বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

দালালের অত্যাচারে লিবিয়ায় ভৈরবের যুবকের মৃত্যু

  • ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি   
  • ৭ এপ্রিল, ২০২৫ ১৬:২৬

দালালের অত্যাচারে লিবিয়ায় কিশোরগঞ্জের ভৈরবের সোহাগ মিয়া (২৮) নামের এক যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ৩০ মার্চ মৃত্যুর খবর পায় নিহতের পরিবার। নিহত যুবক পৌর শহরের কালিপুর দক্ষিণ পাড়ার সোবহান মিয়া বাড়ির মৃত নূর মোহাম্মদ মিয়ার ছেলে। লিবিয়ায় নিহত সোহাগের রুমমেট দেলোয়ারের মাধ্যমে খবর পেয়ে তথ্য নিশ্চিত করেন নিহতের বড়ভাই সুজন মিয়া।

জানা যায়, পরিবারে তিন ভাইয়ের মধ্যে সোহাগ দ্বিতীয়। দীর্ঘ ৮ বছর তিনি কাতারে অবস্থান করছিলেন। ১ বছর আগে দেশে এসে বিয়ে করেন। এরপর নরসিংদীর বেলাবোর বারৈচা এলাকার সেন্টু মিয়ার মাধ্যমে ১৬ লাখ টাকার চুক্তিতে ইউরোপের দেশ ইতালি যেতে লিবিয়ায় পাড়ি জমান সোহাগ। এক মাসের ভেতর ভূমধ্যসাগর দিয়ে ইতালি পৌঁছার কথা থাকলেও দীর্ঘ ৭ মাস ধরে তাকে লিবিয়ায় আটকে রাখা হয়। সেই সঙ্গে তাকে মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার করতে থাকে দালালচক্র। এ অত্যাচারের ফলে ১ সপ্তাহ আগে অসুস্থ হলেও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করায়নি দালালরা। গত ৩০ মার্চ রোববার রাত ২টায় গুরুতর অসুস্থ হলে লিবিয়ার একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহতের ভাই সুজন মিয়া বলেন, ‘আমি ইতালিতে দীর্ঘদিন ধরে অবস্থান করছি। আমার ভাই কাতারে ভালো অবস্থানে ছিল। এত বছর আগে দেশে এসে বিয়ে করেন। তার সংসারে নুসাইবা নামে ৩ মাসের একটি কন্যা-সন্তান রয়েছে। ৭ মাস আগে দালালের সঙ্গে ১৬ লাখ টাকা চুক্তিতে লিবিয়া যায় আমার ভাই। প্রথমে ৫ লাখ টাকা দেওয়ার পর ১ মাস পর ইতালিতে পৌঁছানোর কথা বলে পুরো ১৬ লাখ টাকা নেয় আমার কাছ থেকে। কিন্তু টাকা দেওয়ার ৬ মাস অতিবাহিত হলেও আমার ভাইকে ইতালিতে পাঠায়নি। দালালের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চেষ্টা করলেও কোনোভাবেই যোগাযোগ করতে পারিনি। এদিকে আমার ভাইকে না খাইয়ে বিভিন্ন সময় মারধোর করে ও নানাভাবে অত্যাচারে করে দালালচক্র। আমার ভাই অসুস্থ হওয়ার পর তাকে চিকিৎসা করায়নি। আজ চিকিৎসার অভাবে আমার ভাই সেখানে মৃত্যুবরণ করেছে।’

এদিকে প্রবাসে দালালের অত্যাচারে সোহাগের মৃত্যুর খবর পেয়ে তার মা ও স্ত্রী বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। নিহতের স্ত্রী লিজা বেগম বলেন, ‘দালালের অবহেলায় আমার স্বামী মারা গেছে। আমি আমার তিন মাসের সন্তান নিয়ে কোথায় যাব। আমার পরিবারের কী হবে।’ এ কথা বলতে বলতে কান্নায় লুটিয়ে পড়েন। স্বামীর লাশ ফিরে পেতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি। সেই সঙ্গে দালালচক্রের বিচারের দাবি জানান শিশু কন্যার জননী লিজা বেগম।

এ ব্যাপারে দালাল সেন্টু মিয়ার সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলতে চেষ্টা করা হলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শবনম শারমিন জানান, ওই যুবক যদি সরকারিভাবে প্রবাসে গিয়ে থাকেন, তাহলে বিষয়টি প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও শ্রম কল্যাণ মন্ত্রণালয় দেখবে। নিহতের পরিবার আমার কাছে এলে সর্বোচ্চ সহযোগিতা দেওয়ার চেষ্টা করব। নিহতের পরিবার যাতে মরদেহ ফিরে পায়, সেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

এ বিভাগের আরো খবর