বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সোয়া ২ কোটি বছর ধরে পৃথিবীর পথে ছিল গ্রহাণুটি

  •    
  • ২৩ এপ্রিল, ২০২১ ১৬:৪৫

বিশ্লেষণে বেরিয়ে আসে, গ্রহাণুটির একদম মাঝের লুকোনো অংশ ছিল ২০১৮এলএ। আর দুই কোটি ২০ লাখ বছর আগে কোনো কারণে গ্রহাণুতে আঘাতের ফলে এ অংশটি বেরিয়ে আসে; শুরু হয় মহাকাশে সেটির অনন্ত যাত্রা।

পৃথিবীর দিকে ছুটে আসা বিশাল আকৃতির একটি গ্রহাণুর দুই কোটি ২০ লাখ বছরের যাত্রাপথের মানচিত্র এঁকেছেন নভোচারীরা।

কোনো গ্রহাণুর যাত্রাপথের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পুরোটাই এক মানচিত্রে নিয়ে আসার ঘটনা এটিই প্রথম।

দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ছয় টন ওজনের গ্রহাণুটি আমাদের সৌরজগতে প্রবেশের পর বতসোয়ানার আকাশে বিস্ফোরিত হয় প্রায় তিন বছর আগে। এর ফলে সে সময় আফ্রিকার কালাহারি মরুভূমির আকাশজুড়ে দেখা গিয়েছিল অভূতপূর্ব উল্কাপাত।

ভেস্তা নামের গ্রহাণুটি বৃহস্পতি ও মঙ্গল গ্রহের মাঝামাঝি অবস্থানে থেকে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করেছিল।

২০১৮ সালের জুনে ঘণ্টায় ৩৭ হাজার মাইল বেগে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করেছিল ভেস্তা। মাধ্যাকর্ষণের তীব্রতায় বায়ুমণ্ডলের সঙ্গে সংঘর্ষে এক পর্যায়ে বিস্ফোরিত হয় সেটি।

এর ফলে কালাহারির মধ্যাঞ্চলের আকাশে দেখা গিয়েছিল অসংখ্য জ্বলন্ত উল্কাপিণ্ড।

তাৎক্ষণিক অনুসন্ধানে কালাহারিতে পড়া একটি ছোট উল্কাও খুঁজে পান বিজ্ঞানীরা, যার নাম দেয়া হয় মোটোপি প্যান।

যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা ও হাওয়াই থেকে চাঁদ দেখার টেলিস্কোপ ব্যবহার করে এটি পর্যবেক্ষণ করছিলেন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার গবেষকরা।

গ্রহাণুটি বিস্ফোরণের পর তারা অস্ট্রেলিয়ার নভোচারীদের কাছে তথ্য চেয়ে পাঠান। জানতে চান নিউ সাউথ ওয়েলসে অবস্থিত স্কাইম্যাপার টেলিস্কোপে গ্রহাণুটির ছবি ধরা পড়ছে কি না।

ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণগহ্বরের মতো মহাজাগতিক বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ করে স্কাইম্যাপার।

অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবে অস্ট্রেলীয় গবেষকরা জানান, তাদের টেলিস্কোপও গ্রহাণুটির ছবি তুলেছে।

অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির মহাকাশ গবেষক ক্রিস্টিয়ান উলফ বলেন, ‘আমেরিকান বিজ্ঞানীরা না জানালে আমরা হয়তো গ্রহাণুটা খেয়ালই করতাম না। কালাহারির দিকে কখনো নজর দিইনি আমরা।

‘তবে আপনার কাজ যখন ১০০ কোটি আলোকবর্ষ দূরত্বের মধ্যে অবস্থিত অসংখ্য ব্ল্যাক হোল পর্যবেক্ষণ করা, তখন কালাহারি আসলে ঘরের পাশের জায়গা।’

তিনটি টেলিস্কোপ থেকে পাওয়া গ্রহাণুটির ছবি জোড়া লাগিয়ে শেষ পর্যন্ত যা পাওয়া গেল, সেই স্ন্যাপশটে থাকা গ্রহাণুর খণ্ডাংশের নাম দেয়া হয়েছে ২০১৮এলএ। এটি ধরেই পাথুরে বস্তুটির উৎসের খোঁজে লেগে পড়েন বিজ্ঞানীরা।

বেরিয়ে আসে গ্রহাণু ভেস্তার অস্তিত্ব। ৩০০ মাইল চওড়া গ্রহাণুটি মাঝে মাঝে টেলিস্কোপ ছাড়াও দেখা যেত।

বিশদ গবেষণায় খোঁজ মেলে কালাহারির বুকে তিন মাইল এলাকাজুড়ে আরও কমপক্ষে ২০টি উল্কার।

বিশ্লেষণে বেরিয়ে আসে, গ্রহাণুটির একদম মাঝের লুকোনো অংশ ছিল ২০১৮এলএ। আর দুই কোটি ২০ লাখ বছর আগে কোনো কারণে গ্রহাণুতে আঘাতের ফলে এ অংশটি বেরিয়ে আসে; শুরু হয় মহাকাশে সেটির অনন্ত যাত্রা।

উল্কার ভেতরে সবচেয়ে প্রাচীন পাতা জাতীয় কিছুর আবিষ্কার থেকে জানা যায়, এটি কমপক্ষে ৪৫৬ কোটি বছর আগের, যে সময়ে আমাদের সৌরজগৎ জন্মের পথে ছিল।

মহাকাশবিজ্ঞান সাময়িকী মেটেয়রিটিক্স অ্যান্ড প্ল্যানেটারি সায়েন্সে প্রকাশ হয় সম্পূর্ণ গবেষণা প্রতিবেদনটি।

এ বিভাগের আরো খবর