রাশিয়ার বরফে ঢাকা সাইবেরিয়া অঞ্চলে একটি গুহায় আবিষ্কৃত সিংহশাবকের দেহাবশেষ ২৮ হাজার বছরের পুরোনো বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
হিমায়িত ছিল বলে তিন বছর আগে প্রায় অবিকৃত অবস্থায় মেলে দেহাবশেষটি।
দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ইয়াকুতিয়া অঞ্চলে সেমিয়ুইলিয়াখ নদীর তীরে ২০১৮ সালে সন্ধান মেলে স্ত্রী সিংহশাবকটির দেহাবশেষের। বিজ্ঞানীরা সেটির নাম দেন স্পার্টা।
কোয়াটার্নারি জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সালে একই এলাকায় আরেকটি সিংহশাবকের দেহাবশেষের সন্ধান পান বিজ্ঞানীরা। পুরুষ সিংহশাবকটির নাম দেয়া হয় বরিস।
বিজ্ঞানীরা জানান, এক বছরের ব্যবধানে স্পার্টা ও বরিসের দেহাবশেষ মিললেও দুই সিংহশাবকের মধ্যে দূরত্ব ছিল মাত্র ১৫ মিটার। কিন্তু তাদের জন্মের ব্যবধান ছিল প্রায় সাড়ে ১৫ হাজার বছর। বরিস জন্মেছিল ৪৩ হাজার ৪৪৮ বছর আগে।
দুটি সিংহশাবকেরই মৃত্যু হয়েছে এক বা দুই মাস বয়সে। তাদের দেহে মায়ের দুধের নমুনা পাওয়া যেতে পারে বলে ধারণা করছেন বিজ্ঞানীরা।
গবেষণা প্রতিবেদনের অন্যতম লেখক ভ্যালেরি প্লোতনিকোভ জানান, স্পার্টার দেহাবশেষ এত ভালোভাবে সংরক্ষিত ছিল যে এর গায়ের লোম, দেহের ভেতরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, কঙ্কালসহ প্রায় সবই অবিকৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে।
তিনি বলেন, ‘যে অবস্থায় স্পার্টার দেহাবশেষ উদ্ধার হয়েছে, তাতেই এটি এক অনন্য আবিষ্কার। এর আগে ইয়াকুতিয়ায় এতটা অবিকৃত অবস্থায় আর কোনো গুহাবাসী সিংহ বা সিংহশাবক আমরা পাইনি।
‘শিশু শাবকটির শরীরের কোনো না কোনো অংশে তার মায়ের দুধের বিচ্ছিন্ন অংশ মিলতে পারে বলে ধারণা করছি আমরা। যদি সেটা পাওয়া যায়, তাহলে হাজার বছর আগে প্রাপ্তবয়স্ক গুহাবাসী সিংহ কী খেত, তা জানা সম্ভব হতে পারে।’
হাজার হাজার বছর আগে পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়েছে গুহাবাসী সিংহ।
সাইবেরিয়া অঞ্চলে ২০১৭ ও ২০১৮ সালের আগে আরও দুটি গুহাবাসী সিংহশাবকের দেহাবশেষ মিলেছিল। তাদের নাম রাখা হয় উয়ান ও ডিনা।