দেশের সাড়ে ৬ লাখ ফ্রিল্যান্সার বছরে ৫০ কোটি ডলারের বেশি রেমিট্যান্স আনছেন বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
তিনি বলেন, তাদের উপার্জিত অর্থে আমাদের অর্থনীতি দিন দিন সমৃদ্ধ হচ্ছে।
সোমবার রাজধানীর গুলশানের সেলিব্রেটি কনভেনশন হলে বাংলাদেশ ফ্রিল্যান্সার ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির (বিএফডিএস) ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘প্রযুক্তির এ যুগে আমাদের ছেলেমেয়েরা চাকরির জন্য বসে না থেকে প্রযুক্তি পণ্যকে হাতিয়ার বানিয়েছে। তারা স্বাধীনভাবে কাজ করছে, এটা খুবই আনন্দের।
‘এ খাতে এখন বছরে ৫০ কোটি ডলার আয় হচ্ছে। এখানে প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে, ভবিষ্যতে আরও অনেক বাড়বে।’
ফ্রিল্যান্সারদের দক্ষতা বাড়াতে সরকারের প্রয়াসের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এখন গ্রামে বসেই তরুণদের কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে। এটাই আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় কাজ ছিল।
‘যত কম বিধিবিধান, যত কম আইন, তত বেশি স্বাধীনতা। এ খাতের যত চ্যালেঞ্জ রয়েছে সেগুলো থেকে উত্তরণে আমি আমার সাধ্যমত চেষ্টা করব। সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে অনেক কাজ করছে। এর ধারাবাহিকতায় ফ্রিল্যান্সাররা বেশি বেশি আয় করছে।’
বর্তমান সরকার দেশের বিভিন্ন খাতে উন্নয়ন করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘উন্নয়নের অর্জন ধরে রাখার জন্য আমাদের ঐক্যের প্রয়োজন। সামাজিক স্থিতিশীলতা, সামাজিক বন্ধন, সামাজিক শান্তি খুব বেশি প্রয়োজন।’
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বছরে ফ্রিল্যান্সিং খাতে ৫০ কোটি ডলার আয় হয় দেশে। কিন্তু এই বিশাল অর্থ সরাসরি দেশে আসতে হলে বিভিন্ন মানিট্রান্সফার কোম্পানির শরণাপন্ন হতে হয়। এতে প্রচুর পরিমাণ কমিশন দিতে হয়। একই সঙ্গে ডলারকে টাকায় রূপান্তর করতে গেলেও বড় অঙ্কের টাকা খরচ হয়।
বিএফডিএসের চেয়ারম্যান তানজিবা রহমান বলেন, ‘ফ্রিল্যান্সিং আইডি কার্ড দিয়ে তারা ব্যাংকিং ঋণসহ অন্যান্য সুবিধাদি পাচ্ছেন। ঘরে বসে নারীরাও ফ্রিল্যান্সিং-এর মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করছেন। তবে এই অনলাইন প্ল্যাটফর্মে কর্মরত রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আরএফ হোসেন বলেন, ‘ফ্রিল্যান্সাররা ঘরে বসে দেশের বাইরে থেকে টাকা নিয়ে আসছেন, যা অসাধারণ। ৬ লাখের বেশি মানুষ ফ্রিল্যান্সিং-এর সঙ্গে জড়িত। অনেকেই বলেন এই সংখ্যা ১০ লাখের বেশি।
‘আমরা ফ্রিল্যান্সারদের জন্য আলাদা ম্যাটিক্স কার্ড করেছি। এই কার্ড-এর মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সাররা নানা সুবিধা পাবেন।’
জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান দুলাল কৃষ্ণ সাহা বলেন, ‘আমরা ঘরে ঘরে চাকরি দিতে পারব না। তবে ঘরে ঘরে ফ্রিল্যান্সার তৈরি করতে পারব। এদের উন্নয়নে নানা ধরনের উদ্যোগ বাস্তবায়ন করব।’
বিএফডিএস প্রতিষ্ঠাতা ও সিনিয়র সহ-সভাপতি জসিম উদ্দিন জয় ও সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।