বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পৃথিবীতে আঘাত হানবে বেনু?

  •    
  • ১২ আগস্ট, ২০২১ ১৪:১৫

তবে দুর্ঘটনাক্রমে বেনু যদি পৃথিবীতে আঘাত হানে, সে আঘাত ডাইনোসর বিলুপ্ত করে দেয়া গ্রহাণুটির আঘাতের মতো শক্তিশালী হবে না। কিন্তু বেনু যে অঞ্চলে আঘাত করবে, সেখানকার বিপর্যয়ের মাত্রা হতে পারে কল্পনাতীত। গত বছর লেবাননের রাজধানী বৈরুতের বন্দরে যে ভয়াবহ বিস্ফোরণ দেখেছে বিশ্ব, তার ২০ লাখ গুণ হতে পারে বেনুর আঘাতে বিস্ফোরণের তীব্রতা।

এখন থেকে শুরু করে আগামী ৩০০ বছরের মধ্যে যে কোনো সময় পৃথিবীতে আঘাত হানতে পারে আধা কিলোমিটার চওড়া গ্রহাণু বেনু। মানবজাতির জন্য বড় ঝুঁকির কারণ বলে মনে করা হচ্ছে বেনুকে।

নিউইয়র্কে অবস্থিত ১০২ তলা এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিংয়ের উচ্চতার চেয়েও চওড়া বেনু। বিজ্ঞানীরা প্রথম গ্রহাণুটির অস্তিত্ব শনাক্ত করেন ১৯৯৯ সালের সেপ্টেম্বরে।

নাসার সংবাদভিত্তিক ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, বেনুর আকৃতির কোনো গ্রহাণু পৃথিবীতে আঘাত করলে ছয় মাইল চওড়া গর্ত সৃষ্টি হতে পারে ভূপৃষ্ঠে। যে স্থানে পড়বে গ্রহাণুটি, সেখানে গর্তের গভীরতা হতে পারে ৬০০ মাইলের বেশি।

যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থাটির হিসাবে, পৃথিবীতে বেনুর আঘাতের সম্ভাব্য তারিখ ২১৮২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর। সেদিন বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করতে পারে গ্রহাণুটি, আছড়েও পড়তে পারে পৃথিবীর বুকে।

অর্থাৎ ২৩০০ সালের মধ্যে যে কোনো সময় বেনুর আঘাত হানার শঙ্কা তো আছেই; তবে দিনটি ১৬১ বছর পর হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।

তবে সুখবর হলো, আপাতদৃষ্টিতে বিপজ্জনক গ্রহাণুটির পৃথিবীতে আঘাত হানার গড় সম্ভাবনা এক হাজার ৭৫০ ভাগের এক ভাগ। নতুন হিসাবে বেনুর পৃথিবীতে আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা খানিকটা বেশি হলেও এখনও তা বিজ্ঞানীদের রাতের ঘুম কেড়ে নেয়ার মতো কারণ হয়নি।

এখন পর্যন্ত আমাদের সৌরজগতে পৃথিবীর জন্য বিপজ্জনক দুটি গ্রহাণুর সন্ধান পেয়েছে নাসা। এর একটি বেনু, অপরটি ১৯৫০ ডিএ।

বেনুর আকার, আকৃতি ও গঠন সম্পর্কে বিশদ জানতে এর পাথুরে নমুনা সংগ্রহে ২০১৬ সালে একটি মহাকাশযান পাঠায় নাসা। ২০১৮ সালে সেটি বেনুর কাছাকাছি পৌঁছেছে এবং নমুনা নিয়ে পৃথিবীতে ফেরার আগ পর্যন্ত দুই বছর পাখির মতো বেনুর সঙ্গেই উড়ে বেড়িয়েছে।

বেনুর ভবিষ্যৎ গতিপথ নির্ধারণে গ্রহাণুটির ওপর সূর্যের আলোর প্রভাব থেকে শুরু করে সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম প্রতিটি প্রভাবক হিসাবে নিয়েছে নাসা।

বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী ইকারাসে প্রকাশিত প্রতিবেদনে গবেষকরা বেনুর বিষয়ে নিজেদের পূর্বাভাস তুলে ধরেছেন। জানিয়েছেন, ২১৩৫ সালে পৃথিবীর খুব কাছে আসবে বেনু, কিন্তু সে সময় পৃথিবীর সঙ্গে এটির সংঘর্ষ কিংবা বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করার কোনো সম্ভাবনা নেই।

তবে পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কারণে সূর্যকে ঘিরে গ্রহাণুটির কক্ষপথে পরিবর্তন হতে পারে। এর প্রভাবে খুব শিগগিরই আবারও পৃথিবীর কাছাকাছি আসবে বেনু। সম্ভাব্য সেই তারিখটিই হলো ২১৮২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর।

নাসা জানিয়েছে, গ্রহাণুটি আবিষ্কারের পর ২২ বছরে এর সবচেয়ে নিখুঁত গতিপথ নির্ধারণ করা হয়েছে নতুন গবেষণায়। এ হিসাবে আগামী ৩০০ বছরের মধ্যে পৃথিবীতে বেনুর আঘাত না করার সম্ভাবনা ৯৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ।

নাসার জেট প্রোপালশান ল্যাবরেটরির সেন্টার ফর নিয়ার আর্থ অবজেক্ট স্টাডিজের গবেষক ডেভিড ফার্নোচিয়া বলেন, ‘নতুন বিশ্লেষণে পৃথিবীতে গ্রহাণুটির আঘাতের সম্ভাবনা একটু বেশি হলেও তা খুব উল্লেখযোগ্য কিছু নয়। তাই এখনই উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই। তবে যেহেতু গ্রহাণুর গতিপথ পরিবর্তনযোগ্য, এর গতিপথে আমাদের পর্যবেক্ষণ চলতে থাকবে।’

ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের প্রতিবেদনে জানানো হয়, বর্তমান গতিপথে ২১০০’র শেষ দিক থেকে ২২০০’র শুরু পর্যন্ত সময়ে অসংখ্যবার পৃথিবীর জন্য ঝুঁকি তৈরি করার মতো কাছাকাছি আসবে বেনু। এর মধ্যে সবচেয়ে কাছাকাছি আসবে ২১৮২’র সেপ্টেম্বরের এক মঙ্গলবারে।

তবে সেদিন পৃথিবীতে বেনুর আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা দুই হাজার ৭০০ ভাগের এক ভাগ।

তবে দুর্ঘটনাক্রমে বেনু যদি পৃথিবীতে আঘাত হানে, সে আঘাত ডাইনোসর বিলুপ্ত করে দেয়া গ্রহাণুটির আঘাতের মতো শক্তিশালী হবে না।

সাড়ে ছয় কোটি বছর আগে পৃথিবীতে আঘাত হানা ওই গ্রহাণুটি চওড়ায় প্রায় ছয় মাইল ছিল বলে ধারণা বিজ্ঞানীদের, যা বেনুর প্রস্থের প্রায় ১৮ গুণ।

অবশ্য বেনু যে অঞ্চলে আঘাত করবে, সেখানকার বিপর্যয়ের মাত্রা হতে পারে কল্পনাতীত।

গত বছর লেবাননের রাজধানী বৈরুতের বন্দরে যে ভয়াবহ বিস্ফোরণ দেখেছে বিশ্ব, তার ২০ লাখ গুণ হতে পারে বেনুর আঘাতে বিস্ফোরণের তীব্রতা।

এ বিভাগের আরো খবর