বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

২৫ হাজার বছর আগে এসেছিল আরেক ভয়ংকর করোনা

  •    
  • ২৫ জুলাই, ২০২১ ১৬:১৮

পূর্ব এশীয় বংশোদ্ভূতদের মধ্যে বিশেষ কয়েকটি জিন শনাক্ত করেছেন গবেষকরা। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সক্ষম এসব জিনের উদ্ভব এখন থেকে প্রায় ২৫ হাজার বছর আগে। প্রায় ২০ হাজার বছর ধরে ওই করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে মানুষ।  

হাজার হাজার বছর ধরে বিপজ্জনক সব ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছে মানবজাতি। নতুন গবেষণায় উঠে এসেছে, মারাত্মক সংক্রামক এক ধরনের করোনাভাইরাস ২৫ হাজার বছর আগে তাণ্ডব চালিয়েছিল পূর্ব এশিয়ায়। ওই ভাইরাসের বিরুদ্ধে কার্যকর প্রতিরোধ ক্ষমতা মানুষের মধ্যে তৈরি হতে সময় লেগেছে বহু বছর।

বিজ্ঞানবিষয়ক সংবাদমাধ্যম লাইভ সায়েন্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, প্যাথোজেন তথা মানবদেহের জন্য বহু ক্ষতিকর বিভিন্ন ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া থেকে বেঁচে থাকার ক্ষমতা ধীরে ধরে জিনগত বৈশিষ্ট্যের অংশ হয়ে যায়। নতুন নতুন প্যাথোজেনের বিরুদ্ধে দেহে প্রাকৃতিকভাবে শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে সক্ষম জিন প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে মানুষের মধ্যে বহমান।

বর্তমানে সার্স-কোভ-টু করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট কোভিড ১৯ মহামারি প্রত্যক্ষ করছে পৃথিবী। দেড় বছরের বেশি সময় ধরে চলা এই মহামারিতে বিশ্বজুড়ে প্রায় ৪২ লাখ মানুষ মারা গেছে। আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের যুগেও খালি চোখে অদৃশ্য আর ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ভাইরাসের সামনে মানুষ কতটা অসহায়, সেটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে করোনা।

তবে গবেষণা বলছে, প্রাণঘাতী ভাইরাসের বিরুদ্ধে মানুষের লড়াইয়ের ইতিহাস নতুন নয়; বরং আদিম যুগ থেকেই বিভিন্ন ধরনের ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়ে বহুমাত্রিক প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়েছে মানবদেহে।

যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ অ্যারিজোনার বাস্তুশাস্ত্র ও বিবর্তনবিষয়ক সহকারী অধ্যাপক ডেভিড এনার্ড নতুন গবেষণা প্রতিবেদনটির জ্যেষ্ঠ লেখক।

এনার্ড বলেন, ‘সবসময়ই বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মানুষ কোনো না কোনো ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এসেছে। এখনকার সময়ে বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের জিনগত বৈশিষ্ট্য কেমন হবে, তার অন্যতম প্রধান প্রাকৃতিক নির্ধারক এসব ভাইরাস।’

এ কালের মানুষের ডিএনএতে প্রাচীনকালের বেশ কিছু প্যাথোজেনের ছাপ শনাক্ত করতে পেরেছেন গবেষকরা। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভবিষ্যৎ মহামারির পূর্বাভাস দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে এসব তথ্য।

এনার্ড বলেন, ‘বাস্তবতা এটাই যে, অতীতের প্রায় সবকিছুরই ভবিষ্যৎ পুনরাবৃত্তির সম্ভাবনা আছে।’

উন্মুক্ত তথ্যভাণ্ডারের তথ্য ব্যবহার করে গবেষক এনার্ড ও তার দল সারা বিশ্বের ২৬টি জাতিগোষ্ঠীর দুই হাজার ৫০৪ জন মানুষের জিন বিশ্লেষণ করেছেন। তাদের গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রি-প্রিন্ট ডেটাবেজ বায়োআর্কাইভে চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি প্রকাশিত হয়েছে।

করোনাভাইরাস মানবকোষে আক্রমণের পর কোষের অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে বংশবিস্তার করে। মানবদেহে বিভিন্ন ধরনের প্রোটিনের ওপর ভাইরাসটির নিয়ন্ত্রণ কেমন, তার ওপর নির্ভর করে কোষের ভেতরে এর বংশবিস্তারের সাফল্যের মাত্রা।

গবেষণায় করোনাভাইরাসের সংস্পর্শে সক্রিয়তা দেখানো ৪২০টি প্রোটিন উপাদান পর্যবেক্ষণ করা হয়। এর মধ্যে ৩৩২টি কোভিড ১৯ এর জন্য দায়ী সার্স-কোভ-টুর সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া ঘটিয়েছে। এই প্রোটিনগুলোর বেশিরভাগই কোষের ভেতরে ভাইরাসের বংশবিস্তারে সহযোগিতা করেছে; হাতেগোনা কয়েকটি ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, এসব প্রোটিনের কার্যক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করা জিনগুলো অব্যাহতভাবে প্রোটিন উপাদানের রূপ পরিবর্তন করতে থাকে। এর মাধ্যমে কোনো জিনের উপযোগিতা বৃদ্ধি পেলে সেটি পরবর্তী প্রজন্মে প্রবাহিত হয়। ভাইরাসের বিরুদ্ধে কার্যকারিতা দেখানো জিনও এভাবে এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মে প্রবাহিত হয়।

গবেষণায় পূর্ব এশীয় বংশোদ্ভূতদের মধ্যে এমন কয়েকটি জিন শনাক্ত করেছেন গবেষকরা। বিশেষ ধরনের করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সক্ষম এসব জিনের উদ্ভব এখন থেকে প্রায় ২৫ হাজার বছর আগে। জিনগুলোর বিকাশ অব্যাহত ছিল পাঁচ হাজার বছর আগে পর্যন্ত। এর অর্থ হলো, প্রায় ২০ হাজার বছর ধরে ওই করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে মানুষ।

তবে পূর্বপুরুষদের ভোগানো প্রাচীন এই প্যাথোজেন যে করোনাভাইরাসই, সে বিষয়ে এখনও শতভাগ নিশ্চিত নন গবেষকরা।

এনার্ড জানান, করোনাভাইরাস যেভাবে মানবকোষের নিয়ন্ত্রণ নেয়, ঠিক সেভাবেই ওই ভাইরাসটি আক্রমণ করত। তবে হতে পারে সেটি করোনাভাইরাস নয়, অন্য কোনো ধরনের ভাইরাস।

এ বিভাগের আরো খবর