য বিশেষ করে স্যাশে ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ কঠোরভাবে কার্যকর করতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানাই।’

সারা দেশে প্রতি বছর ১০ লাখ ৬ হাজার টন ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদিত হচ্ছে। এর মধ্যে শুধু মিনিপ্যাক বা স্যাশে বর্জ্য রয়েছে ১ লাখ ৯২ হাজার ১০৪ টন, যা পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি।

পরিবেশ নিয়ে কাজ করা সংগঠন এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন- এসডো আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে বিশেষজ্ঞরা এমন শঙ্কা ব্যক্ত করেছেন। তারা বলেছেন, প্লাস্টিক স্যাশে পরিবেশকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।

শনিবার রাজধানীর লালমাটিয়ায় এই গোলটেবিল বৈঠকে ‘প্লাস্টিক স্যাশে: স্মল প্যাকেট উইথ হিউজ এনভায়রনমেন্ট ডেস্ট্রাকশন’ শীর্ষক গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়।

দেশে কী পরিমাণ মিনিপ্যাক ব্যবহার হচ্ছে সে বিষয়ে গবেষণা-তথ্যের জন্য প্রতিষ্ঠানটি ঢাকার বেশ কিছু এলাকা এবং উত্তরবঙ্গের জেলা রংপুরকে বেছে নেয়া হয়।

এসডোর গবেষণা অনুসারে, সমীক্ষাকৃত অঞ্চলের ৯৭ শতাংশ অংশেই মিনিপ্যাক বা স্যাশের ব্যবহার রয়েছে। আর মিনিপ্যাক মুক্ত আছে মাত্র ৩ শতাংশ এলাকা।

দেশে যে পরিমাণ মিনিপ্যাক বর্জ্য তৈরি হয় তার মধ্যে খাবারের স্যাশে ৪০, প্রসাধনী ২৪, ওষুধ ৮, গৃহসামগ্রী পরিষ্কারের পণ্য ৭, রান্নার মসলা ৭, পানীয় ৭ এবং অন্যান্য বর্জ্য ৭ শতাংশ।

খাবারের স্যাশের মধ্যে রয়েছে- চিপস, টমেটো সস, জুস, গুঁড়োদুধ, কফি ইত্যাদি। ওষুধের স্যাশের মধ্যে রয়েছে স্যালাইনের প্যাকেট ও মেডিসিন স্ট্রিপ। কসমেটিক স্যাশের মধ্যে আছে শ্যাম্পু, কন্ডিশনার, টুথপেস্ট ও মাউথ ফ্রেশনার। রান্নার উপাদানকে মসলা প্যাকের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

সাবেক সচিব এবং এসডোর সভাপতি সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদ বলেন, ‘প্লাস্টিকের মিনি প্যাকেট পরিবেশের জন্য বিপজ্জনক। আকারে ছোট হলেও পরিবেশে এর বিরূপ প্রভাব বিশাল।

‘একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহারে বিশেষ করে স্যাশে ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ কঠোরভাবে কার্যকর করতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানাই।’

এসডোর উপদেষ্টা মোখলেসুর রহমান প্লাস্টিক স্যাশের ভয়াবহ দিক তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে মানুষ মিনি প্যাকেটের ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল। তাই জনগণের মধ্যে আরও সচেতনতা তৈরি করতে হবে, যাতে তারা এই মিনি প্যাকেটগুলো ব্যবহার করা বন্ধ করে দেয়। উৎপাদকদেরও উচিত এসব স্যাশে উৎপাদন বন্ধ করে রিফিল সিস্টেমের দিকে এগিয়ে যাওয়া।’

এসডোর মহাসচিব ড. শাহরিয়ার হোসেন বলেন, ‘একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক দূষণ রোধে আমাদের সেই সময়ে ফিরে যেতে হবে যখন বাজারে স্যাশে ছিল না এবং মানুষ কেনাকাটার জন্য রিফিল সিস্টেম ব্যবহার করত। আর সে জন্য একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক পণ্যের কাঁচামাল, উৎপাদন ও বিপণনের ওপর অধিক শুল্ক আরোপ করতে হবে।’

এসডোর নির্বাহী পরিচালক সিদ্দীকা সুলতানা প্লাস্টিক স্যাশের পরিবর্তে সাশ্রয়ী মূল্যের বিকল্প প্রচার করতে এবং একটি আইনি কাঠামো বাস্তবায়ন করতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান।

তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘ এনভায়রনমেন্টাল অ্যাসেম্বলি (ইউনিয়া ৫.২) ইতোমধ্যে একটি আন্তঃসরকারি কমিটি গঠন এবং ২০২৪ সালের মধ্যে লিগ্যালি বাইন্ডিং প্লাস্টিক কনভেনশন নিয়ে আলোচনা ও চূড়ান্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

‘বাংলাদেশসহ ১৭৫টি দেশ এই বৈশ্বিক প্লাস্টিক চুক্তিতে সম্মত হয়েছে। তাই আমাদের উচিত নিজেদেরকে এর জন্য প্রস্তুত করা এবং দেশব্যাপী একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার নিষিদ্ধ করার পদক্ষেপ নেয়া।’

এ বিভাগের আরো খবর