পঞ্চগড় সদর উপজেলার ১নং অমরখানা ইউনিয়নের শেষ প্রান্ত ও সাতমেড়া ইউনিয়নের সীমান্তে চাওয়াই নদীর ওপর ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো ও টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার বাঘবেড়-গজারিয়া সড়কের গোহালিয়া খালের ওপর ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সাঁকোতে পারাপার হচ্ছে এলাকাবাসী। এ দুই এলাকাবাসী দ্রুত স্থায়ী সেতুর নির্মাণের দাবি করেছেন। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর তুলে ধরা হলো;
মিজানুর রহমান, পঞ্চগড় থেকে জানান, পঞ্চগড় সদর উপজেলার ১নং অমরখানা ইউনিয়নের শেষ প্রান্ত ও সাতমেড়া ইউনিয়নের সীমান্তে চাওয়াই নদীর ওপর একটি ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সাঁকোই এখন এলাকাবাসীর একমাত্র ভরসা। দীর্ঘদিন ধরে এই সাঁকোটি ভাঙা ও নড়বড়ে অবস্থায় রয়েছে, তবুও প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ ঝুঁকি নিয়েই পারাপার করছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, ভাঙাচোরা কাঠের সাঁকোটি দিয়ে স্থানীয়রা প্রতিদিন হেঁটে পার হচ্ছেন। সাইকেল ও মোটরসাইকেল ছাড়া অন্য যানবাহন চলাচল করতে পারে না। ফলে কৃষিপণ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় মালপত্র পরিবহনে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে গ্রামবাসীদের।
খইপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মানিক ও বোড বাজারের মো. আব্দুল কুদ্দুস বলেন, “এই ব্রিজটা প্রথমে বাঁশের সাঁকো ছিল। পরে আমাদের উদ্যোগে কাঠের সাঁকো তৈরি করা হয়। বর্ষাকালে পুরো সাঁকোটি পানির নিচে চলে যায়। যদি এটি পাকা করে দেওয়া হতো, আশপাশের সব গ্রামের মানুষ অনেক সুবিধা পেত।’
এক পথচারি বলেন, ‘আমাদের বাচ্চাদের স্কুলে যেতে খুব কষ্ট হয়। সরকার যদি ব্রিজটা করে দিত, তাহলে আমরা অনেক উপকৃত হতাম।’
অমরখানা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোছা. হাজরা খাতুন বলেন, ‘বর্ষাকালে সাঁকোটা ডুবে যায়। তখন স্কুলে যেতে ভয় লাগে, অনেক সময় যাওয়া হয় না। এতে পড়াশোনায় ক্ষতি হয়।’
ব্রিজ না থাকায় হাটে-বাজারে যেতে কষ্ট হয়। কোনো রোগী হাসপাতালে নিতে হলে আরও সমস্যা হয়। কৃষিপণ্য বিক্রি করতে আমাদের ৩-৪ কিলোমিটার ঘুরে যেতে হয়।’
স্থানীয়দের দাবি, এই সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ শতাধিক মানুষ পারাপার করেন, ফলে যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
তাদের দীর্ঘদিনের দাবি—খইপাড়ার কাঠের সাঁকোটি দ্রুত পাকা সেতুতে রূপান্তর করা হোক, যাতে এলাকার মানুষ নিরাপদে চলাচল করতে পারে।
এক পাশে ১ নং অমর খানা ইউনিয়নের বোদিনাজোত বোর্ড বাজার। অপর পাশে ৬ নং সাতমেড়া ইউনিয়নের, কই পাড়া, ফকিরপাড়া, ডাঙ্গাপাড়া, পখিলাগা, জামুড়ি দুয়ার, দুই পাশের হাজারো মানুষের যাতায়াত এই কাঠের সাকো দিয়ে।
পঞ্চগড় সদর উপজেলা এল,জি,ই,ডি, উপ সহকারী প্রকৌশলী কৃষ্ণ চন্দ্র রায়, তিনি জানান গ্রামীন অবকাঠামো রাস্তা ও ব্রিজ প্রকল্পে এল, জি,ই,ডি হেড অফিসে ছবি ও ভিডিও সহ দরখাস্ত করা হয়েছে
সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি জানান, টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার বাঘবেড়-গজারিয়া সড়কের গোহালিয়া খালের ওপর ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সাঁকোতে পারাপার হচ্ছে এলাকাবাসী। তাদের দীর্ঘদিনের দাবি ওই কাঁচা সড়কটি ও ভাঙাচোরা নড়বড়ে কাঠের সাঁকোটি পাকাকরণের। কিন্তু সে দাবি এখনো পূরণ হয়নি। ফলে ঝুঁকি নিয়েই রাস্তা পার হচ্ছে জনসাধারণ মানুষ।
সরেজমিনে দেখা যায়, গোহালিয়া খালের উত্তরের শেষ সীমানায় কাঠের সাঁকোটিতে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে লোকজন। ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সাঁকো দিয়ে ভ্যান গাড়িসহ কোনো ধরনের যানবাহন চলে না। মালপত্র পরিবহন করেত চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় গ্রামবাসীদের।
গজারিয়া গ্রামের নাছির উদ্দিন বলেন, এই ব্রিজটা প্রথম অবস্থায় বাঁশের সাঁকো ছিল। পরে আমাদের এলাকাবাসীর উদ্যোগে কাঠের সাঁকোতে রূপ দেওয়া হয়। বর্ষার সময় এই সাঁকো পুরোটা ডুবে যায়। এই ব্রিজটা যদি পাকাকরণ করা হয়, তাহলে আশেপাশের সকল গ্রামের মানুষ স্বাচ্ছন্দ্যে চলাচল করতে পারব।
ওই গ্রামের অজুফা খাতুন বলেন, আমাদের বাচ্চাদের স্কুলে যেতে সমস্যা হয়। সাধারণ মানুষের চলাচল করতে অসুবিধা হয়। সরকার যদি আমাদের ব্রিজটা করে দিত, তাহলে খুব উপকার হতো।
বাঘবেড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফারুক হোসেন বলেন, খালের ওই পাড়ে আমাদের স্কুলের অনেক শিক্ষার্থী আছে। এই সাঁকোটা বিভিন্ন সময় বাঁশ-কাঠ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। এই সাঁকোটার যদি স্থায়ী একটা সমাধান হতো, তাহলে ছেলে-মেয়েরা নিরাপদে স্কুলে আসা-যাওয়া করতে পারত।
সখীপুর উপজেলা প্রকৌশলী মো. আরিফুর রহমান বলেন, গোহালিয়া খালের ওপর যে কাঠের সাঁকোটি রয়েছে, বর্তমানে এলজিইডির কোনো প্রজেক্টে অন্তর্ভুক্ত নেই। এটা ভবিষ্যতে নির্মাণের জন্য আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে কারিগরি রিপোর্ট প্রদান করব। অনুমোদনসাপেক্ষে এটা পরবর্তীতে উন্নয়ন হবে আশা করি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবদুল্লাহ আল রনী বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে কাজটি দ্রুত করার চেষ্টা করব।