বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র সেতুর নির্মাণের দাবি

  • কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি   
  • ৬ অক্টোবর, ২০২৫ ১৮:৫৩

কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র সেতু দেশের অর্থনীতিতে অপার সম্ভাবনার দুয়ার খুলার পাশাপাশি আঞ্চলিক ও জাতীয় নিরাপত্তার জন্য অগ্রণী ভূমিকা রাখবে। সময় ও পথ কমে জ্বালানি তেলের আমদানি কমার পাশাপাশি দেশের পরিবেশ রক্ষায় ভারসাম্য রাখবে। ফলে উত্তরাঞ্চলসহ দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধি করতে ব্রহ্মপুত্র নদের উপর একটি সেতুর নির্মাণে দাবি সর্বস্তরের মানুষের।

একটি সেতুর অভাবে মেলবন্ধন হচ্ছে না দেশের রংপুর, রাজশাহী, সিলেট, চট্টগ্রাম এবং ঢাকা বিভাগসহ প্রায় ২০টি জেলার। কুড়িগ্রামে চিলমারী-রৌমারী উপজেলা ঘেঁষা ব্রহ্মপুত্র নদের উপর একটি সেতু তৈরি হলে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবধান রাখবে। যোগাযোগের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যোগ করবে ব্রহ্মপুত্র নদের সেতুটি। যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতার কষ্ট-যন্ত্রণা এবং দরিদ্রতা থেকে মুক্তি পেতে দীর্ঘদিন ধরে ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর সেতুর নির্মাণের দাবি করে আসছেন সুবিধাবঞ্চিত এ জনপদের মানুষ। জেলা শহরের সাথে ব্রহ্মপুত্র নদ দ্বারা বিচ্ছিন্ন রৌমারী-রাজিবপুর উপজেলা মানুষের দু:খ কষ্ট দীর্ঘদিনের। কয়েক লাখ মানুষের পারাপারে নৌকাই একমাত্র ভরসা। অফিস-আদালতে আসতে পোহাতে হয় হাজারো বিড়াম্বনা। সময়-অর্থ দুটো নষ্ট হচ্ছে এই জনপদের মানুষের। বারবার দাবি উঠেছে ব্রহ্মপুত্র নদের উপর একটি সেতু নির্মাণের। চিলমারী- রৌমীরী পর্যন্ত সেতুর দাবিতে হয়েছে একাধিকবার আন্দোলনও। তারই ফলশ্রুতিতে কয়েক বছর পূর্বে পরিদর্শন করা হয় সেতু নির্মাণের সম্ভাবনা স্থান। এরপর থেকে মুখ থুবড়ে রয়েছে ব্রহ্মপুত্র সেতু নির্মাণের অগ্রগতি। বর্তমানে কুড়িগ্রাম শহর থেকে ঢাকা-সিলেট, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ যেতে হয় সিরাজগঞ্জ হয়ে যমুনা সেতু দিয়ে। ব্রহ্মপুত্র সেতু নির্মাণ হলে কুড়িগ্রাম শহর থেকে রৌমারী হয়ে জামালপুর, শেরপুর, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ হয়ে সিলেটের দুরত্ব প্রায় ৪৫০ কিলোমিটার এবং ঢাকার সাথে ১০০ কিলোমিটার পথ কমে আসবে। অপর দিকে গাইবান্ধার তিস্তা নদী উপর সদ্য নির্মিত মাওলানা ভাসানী সেতুটি কোন কাজে আসছে না। কিন্তু ব্রহ্মপুত্র সেতু নির্মাণ হলে বগুড়া, জয়পুরহাট,নওগাঁ জেলার কানেক্টিক সেতু হিসেবে কুড়িগ্রাম, জামালপুর, শেরপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট যাতায়াত সহজ হয়ে আসবে।

শিক্ষার্থী রিনি আকতার বলেন, রৌমারী থেকে আসতে ভিষণ কষ্ট হয়। নৌপথে নারী যাত্রীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। ব্রহ্মপুত্র সেতু হলে আমাদের মতো অনেক গরীব শিক্ষার্থী কুড়িগ্রাম এসে পড়ালেখার সুযোগ পাবে।

মজিবর রহমান বলেন, রৌমারী-রাজিবপুর উপজেলার সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবী ও আদালতে বিচার প্রার্থীদের কুড়িগ্রাম এসে অফিসিয়াল কাজ করতে হলে একদিন আগেই আসতে হয়। কেননা নৌকা ছাড়া এ দুটি উপজেলার কোনো বিকল্প ব্যবস্থা নেই। এতে করে আমাদের সময় ও অর্থ দুটোই নষ্ট হচ্ছে। অথচ এই ব্রহ্মপুত্র সেতু করা গেলে আমাদের জেলার অভূতর্পব উন্নয়ন হতো। শুধু তাই নই ঢাকার উপর চাপও কমে আসবে। কেননা কুড়িগ্রাম থেকে রৌমারী হয়ে ঢাকা থেকে দিনে গিয়ে কাজ শেষ করে মানুষ চলে আসতে পারবে। তাই বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার অথবা আগামীতে যে সরকার ক্ষমতায় আসবে তারা যেন ব্রহ্মপুত্র নদের উপর একটি সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়।

কুড়িগ্রাম চেম্বারস অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রি সাবেক সভাপতি আব্দুল আজিজ বলেন,দীর্ঘদিন ধরে ব্রহ্মপুত্র নদের উপর নির্মিত সেতুর দাবি জানানো হচ্ছে। এই সেতু হলে আন্তঃদেশীয় ও আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি বাড়বে এবং আন্তর্জাতিক ব্যবসা, বাণিজ্য এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে সম্প্রসারণ ঘটবে। এতে করে কুড়িগ্রামে শিল্প-কারখানা গড়ে উঠবে ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

কুড়িগ্রাম মোটর-বাস মালিক সমিতির সভাপতি লুৎফর রহমান বকসী বলেন, ব্রহ্মপুত্র সেতু হলে কুড়িগ্রাম থেকে ঢাকা ১০০কিলোমিটার কমবে। এরফলে বড় গাড়ি গুলোর ৬৫/৭০ লিটার তেল সাশ্রয় হবে।

কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মীর্জা মো. নাসির উদ্দিন বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর সেতু হলে দেশের অর্থনীতিতে আমুল পরিবর্তন আসবে। পাশাপাশি এই সেতু শুধু দেশের জন্য নয়, আন্তর্জাতিক রুট হিসেবে গুরুত্ব অপরিসীম।

এ বিভাগের আরো খবর