উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের নিচে আইসল্যান্ডিয়া নামে বিশাল এক মহাদেশ থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন বিজ্ঞানীরা।
আর এ ধারণা সত্য প্রমাণ হলে বিশ্বজুড়ে সাগরের নিচে নিমজ্জিত অন্যান্য মহাদেশ নিয়েও অনুসন্ধান শুরু হবে।
গবেষকদের অনুমান, প্রস্তাবিত আইসল্যান্ডিয়া মহাদেশ কমপক্ষে ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গমাইল পর্যন্ত বিস্তৃত।
গ্রিনল্যান্ডের উত্তরাঞ্চল থেকে সম্ভবত ইউরোপের পূর্বাঞ্চল পর্যন্ত এটি সম্প্রসারিত বলে ধারণা করা হচ্ছে।
যুক্তরাজ্যের ডারহাম ইউনিভার্সিটির জিওফিজিক্স বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক জিলিয়ান ফোলজারের নেতৃত্বাধীন গবেষক দল বলছে, মহাসাগরের নিচে লুকানো মহাদেশটির শিখরে রয়েছে আইসল্যান্ড।
ফোলজার ও তার সহকর্মীদের বরাতে যুক্তরাষ্ট্র-কানাডাভিত্তিক ম্যাগাজিন ভাইস জানিয়েছে, আইসল্যান্ডিয়ার অস্তিত্বের বিষয়টি একটি অনুমান।
গভীর ড্রিলিং, ভূতাত্ত্বিক জরিপ ও জিরকনের মতো নানা খনিজ পদার্থের বিশ্লেষণসহ অন্যান্য পদ্ধতি প্রয়োগের মাধ্যমে এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
ফোলজার ও তার সহকর্মীরা বলেন, ‘আইসল্যান্ডিয়ার অস্তিত্ব পরীক্ষা করা উচিত।
‘নতুন পদ্ধতি ও অনুমানের বাস্তব রূপ দিতে আইসল্যান্ডিয়া হচ্ছে একটি সুবিধাজনক উদাহরণ।
‘এর মাধ্যমে সাগরে লুকানো অন্যান্য মহাদেশেরও অনুসন্ধান সহজ হবে।
চমকপ্রদ ভূ-প্রকৃতি ও আগ্নেয়গিরির অহরহ অগ্ন্যুৎপাতের কারণে আর্থ সায়েন্টিস্টদের দীর্ঘদিনের আকর্ষণের বিষয় আইসল্যান্ড।
উত্তর আমেরিকান ও ইউরেশিয়ান কন্টিনেন্টাল প্লেটের সীমানার সবার ওপরে আইসল্যান্ডের অবস্থান।
বিজ্ঞানীদের দীর্ঘদিনের ধারণা, ওশানিক ক্রাস্ট (আংশিক গলিত পাথর) আইল্যান্ডকে ঘিরে রেখেছে। গঠন ও ঘনত্বের দিক থেকে এই ওশানিক ক্রাস্ট কন্টিনেন্টাল ক্রাস্টের থেকে আলাদা।
মানবজাতি এ কন্টিনেন্টাল ক্রাস্টের ওপরই বসবাস করছে।
কন্টিনেন্টাল ক্রাস্টের চেয়ে ওশানিক ক্রাস্ট তুলনামূলকভাবে ভারী। এর ফলে এটি মহাদেশের নিচে ডুবে থাকলেও পৃথিবীর ম্যান্টল স্তরের ওপরে অবস্থান করে।
এসব কারণে ওশানিক ক্রাস্ট কন্টিনেন্টাল ক্রাস্টের চেয়ে আকৃতিতে যথেষ্ট পাতলা ও কম প্রাচীন।
ফোলজার ও তার সহকর্মীদের সাম্প্রতিক ধারণা, আইসল্যান্ডকে ঘিরে রেখেছে কন্টিনেন্টাল ক্রাস্ট, ওশানিক ক্রাস্ট নয়।
কারণ আইসল্যান্ডের নিচে থাকা স্তর প্রায় ২৫ মাইল গভীর, যা ওশানিক ক্রাস্টের গড় চার মাইল পুরুত্বের চেয়েও পুরু।
১৯৭৭ সালের এক গবেষণায়ও বলা হয়, আইসল্যান্ড হয়তো কন্টিনেন্টাল ক্রাস্টেই অবস্থিত।