বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

এই অণুজীবের আয়ু ২৪ হাজার বছর

  •    
  • ৯ জুন, ২০২১ ০২:২১

বয়স নির্ধারণে ব্যবহৃত রেডিওকার্বন পরীক্ষার মাধ্যমে প্রমাণ পাওয়া যায় এই ধরনের অণুজীবগুলো ২৪ হাজার বছর আগের। সব বাধা পেরিয়ে তারা এখনও জীবিত এবং বংশবিস্তারে সক্ষম। সোমবারের এই গবেষণা প্রকাশের আগে বিশ্বাস করা হতো, এই রোটিফারগুলো হিমাঙ্কের নিচে সর্বোচ্চ ১০ বছর টিকে থাকতে পারে।

অতিক্ষুদ্রাকার ও বহুকোষী প্রাণী বিডেলয়েডসের দেহে জটিল শারীরিক গঠন থাকায় এরা পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি বিকিরণ সহনীয় অণুজীব।

এরা তীব্র মাত্রার অম্লতা, অনাহার, কম মাত্রার অক্সিজেন এবং অনেক বছর ধরে চলা পানি শূন্যতা সহ্য করে টিকে থাকতে পারে।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীব বিজ্ঞানী ম্যাথিউ ম্যাসেলসন বলেন, ‘এরা (বিডেলয়েডস) বিশ্বে যেকোনো ধরনের প্রতিকূলতার মধ্যেও বেঁচে থাকতে পারে। সহনশীলতার বিবেচনায় এরা বিশ্বের সব প্রাণীকে ছাড়িয়ে গেছে।’

কারেন্ট বায়োলজি নামের একটি জার্নালে গত সোমবার প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, কয়েক হাজার বছর ধরে হিমাঙ্কের নিচের তাপমাত্রায় থাকার পরেও বিডেলয়েডস আবার জীবিত হয়ে উঠে।

সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমন তথ্য।

এরা হচ্ছে গুটি কয়েক টেনসি গোত্রের প্রাণী যা অবিশ্বাস্যরকমভাবে পুরোপুরি অপ্রতিকূল পরিস্থিতিতে বেঁচে থাকার জন্য সুপরিচিত।

গবেষণার জন্য বিজ্ঞানীরা উত্তর-পূর্ব সাইবেরিয়ায় পারমাফ্রস্টের (মাটির নিচে বরফের স্তর) মধ্যে প্রায় ১১ ফুট খনন করে এই জাতীয় শক্তিশালী অণুজীবগুলোর নমুনা সংগ্রহ করেন।

প্রাচীন এসব পারমাফ্রস্টের মধ্যে আবদ্ধ অবস্থায় ১৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রায় নিচে হাজার হাজার বছর ধরে টিকে রয়েছে এ ধরনের অণুজীব।

গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ওডস হোলে অবস্থিত মেরিন বায়োলজিকাল ল্যাবরেটরির বিজ্ঞানী ক্রিস্টিন গ্রিবল বলেন, ‘তীব্র ক্ষমতাসম্পন্ন এই সব অণুজীব (রোটিফার) চরম প্রতিকূল পরিবেশ সহ্য করে বেঁচে থাকার এটি আরও একটি উদাহরণ।’

বয়স নির্ধারণে ব্যবহৃত রেডিওকার্বন পরীক্ষার মাধ্যমে প্রমাণ পাওয়া যায় এই ধরনের অণুজীবগুলো ২৪ হাজার বছর আগের। সব বাধা পেরিয়ে তারা এখনও জীবিত এবং বংশবিস্তারে সক্ষম।

সোমবারের এই গবেষণা প্রকাশের আগে বিশ্বাস করা হতো, এই রোটিফারগুলো হিমাঙ্কের নিচে সর্বোচ্চ ১০ বছর টিকে থাকতে পারে।

আমাদের চারপাশে শ্যাওলাযুক্ত আর্দ্র স্তূপ, বৃষ্টির পানি, পাখির স্নানের পানি এবং আর্কটিক ও গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চল এবং এর মধ্যবর্তী সব মিঠা পানিতেই রয়েছে বিডেলয়েড রোটিফার।

মাইক্রোস্কোপের আবিষ্কারের পর থেকেই এদের নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।

১৭০২ সালে, অ্যান্টনি ভ্যান লিউয়েনহোয়েক তার বাড়ির ড্রেনের পানিতে বিডেলয়েড শনাক্ত করেন যাদের তিনি নাম দেন ‘ক্ষুদ্র গোলাকার অণুজীব।’

কিন্তু বিজ্ঞানীরা এখনও ঠিক বুঝতে পারছেন না যে কীভাবে বিডেলয়েড রোটিফারগুলো তাদের কোষ এবং অঙ্গগুলো ভয়াবহ বিপর্যয়কর পরিস্থিতিতে সুরক্ষিত রাখতে পারে। এবং ভেঙে যাওয়া ডিএনএগুলো আবারও সারিয়ে তুলতে পারে।

নিজেদের টিকিয়ে রাখতে এই অণুজীবগুলোর জৈবিক কৌশলগুলোর ওপর আরও বেশি গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে। তাদের কোষ, টিস্যু ও অঙ্গ সুরক্ষার এই রহস্য উম্মোচিত হলে তবে মানুষসহ অন্যান্য প্রাণীদের কোষ ও টিস্যু হাজার বছর টিকিয়ে রাখার যাবে বলে আশা ব্যক্ত করেন বিজ্ঞানীরা।

এ বিভাগের আরো খবর