রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছুরিকাঘাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। নিহত শিক্ষার্থীর নাম শাহরিয়ার আলম সাম্য। তিনি শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী এবং ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন।
মঙ্গলবার মধ্যরাতে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঢামেক ফাঁড়ির ইনচার্জ জানান, নিহতের ডান পায়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাত ছিল। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে।
শাহরিয়ারের বন্ধুরা জানিয়েছেন, রাত সাড়ে ১২টার দিকে শাহরিয়ার ও তার দুই বন্ধু উদ্যানে বাইক চালানোর সময় আরেকটি বাইকের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায়ে অপরপক্ষের কয়েকজন যুবক শাহরিয়ারকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। তারা জানান, হামলাকারীরা ঢাবির শিক্ষার্থী নন।
ঘটনার পর প্রক্টরিয়াল টিমসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর হাসপাতালে ছুটে যান। এদিকে শাহরিয়ারের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করে পদত্যাগের দাবি জানান। এ সময় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান বেরিয়ে এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন।
পরে উপাচার্যের নেতৃত্বে একটি মিছিল রাজু ভাস্কর্য পৌঁছলে শিক্ষার্থীরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঢুকে যায় আর উপাচার্য চলে যান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। উদ্যানে ঢুকে আন্দোলনকারীরা কয়েকটি দোকান ভাঙচুর করেন এবং ভবঘুরে ও মাদকাসক্তদের সেখান থেকে বের করে দেন।
উপাচার্য হাসপাতালে গেলে ছাত্রদল নেতাকর্মীরা উপাচার্যকে শাহরিয়ারের মুখ দেখতে বাধা দেন এবং তার পদত্যাগের স্লোগান দিতে থাকেন। পরে উপাচার্য বাসায় ফিরে যান। রাত তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ও অন্যান্য শিক্ষকরাও হাসপাতালে উপস্থিত হন। এসময় আবার হাসপাতালে আসেন উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান।
এদিকে উপাচার্যের বাসার সামনে আয়োজিত এক বিক্ষোভে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন বলেন, গত ৯ মাসে ক্যাম্পাসে দুটি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, অথচ প্রশাসন নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ। এজন্য উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করা হচ্ছে। বেলা ১১টায় তারা বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর জানান, পুলিশ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে এবং বাকি অভিযুক্তদের আটকের চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে।