বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

গজারিয়ায় আবারও চালু অবৈধ বালুমহাল

  • গজারিয়া (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি   
  • ২৭ অক্টোবর, ২০২৫ ১৯:৪২

মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলাধীন মেঘনা নদীতে অবৈধ একটি বালুমহাল চালু হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানিয়েছেন অবৈধ বালুমহাল পরিচালনাকারীদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ কঠোর অবস্থানে থাকবে প্রশাসন। প্রয়োজন পড়লে প্রতিদিন সেখানে অভিযান চালানো হবে বলে জানান তিনি।

খবর নিয়ে জানা যায়, গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের জামালপুর গ্রাম-সংলগ্ন নদীতে গত বছর একটি বালুমহাল পরিচালনা করত নয়ন-পিয়াস বাহিনীর লোকজন। তবে সম্প্রতি ইউনিয়নটির জামালপুর গ্রামে একটি অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প চালু হওয়ার পর নদীর ওই অংশ থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন আপাতত বন্ধ রয়েছে। এদিকে বিভিন্ন সূত্রের খবর গত রোববার রাত থেকে মেঘনা নদীর কালীপুরা- মল্লিকের চর গ্রামের মাঝামাঝি একটি জায়গায় রাতের আঁধারে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন শুরু করেছে একটি চক্র। নদীর এই অংশে বৈধ কোনো বালুমহাল নেই। তবে কারা এর সাথে জড়িত তা সঠিকভাবে জানা যায়নি।

সরেজমিনে সোমবার দুপুরে নদীর কালীপুরা এলাকায় গিয়ে দেখা যায় সেখানে কোনো বাল্কহেড বা ড্রেজার নেই। স্থানীয়দের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী অবৈধ বালু উত্তোলনকারীরা

সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত এই স্থানে ছিল। স্থানীয়রা জানায়, অবৈধ বালু উত্তোলনকারীরা মূলত রাতের বেলায় এই এলাকায় আসে। দিনের আলোতে ড্রেজার ও বাল্কহেডগুলো আশেপাশে কোথাও ভেড়ানো থাকে। রাত নামলে সেগুলো বালু উত্তোলনের নির্ধারিত জায়গায় নিয়ে আসা হয়। রাতভর বালু উত্তোলনের কাজ শেষে ভোরে সেগুলো পূর্বের জায়গায় চলে যায়। দিনের বেলায় বোঝার উপায় থাকে না এখানে কোনো বালুমহাল ছিল।

নাম না প্রকাশ করার শর্তে মল্লিকের চর গ্রামের এক বাসিন্দা বলেন, ‘শুনেছি মল্লিকের চর গ্রামের জসিম মেম্বার গত কয়েকদিন ধরে একটি অবৈধ বালুমহাল চালু করার ব্যাপারে বিভিন্ন জায়গায় মিটিং করছিল। গত রোববার রাতে দেখলাম দেখলাম রাতের আঁধারের অবৈধ একটি মহালটি চালু হয়েছে। জসিম মেম্বারের সাথে আর কে কে আছে তা বলতে পারব না। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর মাত্র এ কদিন হয়েছে বালুমহালটি চালু হয়েছে। আরও কয়েকদিন গেলে বুঝতে পারব কারা এর সাথে জড়িত।’

ট্রলারচালক নজরুল বলেন, ‘সোমবার রাতে কয়েকটি ড্রেজার ও বাল্কহেড দেখলাম। কারা এখানে বালু কাটতেছে তা বলতে পারব না। যদি অবৈধভাবে বালু কাটা হয় তাহলে প্রশাসনের প্রতি আবেদন আপনারা ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।’

স্থানীয় বাসিন্দা সেলিম আহমেদ বলেন, ‘নদীর এই অংশে অবৈধ একটি বালুমহাল পরিচালনা করতো নৌ-ডাকাত সর্দার বাবলা। গত বছরের অক্টোবর মাসে প্রতিপক্ষের গুলিতে ডাকাত সর্দার বাবলা মারা যাওয়ার পর থেকে নদীর এই অংশে থেকে অবৈধভাবে কেউ বালু উত্তোলন করার সাহস পাইনি।’

বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, ‘এ রকম কোনো খবর আমার কাছে নেই। তবে আপনারা যেহেতু বিষয়টি জানিয়েছেন আমি নৌপুলিশকে এ ব্যাপারে সতর্ক অবস্থানে থাকার পরামর্শ দেব।’

বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আলম বলেন, ‘স্থানীয়দের মাধ্যমে এ রকম একটি খবর আমিও পেয়েছি তবে কারা এর সাথে জড়িত তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। সকালে আমরা নদীতে অভিযান পরিচালনা করে একটি বাল্কহেড ও একটি ড্রেজার আটক করেছি। যদি কেউ রাতের আঁধারে অবৈধভাবে মেঘনা নদী থেকে বালু উত্তোলন করার চিন্তা করে থাকে তাদের ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। প্রয়োজন পড়লে প্রতি রাতে আমরা অভিযান পরিচালনা করব।’

প্রসঙ্গত অবৈধ বালুমহাল পরিচালনা ও নৌযানে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে একাধিক নৌ-ডাকাত গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় গত এক বছরে ডাকাত সর্দার বাবলা, শুটার মান্নান, হৃদয় বাঘসহ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে। রাতের আঁধারে অবৈধ এসব অবৈধ বালুমহল থেকে কোটি কোটি ঘনফুট বালু উত্তোলন করা হলেও সেখান থেকে কোনো রাজস্ব পায় না সরকার।

এ বিভাগের আরো খবর