করোনাভাইরাসের ডেল্টা ধরনের বিরুদ্ধে ফাইজার বা অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কার্যকর, তা এরই মধ্যে বিভিন্ন প্রতিবেদনে প্রকাশ পেয়েছে।
তবে ভাইরাস মোকাবিলায় পুরোপুরি সুরক্ষা নির্ভর করছে টিকার কয়টি ডোজ নেয়া হয়েছে, তার ওপর।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী নেচারে বৃহস্পতিবার এ-সংক্রান্ত গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশ হয়।
এতে বলা হয়, ফাইজার বা অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রথম ডোজ করোনার ডেল্টা ধরনের বিরুদ্ধে দুর্বল বা একদমই কার্যকর নয়। সম্পূর্ণ সুরক্ষা পেতে টিকা দুটির প্রয়োজনীয় দুটি ডোজই নেয়া লাগবে।
ফাইজার বা অ্যাস্ট্রাজেনেকার একটি ডোজ নেয়া ব্যক্তিদের রক্তের নমুনা ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করেন গবেষকরা।
পরীক্ষার ফলে দেখা যায়, টিকার এক ডোজ নেয়ার পর ওই সব নমুনার মাত্র ১০ শতাংশের মধ্যে ডেল্টা ধরনকে অকার্যকর করার মতো অ্যান্টিবডি গড়ে উঠেছে। এর অর্থ উপসর্গযুক্ত করোনার সংক্রমণ থেকে তারা সুরক্ষিত।
তবে টিকার দুই ডোজ নেয়ার পর রক্তের নমুনাগুলোর ৯৫ শতাংশের মধ্যে ডেল্টার বিরুদ্ধে কার্যকর অ্যান্টিবডি দেখা যায়।
এর মাধ্যমে গবেষকরা এ সিদ্ধান্তে পৌঁছান যে, ডেল্টা ধরন আংশিক, তবে উল্লেখযোগ্যভাবে টিকার কারণে সৃষ্ট প্রতিরোধক্ষমতা এড়াতে পারে।
ল্যাবরেটরিতে প্রাপ্ত ফলের সঙ্গে অবশ্য বাস্তবতার হুবহু মিল পাওয়া যাবে না।
তবে অন্যান্য গবেষণা প্রতিবেদনেও দেখা যায়, টিকার একটি ডোজ প্রতিহত করার ক্ষমতা রাখে ভারতে প্রথম শনাক্ত হওয়া করোনার ডেল্টা ধরন।
চলতি বছরের মে মাসে যুক্তরাজ্যের এক গবেষণায়ও দেখা যায়, ফাইজার বা অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রথম ডোজ ডেল্টা ধরনের বিরুদ্ধে মাত্র ৩৩ শতাংশ কার্যকর।
দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার পর ডেল্টার বিরুদ্ধে ফাইজারের টিকা ৮৮ শতাংশ ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা ৬০ শতাংশ পর্যন্ত কার্যকর হয়ে ওঠে।
ফাইজারের দুটি ডোজ ডেল্টা ধরনে আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি ঠেকাতে ৯৬ শতাংশ কার্যকর। আর এ ক্ষেত্রে অ্যাস্ট্রাজেনেকার দুই ডোজ প্রায় ৯২ শতাংশ কার্যকর।
সব গবেষণা একত্র করলে এটি পরিষ্কার, টিকার প্রথম ডোজ নেয়া ব্যক্তিরা এখন আগের চেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকছেন।
কারণ এখন পর্যন্ত শনাক্ত হওয়া করোনার ধরনের মধ্যে ডেল্টা সবচেয়ে বেশি সংক্রামক ও ক্ষতিকর।
যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের অনেক দেশে তাণ্ডব চালাচ্ছে এই ধরন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৪৮ শতাংশ জনগোষ্ঠী করোনা প্রতিরোধী টিকার দুটি ডোজই নিয়েছে। আর দেশটির ৫৫ শতাংশ মানুষ টিকার একটি ডোজ নেয়।