কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে তিন হাজার টাকার বিনিময়ে নিজের স্ত্রীকে বন্ধুদের কাছে দিয়ে দেয় এক ইটভাটা শ্রমিক। এরপর তিন দিন ধরে পালাক্রমে ধর্ষণের শিকার ওই নারী থানায় অভিযোগ দেয়। এতে পুলিশ তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে স্বামীসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের মিরশ্বানী এলাকার ইসলামিয়া ব্রিকস ফিল্ডের শ্রমিকদের থাকার ঘরে।
আটক ব্যক্তিরা হলো ভুক্তভোগীর স্বামী নোয়াখালী জেলার সুধারাম (সদর) থানার রামহরিতালুক গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে রাজু আহমেদ (২৬), একই এলাকার মৃত সিরাজ মাঝির ছেলে বেলাল হোসেন (৩৫), আবুল কাশেমের ছেলে মো. হৃদয় (২৫), চাঁন মিয়া মাঝির ছেলে মহিন উদ্দিন (২৬) ও মুন্সীতালুক গ্রামের শাহ আলমের ছেলে আবুল কালাম (৪৫)।
থানায় দায়ের করা মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, রাজুর সঙ্গে তার স্ত্রীর বিয়ে হয় ২০২৩ সালে। রাজু মাদকাসক্ত হওয়ায় বিয়ের পর থেকেই দাম্পত্য জীবনে অশান্তি বিরাজ করছিল। একপর্যায়ে স্ত্রী বাবার বাড়ি নোয়াখালীর মান্দারতলী গ্রামে ফিরে যান। চলতি মাসের শুরুতে সালিশ বৈঠকের পর রাজু আবারও স্ত্রীকে বাড়ি নিয়ে আসে।
গত ১৫ অক্টোবর রাজু কুমিল্লা শহরে থাকার কথা বলে স্ত্রীকে নিয়ে আসে চৌদ্দগ্রামের কালিকাপুর ইউনিয়নের মিরশ্বানীর ইসলামিয়া ব্রিকস ফিল্ডে। সেখানে গিয়ে সে স্ত্রীকে শ্রমিক বেলাল হোসেনের একটি ঘরে থাকার ব্যবস্থা করে দেয়।
ভুক্তভোগীর অভিযোগ, ১৬ অক্টোবর রাতে বেলাল হোসেন রাজুর উপস্থিতিতে তাকে প্রথমবার জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এরপর ১৮ অক্টোবর রাতে রাজুর দুই বন্ধু হৃদয় ও মহিন উদ্দিন একইভাবে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ২০ অক্টোবর রাতে হৃদয় আবার ধর্ষণের চেষ্টা করলে ভুক্তভোগী চিৎকার দিলে সে পালিয়ে যায়।
ঘটনার পর রাজু স্ত্রীকে হুমকি দেয়, বিষয়টি কাউকে জানালে তাকে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলবে। ভয়ে ভুক্তভোগী মুখ না খুললেও একই ইটভাটায় কাজ করা এক সহকর্মী বিষয়টি তার পিতাকে জানায়। খবর পেয়ে পিতা ঘটনাস্থলে গিয়ে মেয়েকে উদ্ধার করেন।
পরে শুক্রবার রাতে ভুক্তভোগী নারী চৌদ্দগ্রাম থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে রাজু ও তার চার সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে।
চৌদ্দগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, “অভিযোগ পাওয়ার পরপরই পুলিশ অভিযান চালিয়ে আসামিদের গ্রেপ্তার করে। শনিবার বিকালে তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।”