অল্প সময়ের মধ্যে আফগানিস্তানের একের পর এক প্রাদেশিক রাজধানী দখলে তালেবানের তেমন কোনো বেগ পেতে হয়নি।
তালেবানের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির নিজের নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতি কোনো নির্দেশনাই ছিল না।
এমন পরিস্থিতিতে ১৫ আগস্ট রাজধানী কাবুলের চারদিক তালেবান ঘিরে ফেলার একপর্যায়ে জনগণকে কিছু না জানিয়ে দেশ ছেড়ে পালান ঘানি।
নিজের এই দায়িত্বজ্ঞানহীন কর্মকাণ্ডের কারণে আফগান জনগণ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন আফগানিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট ঘানি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘানিকে নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। বিমানে বসে বাইরের দিকে তাকানো ঘানির একটি ভাইরাল ছবিও নিয়ে চলছে আক্রমণ।
ছবিতে বলা হচ্ছে, আফগানিস্তানের সাবেক নেতা তালেবানের হাতে নিজের দেশের মানুষকে ছেড়ে বিদেশে পালাচ্ছেন।
ওই ছবির শিরোনামে বলা হয়, ‘বিমানে প্রেসিডেন্ট ঘানি ছাড়া আর কোনো আফগান নেই। তাদের ভাগ্যের হাতে ছেড়ে দিয়ে পালাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট ঘানি।
‘যুক্তরাষ্ট্র শুধু নিজের দূতাবাসের কর্মকর্তাদের দেশে ফেরাচ্ছে। কোনো আফগানকে ওয়াশিংটন নিচ্ছে না।’
সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ৭২ বছর বয়সী আফগানিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট ঘানি আবু ধাবিতে আশ্রয় নিয়েছেন।
ইন্ডিয়া টুডের অ্যান্টি ফেইক নিউজ ওয়্যার রুম (এএফডব্লিউএ) ছবিটির দাবি নিয়ে অনুসন্ধান করে।
এতে দেখা যায়, চলতি বছরের জুলাইয়ে ছবিটি তোলা হয়। ঘানি তখনও আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট। বিমানে চড়ে বাগরাম বিমানঘাঁটি পরিদর্শনে যাচ্ছেন তিনি।
৯ জুলাই আফগানিস্তান প্রেসিডেন্টের কার্যালয় নিজেদের ফেসবুক পেজে ভাইরাল হওয়া ছবিটি পোস্ট করে। বিদেশি সেনা বাগরাম বিমানঘাঁটি ছেড়ে যাওয়ার পরপরই সেখানে যান ঘানি।
২০০১ সালে তালেবানকে ক্ষমতা থেকে উৎখাতের পর বাগরাম বিমানঘাঁটি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সামরিক ঘাঁটি।
চলতি বছরে আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সব সেনা প্রত্যাহারের শর্ত অনুযায়ী জুলাইয়ের শুরুর দিকে বাগরাম বিমানঘাঁটি ছেড়ে চলে যায় যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, আফগানিস্তান সরকার বা সেনাবাহিনীকে না জানিয়েই রাতের আঁধারে বাগরাম ঘাঁটি ছেড়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।
এ ছাড়া কাবুল পতনের পর যুক্তরাষ্ট্র শুধু নিজের দূতাবাসের কর্মকর্তাদের দেশে ফেরাচ্ছে, কোনো আফগানকে নয়- ভাইরাল ছবিটির এই দাবিও সত্য নয়।
প্রকৌশলী, চিকিৎসকসহ দক্ষ আফগানের পাশাপাশি গত ২০ বছর বিদেশি সংস্থায় দোভাষী হিসেবে কাজ করা ব্যক্তিদেরও যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তা আশঙ্কায় নিজ দেশে আনছে।