যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে দেখা দেয়া ‘আনআইডেন্টিফায়েড ফ্লাইং অবজেক্ট’ (ইউএফও) বা মানবজগতে অপরিচিত উড়ন্ত বস্তু আসলে কী ছিল, সে রহস্যের কিনারা হচ্ছে না।
ডয়েচে ভেলের প্রতিবেদনে জানানো হয়, সমাধান ছাড়াই এ বিষয়ে একটি গোয়েন্দা প্রতিবেদন চলতি মাসের শেষে জমা দেয়া হবে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে।
সত্যিই ইউএফও দেখা গেছে বলে ধারণার কথা স্বীকার করেছেন গোয়েন্দারা। কিন্তু যেসব ইউএফও দেখা যাওয়ার কথা হচ্ছে, সেগুলো আসলেই ভিনজগতের প্রাণীদের মহাকাশযান কি না, সে প্রশ্নেরও উত্তর মেলেনি। এ প্রশ্নের কারণেই দীর্ঘ হলো এলিয়েনে বিশ্বাসীদের অপেক্ষা।
এই প্রতিবেদনটি জমা দিতে গত বছরের শেষ দিকে আনআইডেন্টিফায়েড এরিয়াল ফেনোমেনা (ইউএপি) টাস্কফোর্সকে নির্দেশ দিয়েছিল কংগ্রেস।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, সামরিক পাইলটদের চোখে ধরা পড়া উড়ন্ত বস্তুগুলো আসলেই এলিয়েনদের তৈরি করা অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মহাকাশযান কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে ইউএপি টাস্কফোর্স।
প্রতিবেদনে গত কয়েক বছরে ঘটে যাওয়া বেশ কয়েকটি ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে, যেগুলোর প্রমাণ হিসেবে ধারণ করা ভিডিও আছে। কিন্তু এসব ঘটনার কোনো ব্যাখ্যা নেই।
এ অবস্থায় এলিয়েনের অস্তিত্বের নিশ্চিত প্রমাণ না মিললেও প্রতিবেদনে ভিনগ্রহে প্রাণীদের পৃথিবীতে আসার সম্ভাবনা উড়িয়েও দেয়া হয়নি।
নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, গত ২০ বছরের প্রায় ১২০টি ঘটনা খতিয়ে দেখে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। এসব ঘটনার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে গোপন সামরিক তৎপরতা বা সরকারি প্রযুক্তির কোনো সম্পর্ক নেই।
বিশ্বজুড়ে কয়েক দশক ধরে বহুল আলোচিত বিষয় এলিয়েনের অস্তিত্ব। এ নিয়ে জল্পনা যত বাড়ছে, ততই জটিল হচ্ছে এ রহস্য।
আধুনিক বিজ্ঞানের যুগেও বিষয়টির মীমাংসা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকায় এ নিয়ে নানা রকম ষড়যন্ত্র তত্ত্বও তৈরি হয়েছে।
সতর্ক পেন্টাগন
ইউএফও নিয়ে মানুষের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে বৈমানিকদের চোখে বারবার ইউএফও দেখা দেয়া নিয়ে বিপুলসংখ্যক ভিডিওর ছড়াছড়ি রয়েছে অনলাইনে। এগুলো মানুষের কৌতূহল আরও বাড়িয়েছে।
অনেকে আবার বলেন, রাশিয়া-চীনের মতো দেশের অত্যাধুনিক সামরিক ও নজরদারিবিষয়ক প্রযুক্তির ফসল এগুলো।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবি গত শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘প্রচলিত সব ধারণাকেই গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছি আমরা। আমাদের আকাশসীমা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। কারণ এর সঙ্গে আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টিও সম্পৃক্ত।’
দ্য টাইমস জানিয়েছে, মূল প্রতিবেদন জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দেবে যুক্তরাষ্ট্রের সরকার। তবে প্রতিবেদনে কী সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন গোয়েন্দারা, সে বিষয়টি গোপন থাকবে।
ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, এলিয়েনের অস্তিত্বের প্রশ্নে সম্ভবত কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারেননি গোয়েন্দারা।