বাংলাদেশে প্রতিদিন অন্তত ৫০ শিশু পানিতে ডুবে মারা যায় বলে জানিয়েছে সোসাইটি ফর মিডিয়া এ্যান্ড সুইটাবেল হিউম্যান কমিউনিকেশন টেকনিকস (সমষ্টি)।
বেসরকারি এই প্রতিষ্ঠানটি মঙ্গলবার সকালে নীলফামারীতে তাদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধনকালে এই তথ্য জানিয়েছে।
সংস্থাটির করা এক জরিপের তথ্য অনুযায়ী, বছরে অন্তত ১২ হাজার শিশুর মৃত্যু হয় পানিতে ডুবে।
সাংবাদিকদের নিয়ে ‘পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যু’ বিষয়ক দুদিনের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে সমষ্টি। সেটির উদ্বোধন করেন নীলফামারীর জেলা প্রশাসক (ডিসি) খন্দকার ইয়াসির আরেফীন।
ডিসি বলেন, ‘পানিতে ডুবে বিচ্ছিন্নভাবে মারা যায় বলেই এ নিয়ে আমাদের তেমন গুরুত্ব থাকে না, কিন্তু যেই মা বা যেই বাবা সন্তান হারান তিনিই বুঝেন এর বেদনা।
‘এখন আমাদের ভাবার সময় এসেছে। পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যু রোধে সবাইকে সচেতন হতে হবে এবং সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। ভবিষ্যতে আর যেন একটি শিশুও পানিতে ডুবে মারা না যায়, সে প্রত্যয় নিয়ে কাজ করতে হবে।’
ওই অনুষ্ঠানে ছিলেন গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটরের (জিএইচএআই) বাংলাদেশ প্রধান মোহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস, একই সংস্থার কমিউনিকেশন ম্যানেজার সারওয়ার ই আলম এবং সমষ্টি ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
জিএইচএআই-এর কমিউনিকেশন ম্যানেজার সারওয়ার ই আলম বলেন, ‘বিশ্বে প্রতি বছর পানিতে ডুবে মারা যায় ২ লাখ ৩৫ হাজার শিশু। এর মধ্যে ১ থেকে ১৪ বছর বয়সি শিশুর সংখ্যা ৯০ ভাগ।
‘পানিতে ডুবে মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টার মধ্যে। আর এসব শিশু যারা মারা গেছে তারা সবাই অস্বচ্ছল দরিদ্র পরিবারের। কারণ এই সময়ে বাবা-মা সবাই ব্যস্ত থাকেন কাজে। বাবা-মায়ের কাজের ফাঁকেই চোখের আড়ালে বাড়ির নিকটবর্তী পুকুরে বা জলাশয়ে পড়ে মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটে।’
সচেতনতা সৃষ্টি, ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপন, প্রশাসনিক পদক্ষেপ ও রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ ছাড়া এই মৃত্যু কমানো সম্ভব নয় বলে জানান তিনি।
জিএইচএআই-এর বাংলাদেশ প্রধান মোহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস বলেন, ‘অসচেতনতায় পানিতে ডুবে শিশু মারা যাচ্ছে। এর ফলে ক্ষতি হচ্ছে বাবা-মায়ের পাশাপাশি পরিবারের এমনকি রাষ্ট্রের। এ জন্য তৃণমুল থেকে যথাযথ উদ্যোগ নিয়ে আর যেন পানিতে ডুবে শিশু মারা না যায় এজন্য সম্মিলিত উদ্যোগ নিতে হবে।
‘এই কাজে মিডিয়ার ভুমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ। এ লক্ষ্যে এ সংক্রান্ত সংবাদ তৈরি, সচেতনতা সৃষ্টি এবং ওয়াচ ডগ হিসেবে আমরা সাংবাদিকদের নিয়ে কাজ শুরু করেছি।’
এই প্রশিক্ষণে নীলফামারী জেলার ২৫ সংবাদকর্মী অংশ নিচ্ছেন বলে জানায় আয়োজকরা।