দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের পাঁচ জেলায় ফিরে আসতে শুরু করেছে মোবাইল নেটওয়ার্ক। এরই মধ্যে সে অঞ্চলের ১ হাজার ১৪৬টি সাইট সচল করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন বা বিটিআরসি।
মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কমিশন জানায়, ওই এলাকায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকা আরও ৯৭৬ সাইট চালু করতে অপারেটররা কাজ করে যাচ্ছে। মঙ্গল ও বুধবারের মধ্যে প্রায় শতভাগ সাইট চালু করা সম্ভব হতে পারে বলেও আশা প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।
ভারি বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণা, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের বেশির ভাগ এলাকা প্লাবিত হওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সেখানকার কয়েক লাখ বাসিন্দা।
বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন, বিভিন্ন সাইটে পানি উঠে যাওয়ায় সেখানে চার মোবাইল অপারেটরের ৩ হাজার ৬১৭টি সাইটের মধ্যে প্রায় দুই হাজার সাইট বিকল হয়ে পড়ে। এতে নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন সে অঞ্চলের মোবাইল ব্যবহারকারীরা।
নেটওয়ার্ক পুনরায় চালু করতে সে এলাকায় বিটিআরসির প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে অপারেটররা কাজ শুরু করে। তবে সাইটে জেনারেটর, জেনারেটরের তেলসহ অন্য সরঞ্জাম পৌঁছাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্মীদের।
তারপরও জোর চেষ্টায় সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ১ হাজার ১৪৬ সাইট চালু করা সম্ভব হয়েছে বলে জানায় বিটিআরসি।
ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো- আইএসপি
সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণাসহ সিলেট বিভাগের অন্যান্য এলাকায় চলমান বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি হওয়ায় আইএসপি অপারেটরদের নেটওয়ার্ক অপারেশনস সেন্টার, পয়েন্ট অফ প্রেজেন্স (পিওপি) স্থাপনাগুলো প্লাবিত ও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
যেসব পিএপিতে প্রবেশ করা যাচ্ছে, সেসবে পোর্টেবল জেনারেটর দিয়ে পরিষেবা দেয়া হচ্ছে। জেলাগুলোতে কিছু পিওপি-এ বিদ্যুৎ নিশ্চিত করার জন্য অতিরিক্ত জেনারেটরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সুনামগঞ্জসহ অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় আইএসপি অপারেটরগুলো তাদের টিম পাঠিয়ে নেটওয়ার্ক সচল রাখার জন্যে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
আইআইজি
সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণাসহ সিলেট বিভাগের অন্য এলাকায় ১৫টি আইআইজি অপারেটরের ৪৮টি পয়েন্ট অফ প্রেজেন্স আছে, যার অধিকাংশই সচল রয়েছে। তবে বন্যাপ্লাবিত এলাকায় অবস্থিত অনেক সাইটে বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন হয়ে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ইন্টারনেট সংযোগে সাময়িক প্রতিবন্ধকতা দেখা দেয়।
সিলেটে কয়েকটি আইআইজি পিওপি-এ ডিজেল জেনারেটরের মাধ্যমে পরিচালনার জন্য একটি অস্থায়ী প্রাচীর নির্মাণ করা হয়েছে। জেলার কিছুসংখ্যক পিএপিতে বিদ্যুৎব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য অতিরিক্ত ডিজেলচালিত জেনারেটর এবং পোর্টেবল জেনারেটর ভাড়া করা হয়েছে।
বিএসসিএল
গত শনিবার ১২টি ভিস্যাট সুনামগঞ্জে সেনাবাহিনীর কাছে পাঠানো হয়েছে, যার মধ্যে হাই-টেক পার্ক ক্যাম্পে একটি, সুনামগঞ্জ ডিসির কার্যালয়ে একটি এবং সার্কিট হাউসে একটি চালু করা হয়েছে।
সিলেট স্থানীয় প্রশাসনের কাছে ২৩টি ভিস্যাট রোরবার পৌঁছানো হয়েছে। সিলেট বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে একটি ভিস্যাট স্থাপন করা হয়েছে। এ ছাড়া আরও দুটি ভিস্যাট স্থাপনের কার্যক্রম চালু রয়েছে।