ওজন কমাতে চোয়াল বন্ধ রাখার যন্ত্র উদ্ভাবন করেছেন একদল বিজ্ঞানী। এ যন্ত্রের মাধ্যমে মানুষ কেবল তরল খাবার খেতে পারবে, কঠিন নয়। আর এতে কমবে দেহের ওজন।
যুক্তরাষ্ট্র-কানাডার সংবাদমাধ্যম ভাইসের প্রতিবেদনে সোমবার এমনটাই বলা হয়েছে।
নিউজিল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অফ অটাগোর গবেষকেরা ‘ডেন্টালস্লিম ডায়েট কন্ট্রোল’ নামে ওজন কমাতে সহায়ক একটি যন্ত্র তৈরি করেন।
রোগীর ওপর ও নিচের পেছনের দাঁতে বল্টুযুক্ত চুম্বকীয় ওই যন্ত্র বসানো হয়। এ যন্ত্রের কারণে ঠিকমতো মুখ খোলা যায় না। আর খাওয়া সম্ভব হয় না কঠিন খাবার।
সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ইউনিভার্সিটি অফ অটাগো জানায়, যন্ত্রটি যিনি মুখে লাগাবেন, তিনি শুধু ২ মিলিমিটারের মতো তার মুখ খুলতে পারবেন। এ অবস্থায় তিনি কেবল তরল খাবারই খেতে পারবেন।
তবে ওই যন্ত্রের কারণে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে সমস্যা হবে না। কথাও স্বাভাবিকভাবে বলা যাবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, যন্ত্রটির ট্রায়ালে অংশগ্রহণকারীদের ওজন ২ সপ্তাহের মধ্যে গড়ে ৬.৩৬ কিলোগ্রাম কমে।
ডেন্টালস্লিম ডায়েট কন্ট্রোলের প্রধান গবেষক অধ্যাপক পল ব্রান্টন বলেন, মুখে দন্তচিকিৎসকের লাগানো এই যন্ত্র চাইলে ব্যবহারকারী জরুরি প্রয়োজনে বিশেষ টুলের সাহায্যে খুলে ফেলতে পারবেন। এটি ফের পরা যাবে আবার খোলাও যাবে।
অধ্যাপক ব্রান্টন বলেন, মূল বিষয় হচ্ছে, ওই যন্ত্রের কোনো ক্ষতিকারক ফল নেই।
তবে ইউনিভার্সিটি অফ অটাগোর বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত এই যন্ত্রের বিষয়ে অনেকে বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
কেউ কেউ এটিকে ‘বাজে’, ‘কুৎসিত’, ‘বিরক্তিকর’ ও ‘যন্ত্রণাদায়ক যন্ত্র’ হিসেবে অভিহিত করছেন।
সমালোচকদের ভাষ্য, শারীরিক, আর্থসামাজিক বাস্তবতাসহ অন্যান্য অনেক জটিল বিষয়ের ফল স্থূলতা। মানুষের মুখ বন্ধ করেই এটির সমাধান সম্ভব নয়।
অবশ্য সমালোচকদের জবাব দিতে ছাড়েননি ইউনিভার্সিটি অফ অটাগোর গবেষকেরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ‘পরিষ্কারভাবে বলতে গেলে, দ্রুত বা দীর্ঘমেয়াদি ওজন কমাতে এই যন্ত্র তৈরি করা হয়নি।
‘যেসব রোগীর সার্জারি করা প্রয়োজন কিন্তু ওজন বেশি থাকায় তারা তা করাতে পারছেন না, তাদের সহায়তার লক্ষ্যেই এটি বানানো হয়।’
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ইউনিভার্সিটি অফ অটাগো জানায়, আশির দশকে চোয়াল বন্ধ করার যন্ত্র জনপ্রিয় হয়।
তবে সে সময় ওই যন্ত্রের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়। বমি করার সময় বিষম খাওয়া, মাড়ির রোগসহ অন্যান্য বেশ কিছু ঝুঁকিপূর্ণ রোগ ওই যন্ত্র মুখে দেয়ার ফলে হয়।
ডেন্টালস্লিম ডায়েট কন্ট্রোলের প্রাথমিক ক্লিনিক্যাল অনুসন্ধানে দেখা যায়, কিছু শব্দ বলতে অংশগ্রহণকারীদের সমস্যা হচ্ছিল। মাঝেমধ্যে তারা উত্তেজিত ও বিব্রত বোধ করছিলেন।
‘তবে মুখের স্বাদে পরিবর্তন বা পান করার সময় অস্বস্তি বোধ করা, এমন অভিযোগ তেমন একটা কেউ করেননি।’
গবেষণায় বলা হয়, ডেন্টালস্লিম ডায়েট কন্ট্রোল ব্যবহারকারীরা খুব কমই অস্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। ২ সপ্তাহে সন্তোষজনক ওজন কমাতে তারা যন্ত্রটি মুখে দিতে রাজি ছিলেন।