যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানে বসবাসরত হবিগঞ্জ জেলার বাসিন্দাদের নিয়ে গঠিত হবিগঞ্জ জেলা অ্যাসোসিয়েশন অব মিশিগানের কার্যকরী কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।
সভাপতি, সেক্রেটারি ও অর্থ সম্পাদক পদে গত ২১ নভেম্বর লটারি হয়। গত ৫ ডিসেম্বর হ্যামট্রামেক সিটির কনান্ট রোডের একটি অফিসে আনুষ্ঠানিকভাবে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করেন প্রধান উপদেষ্টা সৈয়দ আলী রেজা ও উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্যরা।
অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হন শাহিন আহমেদ। সেক্রেটারি ও অর্থ সম্পাদক হন শেখ তাজ উদ্দিন ও মাহফুজুর রহমান শাহীন।
মিশ্র প্রতিক্রিয়া
এদিকে নবীগঞ্জ ও মাধবপুর উপজেলাকে পাশ কাটিয়ে কমিটি গঠনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। অথচ হবিগঞ্জ জেলার ৯ উপজেলার মধ্যে নবীগঞ্জের সবচেয়ে বেশি মানুষের বাস মিশিগানে। এ ছাড়া ঘোষিত কমিটিতে প্রচার ও সহ-অর্থ সম্পাদকসহ মাধবপুর ও নবীগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি পদ পূরণ করা হয়নি। যোগ্যতাসম্পন্ন লোক থাকা সত্ত্বেও পদগুলো খালি রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
লটারিতে নেতা নির্বাচনকে দুর্বল ও অপরিপক্ব প্রক্রিয়া বলে অনেকে মন্তব্য করেছেন।
১৯৯৬ সালে মিশিগানে প্রথম হবিগঞ্জ সোসাইটি অফ মিশিগান নামে সংগঠন করা হয়। সংগঠনের গঠনতন্ত্র সংশোধন ও পদ-পদবির ঝামেলার জন্য একাধিকবার বৈঠক বসলেও শেষ পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে সমঝোতায় আসতে না পারায় ২০১৮ সালের প্রথম দিকে হবিগঞ্জবাসীর একটি অংশ আরেকটি সামাজিক সংগঠন সৃষ্টির কার্যক্রম নেয়। পরবর্তী সময়ে ২০১৮ সালের শেষদিকে গঠনতন্ত্র তৈরি করে হবিগঞ্জ জেলা অ্যাসোসিয়েশন অফ মিশিগান নামে সংগঠনের আত্মপ্রকাশ হয়।
সবার সম্মতির ভিত্তিতে ডা. ওহিদুর রহমান চৌধুরীকে সভাপতি ও শাহীন আহমেদকে সাধারণ সম্পাদক করে একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির এক বছরের মধ্যেই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শাহিন আহমেদ নিজের ব্যক্তিগত সমস্যা দেখিয়ে পদত্যাগ করেন। পরবর্তী সময়ে সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লূৎফুর রহমান শেলুকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয়।
সংগঠনের গঠনতন্ত্র মোতাবেক কমিটির মেয়াদ দুই বছর হলেও সাম্প্রতিক করোনাভাইরাস মহামারির কারণে দীর্ঘসূত্রিতা সৃষ্টি হলে নতুন কমিটি গঠন নিয়ে আবারও আলোচনা শুরু হয়। অবশেষে গত ২১ নভেম্বর হ্যামট্রামেক সিটির রহমান মাল্টিমিডিয়া অফিসে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষ পদে লটারি হয়।
এ বিষয়ে উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আনোয়ারুর রহমান ও বিগত কমিটির সহসভাপতি মোশারফ হোসেন জানান, জনসংখ্যার ভিত্তিতে না করে অঞ্চলভিত্তিক বা উপজেলাভিত্তিক লটারির মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচিত করলে যোগ্য ও দক্ষ লোকের কারণে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা হয় না। এ কারণে দুজনই লটারির মাধ্যমে নির্বাচন প্রথা সমর্থন করেননি।
তারা আরও জানান, কী কারণে ওই উপজেলাগুলোর মধ্যে থেকে কোনো প্রতিনিধি নেই এ বিষয়ে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান উপদেষ্টাসহ অন্য নেতারা ভালো বলতে পারবেন।
এসব বিষয়ে জানতে উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আলী আকবর খান ও গঠনতন্ত্র প্রণয়ন কমিটির সদস্য সাংবাদিক মোস্তফা কামালের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হয়। তিনি সংগঠনের গঠনতন্ত্র ও নির্বাচনের প্রক্রিয়া নিয়ে জানালেও মাধবপুর ও নবীগঞ্জ উপজেলার কোনো প্রতিনিধি না থাকার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মিশিগানে বসবাসরত হবিগঞ্জের একাধিক বাসিন্দা জানান, আর্থসামাজিক উন্নয়নে এই অ্যাসোসিয়েশনের কোনো ভূমিকা নেই। বছরে একটি পিকনিকের মধ্যেই সংগঠনের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ। এটি একটি নামমাত্র সংগঠন। এর পরও কমিটিতে কোনো উপজেলা প্রতিনিধি না রাখাটা দুঃখজনক।