পৃথিবী থেকে কোটি কোটি কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে বৃহস্পতিবার রক্তিম গ্রহ মঙ্গলের মাটি স্পর্শ করে নাসার পারসেভারেন্স বা ‘অধ্যবসায়’ রোভার।
ছয় চাকার এই রোভার মঙ্গলের মাটিতে অন্তত দুই বছর অবস্থান করবে। গ্রহটির পাথুরে মাটি খুঁড়ে প্রাণের অস্তিত্বের প্রমাণ খুঁজবে এটি।
যে বিশাল প্যারাস্যুটের সাহায্যে রোভারটি অবতরণ করে মঙ্গলের রুক্ষ মাটিতে, সেই প্যারাস্যুটে একটি গোপন বার্তা লুকিয়ে রেখেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থার বিজ্ঞানীরা।
আর রোভার অবতরণের মাত্র ছয় ঘণ্টার মধ্যেই সেই বার্তা উদ্ঘাটন করেছেন পৃথিবীর কিছু কম্পিউটার জিনিয়াস।
মঙ্গলের বুকে অধ্যবসায়কে নিরাপদে নামতে ব্যবহার করা প্যারাস্যুটে ছিল লাল-সাদার অজস্র রেখা। সাধারণ চোখে এর মধ্যে বিশেষত্ব খুঁজে পাওয়া অসম্ভব। তবে বিভিন্ন দেশের কম্পিউটার জিনিয়াসেরা ওই রেখাগুলোর মধ্যেই খুঁজে পেয়েছেন একটি বাক্য, ‘ডেয়ার মাইটি থিংস’; বাংলায় অর্থটি অনেকটা এ রকম- ‘সাহসী কাজে নির্ভীক’।
অধ্যবসায়ের প্যারাস্যুটে এভাবেই বাইনারি কোডে লেখা ছিল বার্তা
রোভার অবতরণের দৃশ্য সরাসরি সম্প্রচারের আগে নাসার বিজ্ঞানীদের একটি অংশ ছাড়া আর কেউই প্যারাসুটে এই লুকানো বার্তা সম্পর্কে কিছুই জানতেন না। অধ্যবসায় মিশনের নেতৃত্ব দেয়া নাসার জেট প্রোপালশন ল্যাবরেটরি অনানুষ্ঠানিকভাবে অনেক দিন ধরেই ‘ডেয়ার মাইটি থিংস’ স্লোগানটি নিজেদের বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করছে।
আর অধ্যবসায়ের প্যারাস্যুটে বাইনারি কোডে (১০১০১০) লেখা ছিল ওই স্লোগানটি। বার্তাটি উদ্ঘাটনের পর নাসার প্রধান প্রকৌশলী অ্যাডাম স্টেল্টজনার বেশ বিস্মিত। তিনি বলেন, ‘দেখে মনে হচ্ছে ইন্টারনেট কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কোডটি ধরে ফেলেছে! ইন্টারনেটে এমন কিছু কি আছে, যা আপনি করতে পারবেন না?’
নাসার সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার আয়ান ক্লার্ক বৃহস্পতিবার অবতরণের আগে এই গোপন বার্তা সম্পর্কে নাসার ভেতরেই মাত্র ছয়জন জানতেন। ছবি প্রকাশের মাত্র ছয় ঘণ্টার মধ্যে এই রহস্য উদ্ঘাটন হয়ে যাবে, তা নাসাও ভাবতে পারেনি।
‘ডেয়ার মাইটি থিংস’ শব্দ তিনটি নেয়া হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট থিওডোর রুজভেল্টের একটি জনপ্রিয় উদ্ধৃতি থেকে। আর সেটি হলো, ‘Far better it is to dare mighty things, to win glorious triumphs, even though checkered by failure.’