মানুষের মধ্যে বাড়িতে কুকুর ও বিড়াল লালন-পালনের শখ আমরা দেখি। সেসব প্রাণী নিয়ে আদিখ্যেতারও অন্ত থাকে না।
একেবারে ছোটবেলা থেকে কুকুর-বিড়াল পালনের শখ রাশিয়ান মেয়ে ভিক্টোরিয়ার। শখ পূরণও করেছে সে। একটি কুকুরের পাশাপাশি সেও একটি বিড়াল পালন শুরু করে।
তবে অন্য বিড়ালের সঙ্গে তার পোষা বিড়ালের কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। কারণ তার পোষা প্রাণীটি বিড়ালের মতো দেখতে হলেও আসলে সেটি একটি চিতাবাঘ।
ভিক্টোরিয়া জানায়, সাধারণ বিড়াল আর চিতা পোষার মধ্যে কোনো পার্থক্যই নেই।
তবে বন-জঙ্গলে সাধারণ প্রাণীদের যে পৃথিবী থাকে, সেখান থেকে এই চিতাকে একেবারে দূরে রাখা হয়েছে।
কুকুরের সঙ্গে বসে ভিক্টোরিয়ার কালো চিতাবাঘ।
ভিক্টোরিয়ার চিতা পোষা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, একটি চিতা কীভাবে পোষা বিড়ালের মতো করে থাকে? কিংবা একটি সাধারণ পরিবার কীভাবে চিতাবাঘ পালন করতে পারে?
এসব প্রশ্নের উত্তরে ভিক্টোরিয়া জানায়, কয়েক বছর আগে একটি কালো মা চিতাবাঘ রাশিয়ার একটি চিড়িয়াখানায় বাচ্চা জন্ম দেয়।
তবে জানি না কেন জন্মের পরই বাচ্চাটিকে মায়ের কাছ থেকে আলাদা করে বাইরে অন্য একটি স্থানে ফেলে দেয়া হয়। যখন কর্মীরা একে খুঁজে পান তখন খুব ঠান্ডায় অসুস্থ ছিল শাবকটি।
তখন কর্মীরা ভিক্টোরিয়ার কাছে জানতে চান, সে কিছুদিনের জন্য একটি চিতা শাবকের শশ্রূষা করতে পারবে কি না। ঠিক তখনই লুনা নামের ওই শাবকটিকে কাছে টেনে নেয় ভিক্টোরিয়া।
পরে যখন চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ দেখল, লুনার বাঁচার সম্ভাবনা ক্ষীণ, তখন সেটি বিক্রি করে দিতে চায়। ভিক্টোরিয়া তখন শাবকটিকে নিজের করে নেয়।
এরপরই ভিক্টোরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে লুনার মা হিসেবে নিজেকে ঘোষণা করে। লুনাকে খাওয়ানো, তার দেখাশোনা, যত্নয়াত্তি সবই করতে থাকে লুনা।
তবে প্রথম দিকে লুনাকে প্রশিক্ষণ দিতে বেগ পেতে হয়েছে ভিক্টোরিয়াকে।
ভিক্টোরিয়ার পোষা কালো চিতাবাঘ ও কুকুর।
প্রশিক্ষণের আগে নিয়মিতই ঘরে-বিছানায় মল ত্যাগ করত লুনা। পরে অবশ্য তাকে একটি পাত্রে এসবের প্রশিক্ষণ দিয়েছে ভিক্টোরিয়া।
চিতা শাবকটি যত দিন যাচ্ছে আর বড় হচ্ছে। কিছুটা ভীতিও কাজ করে ভিক্টোরিয়ার মধ্যে। অবশ্য সেসব ভীতির চেয়ে লুনার সঙ্গে তার ভালোবাসার জায়গাটি বেশি বলে জানায় ভিক্টোরিয়া। দিন শেষে তারা একে অপরের চরম বন্ধু বলে জানায় লুনা।
চিতা শাবকটি আরেকটু বড় হলে তাকে প্রকৃতিতে ছেড়ে দেয়ার কথাও জানায় ভিক্টোরিয়া।