বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আমাদের ছায়াপথের কৃষ্ণগহ্বরের ছবি প্রকাশ

  •    
  • ১৩ মে, ২০২২ ১১:০৮

কৃষ্ণগহ্বর থেকে আলো পর্যন্ত বের হতে পারে না। তাই গতানুগতিক ছবি বলতে আমরা যা বুঝি , স্যাগিটারিয়াস এ* কৃষ্ণগহ্বরের ছবি তেমন নয়। এখানে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকা রেডিও টেলিস্কোপের নেটওয়ার্ক ইভেন্ট হোরাইজন টেলিস্কোপের (ইএইচটি) থেকে পাওয়া সংগৃহীত তথ্যের আলোকে ছবিটি তৈরি করা হয়েছে। যেখানে বিশ্লেষণের জন্য সংগৃহীত ডাটার পরিমাণ ছিল ৩.৫ পেটাবাইট ডাটা, যা ১০ কোটি টিকটক ভিডিওর ডাটার সমান।

মহাকাশের এক রহস্যের নাম কৃষ্ণগহ্বর। যার মাধ্যাকর্ষণ শক্তি এতই বেশি যে আলো পর্যন্ত সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে পারে না। প্রায় দুই শতক ধরে বিজ্ঞানীরা এই কৃষ্ণগহ্বরের সন্ধান করে আসছেন। এবার এই অনুসন্ধানে আরও একটি সাফল্য অর্জন করেছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।

দ্য ভার্জের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রথমবারের মতো জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এবার আমাদের ছায়াপথের কেন্দ্রে অবস্থিত একটি দৈত্যাকার কৃষ্ণগহ্বরের ছবি তুলতে সক্ষম হয়েছেন। বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকা রেডিও টেলিস্কোপের নেটওয়ার্ক ইভেন্ট হোরাইজন টেলিস্কোপের (ইএইচটি) সহযোগিতায় এই ছবিটি তৈরি করা হয়েছে।

কৃষ্ণগহ্বর থেকে আলো পর্যন্ত বের হতে পারে না। তাই গতানুগতিক ছবি বলতে আমরা যা বুঝি, এই ছবিটি তেমন নয়। এখানে রেডিও টেলিস্কোপ থেকে পাওয়া সংগৃহীত তথ্যের আলোকে ছবিটি তৈরি করা হয়েছে। যেখানে বিশ্লেষণের জন্য সংগৃহীত ডাটার পরিমাণ ছিল ৩.৫ পেটাবাইট ডাটা, যা ১০ কোটি টিকটক ভিডিওর ডাটার সমান।

১২ মে আমাদের আকাশগঙ্গা ছায়াপথের কেন্দ্রের স্যাগিটারিয়াস এ* কৃষ্ণগহ্বরের ছবি তোলার ঘোষণা দেয়ার সময় অ্যারিজোনা ইউনিভার্সিটির জ্যোতিপদার্থবিদ ফারইয়েল ওজেল বলেন, ছবিটি আমাদের দেখায় কৃষ্ণগহ্বরটি অন্ধকারে একটি উজ্জ্বল বলয়ের মতো।

এই ফলাফলটিই স্পষ্ট করে যে, এই বস্তুটি প্রকৃত অর্থে একটি কৃষ্ণগহ্বর এবং দৈত্যাকার এসব কৃষ্ণগহ্বরের অবস্থান সাধারণত ছায়াপথের কেন্দ্রে হয়। কালো অন্ধকার হওয়ায় তা আমরা দেখতে পারি না। এর মাধ্যাকর্ষণের টানে বাঁকানো আলোই কেবল ছবিতে ধরা পড়েছে। যার আলোকে স্যাগিটারিয়াস এ* কৃষ্ণগহ্বরের আয়তন আমাদের সূর্যের চেয়ে চার মিলিয়ন গুণ বড়।

জ্যোতির্বিদদের মতে কৃষ্ণগহ্বর নক্ষত্রকে গিলে ফেলতে পারে। সৌভাগ্যবশত আমাদের ছায়াপথের কেন্দ্রের কৃষ্ণগহ্বরটি পৃথিবী থেকে ২৬ হাজার আলোকবর্ষ দূরে।

তবে জ্যোতির্বিদদের তোলা এটিই প্রথম কৃষ্ণগহ্বরের ছবি নয়। এর আগে ইএইচটির মাধ্যমে সাড়ে পাঁচ কোটি আলোকবর্ষ দূরে মেসিয়ার-৮৭ ছায়াপথের এম-৮৭* নামের একটি কৃষ্ণগহ্বরের ছবি তোলা হয়। ২০১৯ সালে তোলা এই ছবিটিই ছিল কৃষ্ণগহ্বরের প্রথম কোনো ছবি। এর আকারে আমাদের সূর্যের চেয়ে ৬৫০ কোটি বড়।

আমাদের ছায়াপথের কৃষ্ণগহ্বর স্যাগিটারিয়াস এ* এর আকার মেসিয়ার ছায়াপথের এম-৮৭* কৃষ্ণগহ্বরের থেকে হাজার গুণ ছোট। দুটি কৃষ্ণগহ্বরের আকারে ব্যাপক পার্থক্য হলেও দেখতে দুটি একই রকম। বিজ্ঞানীরা দুটি কৃষ্ণগহ্বরের ছবি তুলতে সক্ষম হওয়ায় এখন তাদের পক্ষে এর বৈসাদৃশ্যগুলোও অনুসন্ধান করা সম্ভব হবে, পাশাপাশি একে ঘিরে থাকা গ্যাসীয় বলয়ের গতিপ্রকৃতি বুঝতেও সাহায্য করবে।

কৃষ্ণগহ্বর কী

সাধারণ আপেক্ষিকতার তত্ত্ব অনুসারে কৃষ্ণগহ্বর হলো মহাকাশের এক অঞ্চল যেখান থেকে কোনো কিছুই বের হতে পারে না। এমনকি আলো পর্যন্ত সেখানে বিলীন হয়ে যায়। এটি তৈরি হয় অল্প স্থানে খুব বেশি পরিমাণে থাকা ভর থেকে। প্রকৃতপক্ষে এই স্থানে সাধারণ মহাকর্ষীয় বলের মান এত বেশি হয়ে যায় যে এটি মহাবিশ্বের অন্য সকল বল এমনকি তড়িৎ চুম্বকীয় বলকেও অতিক্রম করে। সাধারণত এর অবস্থান হয় ছায়াপথগুলোর কেন্দ্রে। যদিও বিজ্ঞানীরা এখনও নিশ্চিত নন, ছায়াপথের জন্ম আগে হয়েছে নাকি কৃষ্ণগহ্বরের।

এ বিভাগের আরো খবর