করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বয়স্ক রোগীর চিকিৎসায় অপেক্ষাকৃত সস্তা ও সহজলভ্য অ্যাজমার একটি ওষুধ বেশ কার্যকর বলে উঠে এসেছে গবেষণায়।
দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, ৬৫ বছর ও ৫০ বছরের বেশি বয়সী করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের ওপর ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে দেখা গেছে, বিউডেসোনাইড ইনহেলারে তাদের শারীরিক জটিলতা কমেছে এবং তারা দ্রুত রোগমুক্ত হয়েছেন।
বাংলাদেশে ইনসেপ্টা, একমি, স্কয়ার, অ্যারিস্টোফার্মা, হেলথকেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান বিউডেসোনাইড ইনহেলার ও ক্যাপসুল উৎপাদন করছে।
দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রায়ালে অংশ নেয়া ব্যক্তিদের টানা দুই সপ্তাহ দিনে দুই বার করে এই ইনহেলার দেয়া হয়। দেখা গেছে, যাদের ওই ইনহেলার দেয়া হয়নি, তাদের চেয়ে ইনহেলার নেয়া ব্যক্তিরা দ্রুত ভালো বোধ করছেন এবং সুস্থ হয়ে উঠছেন।
গবেষকেরা বলছেন, ট্রায়ালের এই ফল বিশ্বজুড়ে করোনা চিকিৎসার ধরন বদলে দিতে পারে। অনেক দেশেই অল্প সংখ্যক করোনা রোগী হাসপাতালে ভর্তি হতে পারছেন। এমন অবস্থায় ঘরে থেকেই অনেকে এই ইনহেলারের সাহায্যে সুস্থ হতে পারেন।
গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রি প্রিন্ট জার্নাল মেডআর্কাইভে প্রকাশিত হয়েছে। এটি পিআর রিভিউয়ের অপেক্ষায় রয়েছে।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ক্রিস বাটলার দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, ‘গবেষণায় দেখা গেছে, অপেক্ষাকৃত সস্তা, সহজলভ্য, খুবই কম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার এই অ্যাজমার ওষুধ করোনায় আক্রান্তদের দ্রুত সুস্থ করে। আরোগ্যের পর তারা ভালো থাকেন। এ ছাড়া শারীরিক স্বাস্থ্যেরও উন্নতি ঘটে তাদের।’
বাটলার বলেন, ‘আমরা মনে করি, বিশ্বে করোনা চিকিৎসায় নিয়োজিত ব্যক্তিরা আমাদের গবেষণালব্ধ প্রতিবেদন যাচাই বাছাই করবেন। কারণ এ চিকিৎসাপদ্ধতি করোনায় আক্রান্তদের দ্রুত সুস্থ করবে।’
ট্রায়ালে করোনা রোগীদের টানা দুই সপ্তাহ দিনে দুইবার ৮০০ মাইক্রোগ্রাম বিউডেসোনাইড ইনহেল করতে বলা হয়। ২৮ দিন তাদের ফলো আপে রাখা হয়।
দেখা যায়, নির্ধারিত সময়ের তিন দিন আগেই ওই রোগীরা সুস্থ হয়েন। এ ছাড়া তাদের মধ্যে ৩২ শতাংশ ১৪ দিনের মধ্যে আরোগ্য লাভ করেন। ২৮ দিনের মাথায় ভালো ছিলেন তারা।
বাটলারের সহকর্মী অধ্যাপক রিচার্ড হবস বলেন, ‘ঘরে চিকিৎসার ক্ষেত্রে বিউডেসোনাইড কার্যকর একটি ওষুধ। করোনা চিকিৎসার শুরুর দিকে এটি নিলে উপকার পাওয়া যাবে। আমাদের গবেষণার ফল মহামারি চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। কমিউনিটিভিত্তিক গবেষণায় এটি অনেক বড় অর্জন।’