বিশ্বের দ্বিতীয় দেশ হিসেবে বিটকয়েনকে রাষ্ট্রীয় মুদ্রা হিসেবে অনুমোদন দিয়েছে আফ্রিকার দেশ সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক। দেশটির আইনপ্রণেতারা সর্বসম্মতভাবে ভোট দিয়ে বিটকয়েনের আইনি স্বীকৃতি দিয়েছেন।
সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র দেশ, কিন্তু তা হীরা, সোনা ও ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ। কয়েক দশক ধরে দেশটিতে সংঘর্ষ চলছে। যেহেতু বিটকয়েন একটি ক্রিপ্টোকারেন্সি এবং এর ব্যবহার অনলাইননির্ভর, কিন্তু সংঘর্ষপ্রবণ ও দারিদ্র্যপীড়িত হওয়ায় দেশটিতে টেকসই ইন্টারনেট অবকাঠামো গড়ে ওঠেনি।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এমন অবস্থায় বিটকয়েনকে রাষ্ট্রীয় মুদ্রা করার বিষয়ে রাজধানী বাঙ্গুইতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
অর্থনীতিবিদ ইয়ান ডাওরো বিবিসি আফ্রিকাকে বলেন, ‘এ সিদ্ধান্ত জীবনকে সহজ করে তুলবে কারণ স্মার্টফোনের মাধ্যমে লেনদেন করা যাবে এবং বিটকয়েনকে অন্য কোনো মুদ্রায় রূপান্তর করা সহজ।
‘ব্যবসায়ীদের আর ফ্রাঙ্কের স্যুটকেস নিয়ে ঘুরে বেড়াতে হবে না যা অন্য দেশে কেনাকাটা করতে ডলার বা অন্য কোনো মুদ্রায় রূপান্তর করতে হবে।’
কম্পিউটার বিজ্ঞানী সিডনি টিকায়া একমত নন ইয়ান ডাওরোর সঙ্গে। তিনি মনে করেন ক্রিপ্টোকারেন্সি গ্রহণ করা ‘অপরিণত’ ও ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’।
এর আগে ক্রিপ্টোকারেন্সির ১২ বছরের ইতিহাসে প্রথম কোনো দেশ হিসেবে বিটকয়েনকে সরকারি মুদ্রা ঘোষণা করেছিল মধ্য আমেরিকার দেশ এল সালভাদর।
বিটকয়েন কী
বিটকয়েন হলো এক ধরনের অনলাইন মুদ্রা। ব্লকচেইন প্রযুক্তিতে তৈরি হয়। ২০০৯ সালে এটি চালু করেন সাতোশি নাকামোতো (ছদ্মনাম)। তবে অস্ট্রেলীয় নাগরিক ক্রেগ রাইটসও নিজেকে বিটকয়েনের উদ্ভাবক বলে দাবি করেন।
বলা হচ্ছে, এই মুদ্রার অস্তিত্ব টের পাওয়া যায় না। একজনের ব্যক্তিগত ওয়ালেট থেকে আরেকজনের ওয়ালেটে লেনদেন হয়। এই ওয়ালেট হলো ব্যক্তিগত ডাটাবেজ, যা কম্পিউটার, স্মার্টফোন বা ক্লাউড যাতে তথ্য সঞ্চিত থাকে। বিটকয়েন ব্যবস্থা এতটাই গোপনীয় যে ব্যবহারকারীরাও নিজেদের পরিচয় লুকিয়ে রাখতে পারেন। এ কারণে যারা তথ্য গোপন রাখতে চান, তাদের মধ্যে বিটকয়েন বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।