শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবিকে ন্যায্য দাবি সমর্থন করে সংহতি সমাবেশ করেছে ঠাকুরগাঁওবাসী। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা দেখিয়েই এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
শহরের চৌরাস্তায় বুধবার দুপুর ১২টায় এ সংহতি সমাবেশ করে জেলাবাসী।
এ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেছেন বাংলাদেশের সাম্যবাদী আন্দোলনের জেলার সমন্বয়কারী মাহাবুব আলম রুবেল। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক, সাংবাদিক, শিক্ষার্থী, আইনজীবীসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষ।
সমাবেশের বক্তব্যে শিক্ষক জাকির হোসেন বলেন, ‘আপনারা জানেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক স্যার শামসুজ্জোহা কেমন শিক্ষক ছিলেন। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর যখন পাকিস্তানিরা গুলি চালায়, তখন তিনি পাকিস্তানিদের বন্দুকের নলের সামনে গিয়ে বলেছিলেন- ডোন্ট ফায়ার। আমার ছাত্রদের ওপর গুলি চালার আগে আমার বুকে গুলি করেন। সে সময় তিনি নিজে বুক পেতে গুলি বরণ করেছেন। তিনি ছাত্রদের জন্য মৃত্যুবরণ করেছেন।
‘কিন্তু শাবিতে আমরা দেখছি শিক্ষকরা তাদের দুর্নীতি ও অপকর্ম ঢাকতে ছাত্রদের ন্যায্য দাবির আন্দোলনে পুলিশ দিয়ে নির্যাতন হচ্ছে। তাদের ওপর গুলি চালানো হচ্ছে। আমরা শিক্ষক সমাজ এর তীব্র নিন্দা জানাই।’
জেলা জেএসডির সভাপতি ও সাংবাদিক মনসুর আলী বলেন, ‘শাবিপ্রবির ভিসি একসময় ছাত্র ছিলেন। তিনি কি জানেন না ছাত্রদের কী প্রয়োজন। আজ তাদের ন্যায্য দাবির জন্য দিনের পর দিন অনশন করতে হয়। আমরা ছাত্রদের এমন জরাজীর্ণ অবস্থা দেখতে চাই না। ছাত্রদের যাবতীয় ন্যায্য দাবি মেনে নিয়ে ক্ষমতালোভী ভিসির পদত্যাগ দাবি করছি।’
ছাত্রনেতা আবু বক্কর সিদ্দীক বলেন, ‘আমরা ছাত্ররা হোস্টেলে সব চেয়ে নিম্ন মানের খাবার গ্রহণ করি। আবাসন আমাদের অত্যন্ত জরাজীর্ণ। আমাদের মেধা বিকাশে সুন্দর পরিবেশ খুব জরুরি। ন্যায্য দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা শাবিপ্রবির পাশে আছি।’
সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশের সাম্যবাদী আন্দোলনের জেলা সমন্বয়কারী মাহাবুব আলম রুবেল বলেন, ‘ছাত্ররা তাদের আবাসন ও খাদ্যসংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে শাবিপ্রবির ভিসির কাছে জানান। তাদের এই ন্যায্য দাবি না শুনে তাদের ওপর পুলিশ দিয়ে নির্যাতন ও গুলি চালায়। তার ক্যাডার বাহিনী দিয়ে বর্বর হামলা চালান ভিসি। পরবর্তী সময়ে সেই ছাত্রদের ওপরেই উল্টো মামলা করে ভিসি। এ হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জনিয়ে অবিলম্বে ভিসির পদত্যাগ দাবি করছি। সেই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ওপর মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি করছি।’
এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন ঠাকুরগাঁও জেলা সিপিবির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু সায়েম, সদর উপজেলা সভাপতি চৌধুরী আনোয়ার হোসেন, জেলা উদীচীর সাধারণ সম্পাদক রেজওয়ান হক রিজু, লেখক ও কলামিস্ট মাসুদ আহমেদ সুবর্ণসহ অনেকে।