বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সড়কের পাশে ময়লার ভাগার, দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ নরসিংদীর মানুষ

  • নরসিংদী প্রতিনিধি   
  • ৮ অক্টোবর, ২০২৫ ২২:১৩

ডাম্পিং স্টেশন ভরাট হয়ে যাওয়া নরসিংদী শহরের পাশে নতুন বাসটার্মিনালের সামনে দিয়ে নরসিংদী মদনগঞ্জ সড়কের উভয়পাশে ফেলা হচ্ছে ময়লা আবর্জনা। এতে করে সড়কের উভয় পাশে গড়ে উঠেছে বিশাল ময়লার ভাগার। সড়কের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে ময়লা-আর্বজনার স্তূপ। আর এ ময়লার স্তূপের দুর্গন্ত অনেক দূর পর্যন্ত ছড়াচ্ছে। ফলে দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছে পথচারীসহ এলাকার বসবাসকারী মানুষ।

জানা গেছে, ১৯৭২ সালে তৃতীয় শ্রেণির পৌরসভা হিসেবে যাত্রা শুরু করে নরসিংদী পৌরসভা। ১৯৭৮ সাল থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত এটি ছিল দ্বিতীয় শ্রেণির পৌরসভা। সময়ের পরিবর্তনে ২৬/৮/১৯৯৬ সালে প্রথম শ্রেণির পৌরসভায় উন্নীত হয় নরসিংদী পৌরসভা। অথচ সুযোগ-সুবিধার দিক থেকে এখনো পিছিয়ে রয়েছে এ পৌর এলাকা। নরসিংদী পৌরসভাটি ১০.৩২ বর্গ কিলোমিটার আয়তন বিশিষ্ট। জরিপ মোতাবেক, এ পৌরসভায় বসবাস করেন ১ লাখ ৮০ হাজার ৭১১ জন মানুষ। এখানে প্রতিদিন গড়ে ২১০ মেট্রিক টন বর্জ্য উৎপন্ন হলেও সেগুলো অপসারণের জন্য নেই কোনো আধুনিক ব্যবস্থা কিংবা বড় ধরনের ডাম্পিং স্টেশন। ফলে এ সড়ক দিয়ে চলাচল করা সাধারণ পথচারী, শিক্ষার্থী এবং যানবাহনের যাত্রীরা পড়েছে চরম বেকায়দায়। নাকে রুমাল, মাক্স দিয়ে মুখ ঢেকে ও দুর্গন্ধ ঠেকানো যাচ্ছে না।

ফলে এ ময়লার আবর্জনার মধ্য দিয়েই সাধারণ মানুষ, শিক্ষার্থী এবং যানবাহন চলাচল করছে। এছাড়া এ সড়কের পাশে গড়ে ওঠা অনেক শিল্পকারখানা ও বসতবাড়ির লোকেরা ময়লার দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। তাদের এখানে বসবাস করা বা শিল্পকারখানা পরিচালনা করা দুষ্কর হয়ে পড়েছে।

দেশের খ্যাত স্বনামধন্য শিল্পপ্রতিষ্ঠান আমানত শাহ গ্রুপের স্বত্বাধিকারী আলহাজ মো. হেলাল মিয়া জানান, এ সড়কের পাশে আমানত শাহ গ্রুপের প্রায় ১শত বিঘা জমি রয়েছে। এ জমিতে শিল্পকারখানা গড়ে তুলার জন্য সেটও নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় নরসিংদী পৌরসভার সমস্ত ময়লা আবর্জনা এখানে এনে ফেলা হচ্ছে। প্রায় অর্ধ কিলোমিটার জমিতে ময়লা ফেলে বিরাট স্তূপ করে রাখা হয়েছে। ফলে এখানকার পরিবেশ মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে। এখানে শিল্পকারখানা গড়ে তুলা তো দূরের কথা, দুর্গন্ধে কাছেই যাওয়া যায় না। ময়লা আবর্জনার কারণে এখানে শিল্পকারখানা গড়ে তোলা সম্ভব হচ্ছে না। এতে করে আমানত শাহ গ্রুপের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে।

আলহাজ মো. হেলাল মিয়া গণমাধ্যমকে আরও বলেন, এ বিষয়টি নিয়ে তিনি বেশ কয়েকবার নরসিংদী পৌর প্রশাসকের সাথে আলাপ করেছেন। প্রতিবারই পৌর প্রশাসক এখান থেকে ময়লা আবর্জনা সরিয়ে ফেলার আশ্বাস দিচ্ছেন। অথচ কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।

সড়কের পাশের বাড়ির মালিক মো. ইমাম হোসেন জানান, ময়লা আবর্জনার গন্ধে এখানকার পরিবেশ মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে। আমাদের পরিবার পরিজনদের নিয়ে এখানে বসবাস করা দুষ্কর হয়ে পড়েছে। দিনরাত ২৪ ঘণ্টা ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করে দিয়ে ঘুমাতে হয় এবং খাবার খেতে হয়। ঘর থেকে বের হতে হলে মুখে এবং নাকে রুমাল দিয়ে ঢেকে বের হতে হয়। এমনিভাবে আর কতদিন চলা যায়। তাই অতিদ্রুত এখান থেকে ময়লা আবর্জনা দূরে কোথাও নিয়ে ফেলার জন্য তিনি নরসিংদী পৌর প্রশাসকের প্রতি আহ্বান জানান।

বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক ও নরসিংদী পৌরসভার প্রশাসক মনোয়ার হোসেনের সাথে আলাপ করলে তিনি গণমাধ্যমকে জানান, নরসিংদী মদনগঞ্জ সড়কের ৫নং ব্রিজের পাশে নরসিংদী পৌরসভার ৩ একর জমিতে একটি ডাম্পিং স্টেশন রয়েছে। কিন্তু যে পরিমাণ ময়লা আবর্জনা জমছে সে পরিমাণে ডাম্পিং স্টেশনটি প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল এবং ডাম্পিং স্টেশনটি বর্তমানে ভরাট হয়ে গেছে। বর্তমানে এ সড়কের উভয় পাশে সরকারি জায়গায় ময়লা ফেলা হচ্ছে। এ অবস্থা থাকবে না, অচিরেই এর একটা সুরাহা করা হচ্ছে। এখানে বর্জ্য নিষ্কাশনের জন্য ২১ কোটি ব্যয়ে একটি বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে এবং ইতোমধ্যে টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। শুধু ওয়ার্ক অর্ডার বাকি রয়েছে। এটি হয়ে গেলেই আর কোনো সমস্যা থাকবে না বলে আমি মনে করছি।

এ বিভাগের আরো খবর