বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

দৃষ্টিহীনের সহায় হবে ‘টকিং গ্লাস’

  •    
  • ২৩ মার্চ, ২০২১ ০৮:৩১

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ও ইন্টারনেট অফ থিংস (আইওটি) প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে এই টকিং গ্লাসে। এতে সংযুক্ত ক্যামেরা স্থির চিত্র নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ছবির বিবরণ ব্যবহারকারীকে পড়ে শোনাবে। একজন স্বাভাবিক মানুষ যেভাবে বই পড়তে পারেন, ঠিক একইভাবে শুনতেও পারবেন দৃষ্টিহীনরা।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন ছাত্রের দুই বছরের চেষ্টায় দৃষ্টিহীনদের জন্য উদ্ভাবন করা হয়েছে ‘টকিং গ্লাস’ নামে একধরনের চশমা। এটি ব্যবহার করে সামনে কী লেখা রয়েছে বা সামনে কে দাঁড়িয়ে আছে তার নাম জানা এবং যেকোনো বস্তু শনাক্ত করাসহ নানা উপকার মিলবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণির তিন শিক্ষার্থীর কাজে সহযোগিতা করেছেন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দুই শিক্ষকও।

এই নতুন উদ্ভাবনের অনুরূপ কোনো ডিভাইস বা প্রযুক্তি, জাতীয় বা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এখন পর্যন্ত আবিষ্কার হয়নি বলে দাবি করেছেন গবেষকরা। সরকারের আইসিটি বিভাগের এটুআই-এর ডিজেবিলিটি চ্যালেঞ্জ ফান্ডে ২০১৮ সালে এই প্রকল্প নেয়া হয়।

উদ্ভাবক দলের নেতৃত্বে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৩-১৪ সেশনের শিক্ষার্থী সোহেল মাহমুদ, রিপন চন্দ্র দাস এবং ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী বিপুল মণ্ডল।

প্রকল্পের তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন ওই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রাহাত হোসাইন ফয়সাল এবং সহতত্ত্বাবধায়ক সহকারী অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান রাজু।

গবেষক রিপন চন্দ্র দাস নিউজবাংলাকে জানান, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ও ইন্টারনেট অফ থিংস (আইওটি) প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে এই টকিং গ্লাসে। এতে সংযুক্ত ক্যামেরা স্থির চিত্র নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ছবির বিবরণ ব্যবহারকারীকে পড়ে শোনাবে। একজন স্বাভাবিক মানুষ যেভাবে বই পড়তে পারেন, ঠিক একইভাবে শুনতেও পারবেন দৃষ্টিহীনরা।

ভয়েস কমেন্টের মাধ্যমে যেকোনো তথ্য সেভ করে রাখা যাবে। এই চশমা ব্যবহারকারীর সামনে কোনো ব্যক্তি বা বস্তু থাকলে নামসহ শনাক্ত করতে পারবে এবং তাৎক্ষণিকভাবে তা জানিয়ে দেবে বলেও জানান তিনি।

টকিং গ্লাস উদ্ভাবনের সুপারভাইজার কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রাহাত হোসাইন ফয়সাল বলেন, ‘এই চশমাটি তৈরি করতে আমাদের দুই বছর ধরে কাজ করতে হয়েছে। সাধারণ মানুষ জীবনকে যেভাবে উপভোগ করেন, এই চশমা ব্যবহার করলে একজন দৃষ্টিহীনও একইভাবে জীবনকে উপভোগ করতে পারবেন। নরমাল হিউম্যানের মতোই তারা ফিল করতে পারবেন। এটা মানুষকে আইডেন্টিফাই করবে। আমরা এখানে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করেছি।’

টকিং গ্লাসের উদ্ভাবক শিক্ষার্থী সোহেল মাহমুদ বলেন, ‘আমার ইচ্ছা এই ডিভাইসে আরও সুন্দর কিছু ফিচার যুক্ত করে খুব শিগগিরই দৃষ্টিহীনদের কাছে পৌঁছে দেয়া। ডিভাইসটি হেলপার হিসেবে কাজ করবে। যখন একজন দৃষ্টিহীন ব্যক্তির কাছে কোনো মানুষ থাকবে না, তখনও ওই ব্যক্তি নিজেকে স্বাবলম্বী ভাবতে পারবেন। তিনি নিজ থেকে পথ তৈরি করতে পারবেন। অন্যের উপর নির্ভরশীলতা কমে যাবে। এটি শুধু যে একজন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মানুষ ব্যবহার করবেন তা নয়, বরং একজন স্বাভাবিক মানুষও ব্যবহার করতে পারবেন। একাকিত্বের সময় গান শুনতে পারবেন এই ডিভাইসে।

‘এর ইন্টারনাল কার্যক্রম হলো, এই ডিভাইস থেকে একটা পিকচার নিয়ে ওই পিকচারটি প্রসেস করে অডিও হিসেবে ইউজারকে শুনিয়ে দেবে। প্রাথমিকভাবে টকিং গ্লাসটিতে মোট ছয়টি ফিচার যুক্ত করা হয়েছে। এগুলো হলো অপটিক্যাল ক্যারেক্টার রিকগনিশন (ওসিআর), ফেস রিকগনিশন, অবজেক্ট ডিটেকশন, অবজেক্ট রিকগনিশন, কারেন্সি রিকগনিশন, ডিরেকশন ডিটেকশন, লোকেশন আইডেন্টিফিকেশন। অর্থাৎ এটি মানুষের চেহারা চিহ্নিতকরণ এবং পূর্ব-পশ্চিম, উত্তর-দক্ষিণসহ বিভিন্ন দিক নির্ণয়, কোনো বস্তু দেখলে তার নামসহ চিহ্নিতকরণ, বাংলা, ইংরেজি বই পড়া থেকে শুরু করে কোনটা কত টাকার নোট তাও নির্ণয় করতে পারবে।’

এ বিভাগের আরো খবর