করোনাভাইরাস মহামারিতে গত বছর যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বন্ধ ছিল জমায়েত। এ কারণে দেশটিতে সক্রিয় বাংলাদেশি সংগঠনগুলো বার্ষিক বনভোজন বা মেলার আয়োজন করতে পারেনি। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় সে সুযোগ মিলছে। অনেক বাংলাদেশিই এসব অনুষ্ঠানে দেখা করছেন প্রিয়জনের সঙ্গে।
গত ২৯ আগস্ট দেশটির মিশিগান অঙ্গরাজ্যের ওয়ারেন সিটির হলমিছ পার্কে বনভোজনের আয়োজন করে হবিগঞ্জ জেলা অ্যাসোসিয়েশন অব মিশিগান। স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৮টা পর্যন্ত চলে এ আয়োজন।
তীব্র গরমের মধ্যে দুপুর থেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে হলমিছ পার্কে আসতে শুরু করে প্রবাসীরা। তাদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানস্থলটি মিশিগানবাসী বাঙালিদের মিলনমেলায় পরিণত হয়।
শুরুর আয়োজন
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত করেন হাফিজ মুমিনুল ইসলাম। গীতা পাঠ করেন কালি শংকর রায়। পরবর্তী সময়ে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত গাওয়ার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের মূল কার্যক্রম শুরু হয়।
শুরুতে বৃষ্টি না হওয়ায় খেলাধুলার সব ইভেন্ট যথাসময়ে শেষ করা সম্ভব হয়। ছোট ছেলে-মেয়েদের দৌড়, বড়দের দৌড়, নারীদের বালিশ বদল, সভাপতি ও প্রধান উপদেষ্টার গঠিত একাদশের মধ্যে ফুটবলসহ ছিল খেলার অনেক আয়োজন। একদিকে চলেছে খেলা, অন্যদিকে ছিল অতিথিদের কথামালা।
আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য দেন হ্যামট্রামেক সিটি কাউন্সিলর কামরুল হাসান, হ্যামট্রামেক সিটি প্রাইমারি নির্বাচনে জয়ী দুই বাংলাদেশি আমেরিকান কাউন্সিলর প্রার্থী মুহিত মাহমুদ ও আবু আহমদ মুসা, হবিগঞ্জ জেলা অ্যাসোসিয়েশন অব মিশিগানের উপদেষ্টা সৈয়দ আলী রেজা, আলী আকবর খান, আনুয়ারুর রহমান, ড. আব্দুর রশিদ মিয়া, বাংলা প্রেস ক্লাব মিশিগানের সভাপতি হেলাল উদ্দিন রানা ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল ফেরদৌস, দৈনিক খোয়াই সম্পাদক রোটারিয়ান শামিম আহছান, সুপ্রভাত মিশিগানের সম্পাদক চিন্ময় আচার্য্য, মিশিগান বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সেলিম আহমদ, জাবেদ চৌধুরীসহ অনেকেই।
ভোজন পর্ব
বিকেল ৪টার দিকে শুরু হয় মধ্যাহ্নভোজ। খাওয়া শেষে শুরু হয় গল্প, আড্ডা ও প্রিয়জনের সঙ্গে ছবি তোলা।
কথার ফুলঝুড়ি দিয়ে পুরো আয়োজন মাতিয়ে রাখেন হবিগঞ্জ অ্যাসোসিয়েশনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লুৎফুর রহমান শেলু ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিজান মিয়া জসিম।
খেলাধুলার পর্বটি পরিচালনায় ছিলেন শেখ তাজ উদ্দিন। খাবার পরিবেশনার বিষয়টি দেখভাল করেন সাংবাদিক মোস্তফা কামাল।
অনুষ্ঠানের ফাঁকে ফাঁকে গান পরিবেশন করেন প্রীতা দেবনাথ, শফিক রহমান, ড. আব্দুর রশিদ মিয়া, মইনুল হক ও গোলাম রাব্বানী।
সমাপ্তি পর্ব ও বৃষ্টি
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে আয়োজন করা হয় র্যাফেল ড্রর। সেখানে পুরস্কার হিসেবে দেয়া হয় আইফোন-১২ প্রো, ৬৫ ইঞ্চি টেলিভিশন, এয়ার কন্ডিশনারের মতো পণ্য। এ পর্বটি শেষ হতে না হতেই শুরু হয় স্বস্তির বৃষ্টি। প্রচণ্ড গরমে বৃষ্টিস্নাত সন্ধ্যায় ঘরে ফেরেন উচ্ছ্বসিত লটারি বিজয়ীরা।
সমাপনী অনুষ্ঠানে হবিগঞ্জ অ্যাসোসিয়েশন অব মিশিগানের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) বনভোজন আয়োজনে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এবং উপস্থিত সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। তিনি আগামীতে আবার একটি সুন্দর অনুষ্ঠান করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।